বদলির আদেশ প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ১৪ কর কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে সরকার। তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এ সংক্রান্ত পৃথক পৃথক আদেশ জারি করেছে। এই আদেশগুলোতে সই করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান ও আইআরডি সচিব আবদুর রহমান খান।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, ঢাকার কর অঞ্চল-৮এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক সিফাত ই মরিয়ম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বিতীয় সচিব শাহাদাত জামিল, ঢাকা কর অঞ্চল-২-এর যুগ্ম কর কমিশনার মাসুমা খাতুন, কর অঞ্চল-১৫-এর যুগ্ম কর কমিশনার মুরাদ আহমেদ, কুষ্টিয়া কর অঞ্চলের মোরশেদ উদ্দীন খান, নোয়াখালী কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, কক্সবাজার কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার আশরাফুল আলম প্রধান, খুলনা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার শিহাবুল ইসলাম, রংপুর কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার নুশরাত জাহান ও কুমিল্লা কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান, খুলনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল বশর ও ঢাকা উত্তর কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের রাজস্ব কর্মকর্তা সবুজ মিয়া।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত মাসে এনবিআরে যে আন্দোলন হয়েছে, তারা সবাই ওই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। কেউ কেউ নেতৃত্বও দিয়েছেন। আদেশ অনুসারে, গত ২২ জুন জারি করা বদলির আদেশ অবজ্ঞাপূর্বক প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাদের এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালে তারা বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
উল্লেখ্য, গত মাসে রাজস্ব খাতে সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ২৮ ও ২৯ জুন সারা দেশে কাজ বন্ধ করে দেন তারা। এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কার্যক্রমকে অত্যাবশ্যকীয় ঘোষণা করার পর ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন তারা।
এরপরই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়। আন্দোলন প্রত্যাহারের পরে এই পর্যন্ত তিনজন সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কাজ বন্ধ রাখার দায়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের তৎকালীন কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া এনবিআরের দু’জন সদস্যসহ ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। তাদের অধিকাংশই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। শাস্তি এড়ানোর জন্য আন্দোলনকারী অনেক কর্মকর্তা এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন বলে জানা গেছে।