সিলেট-১ আসনেই থাকছে নগরীর ২৫, ২৬, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের লোগো
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের লোগো |নয়া দিগন্ত

অবশেষে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব বাতিল হয়েছে। সিলেট-৩ আসনের সাথে যুক্ত করার পরিবর্তে সিলেট সিটি করপোরেশনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড আগের মতোই সিলেট-১ আসনেই থাকছে। দেড় হাজার ভোটারের লিখিত আপত্তি ও এলাকাবাসীর জোরালো প্রতিবাদের পর ইসি এ সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন আইনের ধারা ৬ উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত সম্বলিত দরখাস্তগুলোর তথ্যাবলি পর্যালোচনা করে এবং শুনানিকালে উপস্থাপিত তথ্য ও যুক্তিতর্ক বিচেনান্তে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনি এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করতঃ বিজ্ঞপ্তির সাথে সংযুক্ত তফশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

সংযুক্ত তালিকা অনুসারে সিলেট-১ আসনে আগের মতো সিলেট সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং ৩১ থেকে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং সিলেট সদর উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড আগের মতো নির্বাচনী আসন-২২৯ (সিলেট সিটি করপোরেশন ও সিলেট সদর) আসনের অন্তর্ভুক্ত থাকছে।

নির্বাচন কমিশন গত ৩০ জুলাই সিলেট মহানগরীর ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডকে সিলেট-৩ আসনে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করে একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। কমিশনের এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে এই ৩ ওয়ার্ডের সর্বস্তরের ভোটাররা প্রতিবাদে নামেন। ২৫, ২৬ ও ২৭ নং ওয়ার্ডকে সিলেট-১ আসনে রাখার বিষয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন সাবেক সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানসহ সিলেটের প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা।

ওয়ার্ডবাসীর পক্ষ থেকে প্রায় দেড় হাজার ভোটারের স্বাক্ষরসহ একটি আপত্তি ঢাকাস্থ নির্বাচন কমিশনে গত ৮ আগস্ট দাখিল করা হয়। দাখিল করা এই আপত্তির বিষয়ে গত ২৭ আগস্ট নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত শুনানিতে ওযার্ডবাসীর পক্ষ থেকে শুনানি করেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা, সিনিয়র সাংবাদিক ও আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন। তাকে সহযোগিতা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম কাফি, সিলেট জেলা জজ আদালতের এডিশনাল জিপি অ্যাডভোকেট নাজমুল হুদা ও সিলেট জেলা বারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: মামুন হোসেন। সিলেট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানও এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে বক্তব্য রাখেন।

শুনানিকালে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী মনসুর হোসেন খান, বাবর আহমদ, গোটাটিকর ব্রাদার্স ক্লাবের সভাপতি সুমন আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান মাছউদ, বেগম তাহমিনা আহমদ, মো: আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদসহ পূর্ণ নির্বাচন কমিশন এই শুনানি গুরুত্ব সহকারে শোনেন এবং ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডবাসীর যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।