চামড়া শিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে

চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনে শতভাগ কাঁচামাল আমাদের দেশে আছে। তথাপিও এই শিল্পের বিকাশ কাক্সিক্ষত মানের নেই। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং সরকারকেও এগিয়ে আসা উচিত। কিছু উন্নত দেশ চামড়ার অভাবে তাদের ট্যানারি বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু সেসব দেশে চামড়াজাত পণ্য তৈরির কারখানা যথারীতি চালু আছে। ফলে সেসব দেশে শিল্পের কাঁচামাল বা ফিনিশড লেদারের চাহিদা রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগালে আমাদের রফতানি আয় বাড়বে।

পোশাক শিল্পের পরই চামড়া দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। আশির দশক থেকেই এই শিল্পের নানা সমস্যার কথা বলা হলেও একে একটি সুষ্ঠু কাঠামোর মধ্যে আনা যায়নি। বৈশ্বিক চামড়া শিল্পে আমাদের অবদান এক শতাংশের কম। এমন বাস্তবতায়, এলডিসি পরবর্তী সময়ে এ খাতের রফতানিতে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিবেশ সুরক্ষা, মানবসম্পদের দক্ষতার উন্নয়ন, প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, নতুন পণ্যের উদ্ভাবন, ভ্যালুচেইন শক্তিশালীকরণ, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ খাতের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি খাতের সহযোগিতার ওপর জোর দিতে হবে। বিশ্লেষকদের মতে, চামড়া খাতে সিইটিপি’র (পরিবেশবান্ধব কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার) বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সাভারে স্থাপিত সিইটিপি’র ক্যাপাসিটি বর্তমানে ১৪ হাজার কিউবিক মিটার এবং পিক সিজনে (কোরবানির সময়) এ খাতে চাহিদা থাকে ৩২-৩৫ হাজার কিউবিক মিটার; সিইটিপি’র সক্ষমতা কমপক্ষে ২০-২৫ হাজার কিউবিক মিটারে উন্নীত করা উচিত।

প্রাথমিকভাবে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে সিইটিপি করার অনুমতি দেয়া হয়েছে, আরো ৮-১০টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। এ খাতে পরিবেশ দূষণ রোধে কমপ্লায়েন্স (প্রযোজ্য নিয়ম) মেনে চলতে উদ্যোক্তাদের সচেতন থাকতে হয়। সেই সাথে ব্যক্তি পর্যায়েও সঠিকভাবে চামড়া সংরক্ষণে সচেতন হতে হবে। চামড়া খাতে নতুন বাজার তৈরি, উদ্ভাবন ও পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। লেদার গুডস্ অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, চামড়া শিল্পনগরী হাজারীবাগ হতে সাভারে স্থানান্তর করা হলেও সিইটিপি পুরোপুরি চালু করা যায়নি; ফলে এ খাতের কাক্সিক্ষত রফতানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এলডব্লিউজির মতো আমাদের আন্তর্জাতিক কোনো সনদ না থাকায় বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশ প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারছে না এবং এ খাতের উৎপাদিত পণ্যের ভালো মূল্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে; এ ছাড়াও চামড়া শিল্পে কমপ্লায়েন্সের অনুপস্থিতির বিষয়টিও অন্যতম কারণ। চামড়া খাতের রুগ্ণ শিল্প-প্রতিষ্ঠান এবং যারা এ খাত থেকে বের হতে আগ্রহী, তাদেরকে প্রস্থানের সহজ সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। পোশাক খাতের প্রতি নজর বেশি থাকায় তা অনেক দূর এগিয়েছে। চামড়া শিল্পে রফতানির সম্ভাবনাকে ধরে রাখতে হলে আমদানিযোগ্য কাঁচামাল, শুল্ক ব্যবস্থাপনা, পণ্য ছাড় করা ও ব্যবসা সহজীকরণ নিশ্চিত করা উচিত। দীর্ঘদিন ধরে বাস্তবমুখী পরিকল্পনা ও আন্তর্জাতিক গুণমানের অভাবে এ শিল্পের বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে আছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান বলেন, চামড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে যা যা দরকার সব করা হবে। সরকার এবার কাঁচা চামড়ায় লবণ দেয়ার জন্য ত্রিশ হাজার মেট্রিক টন লবণ দিয়েছে। কিন্তু কিছু জায়গায় চামড়াতে ঠিকভাবে লবণ না লাগানোয় চামড়া নষ্ট হয়েছে, আর বাকি চামড়াগুলো ঢাকায় আসছে। সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরায় বিসিক শিল্প নগরীর হলরুমে ট্যানারি মালিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে শিল্প উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

তিনি জানান ট্যানারি শিল্পে খারাপ অবস্থার জন্য দায়ী গত সরকারের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সরকার শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে চায়, চামড়াটা যেন নষ্ট না হয়, সেটাও চেষ্টা করা হচ্ছে। এজন্য ট্যানারিতে কাঁচা চামড়া ওয়েট ব্লু চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সারা দেশে আরো সাত লাখ পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি চামড়া রয়েছে সেগুলো শিগগিরই ট্যানারি কারখানাতে ঢুকবে। সরকার চেষ্টা করেছিল এবার চামড়া সংগ্রহটা যেন ভালোভাবে হয়। সরকার যে মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটাই পায়।

কোরবানির সময় এলে সব সরকার বলে সিইটিপি আধুনিকীকরণ করা হবে। কিন্তু পরবর্তীতে আর খবর থাকে না। চামড়ার ওপর ভর করে দেশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রায় ৯ লাখ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। এই শিল্পকে কেন্দ্র করে দেশে গড়ে উঠেছে প্রায় ২৩০টিরও বেশি ট্যানারি। গত কয়েক বছর ধরে স্থানীয় বাজারে কাঁচা চামড়ার দাম কম। কোরবানির সময় পানির চেয়েও কম দামে চামড়া বিক্রি হয়। আবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করার কারণে ও উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় অতীতে চামড়া নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে, মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। এ ধরনের খবর খুবই উদ্বেগজনক।

চামড়ার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ খাত দেখার কি কেউ নেই! প্রতিবেশী ভারতে বাংলাদেশী চামড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ও দামও বেশি। কারণ বাংলাদেশী চামড়ার মান ভালো। সুযোগ নিয়ে কিছু পাচারকারী ভারতে প্রতি বছর চামড়া পাচার করে যাচ্ছে। দেশীয় বাজারে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের কারখানা প্রতিষ্ঠা, চাহিদা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করলে চামড়া পাচার রোধ করা সম্ভব। এই সঙ্কট উত্তরণের জন্য সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। এ খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এলডব্লিউজি সনদ অর্জনে যেসব মানদণ্ড রয়েছে তা পূরণে জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে সরকারকে।

চামড়া খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, হেমায়েতপুরের চামড়া শিল্প নগরের দূষণ বন্ধ না হওয়ায় ইউরোপ-আমেরিকার বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি বাংলাদেশী চামড়া কিনছে না। ফলে বাংলাদেশী চামড়ার বড় ক্রেতা বর্তমানে চীন। তারা কম দাম দেয়। সেটির প্রভাব কাঁচা চামড়ার দামেও পড়ছে। বাংলাদেশ থেকে চীনে যে শতকরা ৮০ ভাগ লেদার যাচ্ছে, তা মূলত ক্রাস্ট লেদার। সেগুলোকে বিভিন্নভাবে প্রক্রিয়াজাত করে ফিনিশ লেদারে পরিণত করে বিভিন্ন দেশে রফতানি করছে চীন। অথচ বাংলাদেশ নিজেই যদি আধুনিক ট্যানারি শিল্প গড়ে তোলার মাধ্যমে ফিনিশ লেদার রফতানি করতে পারত, তাহলে আরো বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারত।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) চামড়া শিল্প নগরীর শিল্প সমাধানের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ পওয়া যায়নি এখনো। ইউরোপ আমেরিকার নামকরা আমদানিকারকদের কাছে সরাসরি চামড়া রফতানি করা যাচ্ছে না। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ভালো ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারছে না বাংলাদেশ। এ কারণে এ খাতের রফতানি এখনো কাক্সিক্ষত মানে পৌঁছেনি।

কমপ্লায়েন্সের অভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় চামড়ার মূল্য কমেছে। আবার ট্যানারির শ্রমিকরাও ন্যূনতম মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। শ্রমিকদের আবাসন ও চিকিৎসাসহ তাদের জীবনযাপনের মৌলিক চাহিদা পূরণে নেই যথাযথ ব্যবস্থা। ট্যানারিগুলোয় স্থায়ী ও অস্থায়ী দুই ধরনের শ্রমিক কাজ করেন। তাদের জীবন অনেকটা দুর্বিষহ। মজুরি বোর্ডের নির্ধারিত গ্রেড নয়, অভিজ্ঞতার আলোকে তাদের বেতন নির্ধারিত হলেও ওভারটাইম ও ছুটি সুবিধা সীমিত। নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা। সন্তানদের শিক্ষার ব্যবস্থাও ঠিকমতো করতে পারেন না তারা।

বাংলাদেশে জুতার বাজারেও চামড়া শিল্পের বিরাট অবদান রয়েছে। চামড়া ও চামড়াবিহীন প্রধানত দুই ধরনের জুতা তৈরি হয় দেশে। এতে আমাদের স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে কিছু পণ্য বিদেশেও রফতানি হয়। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানি হয়েছিল ৭৮ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াবিহীন জুতা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রফতানি হয় ৮০.৯৬ কোটি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮৭.৯৩ কোটি ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৭৫.০৫ কোটি ডলারের জুতা রফতানি হয়।

লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) সূত্রে জানা যায়, বিশ্বে জুতার মোট বাজারের ৫৫ শতাংশ চীনের দখলে। এতে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮তে। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের এ খাতে অবদান মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ। বর্তমানে প্রায় ৯০টি দেশে বাংলাদেশের জুতা রফতানি হচ্ছে। চামড়া শিল্প পিছিয়ে পড়ার অন্যতম আরেকটি কারণ হলো দেশী বাজারে নতুন কোনো ব্র্যান্ড, কোম্পানির প্রতিযোগিতা কম।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ২৪০ বিলিয়ন ডলারের চামড়ার বাজার আছে। ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জুতা, ট্র্যাভেল ব্যাগ, লেডিস ব্যাগ, বেল্ট, ওয়ালেট, পার্টস, ওয়ার্কিং হ্যান্ড গ্লাভস প্রভৃতি। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, করোনা বা তার কাছাকাছি সময়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে সামগ্রিক রফতানি আয় ৩৪.৩৮ শতাংশ বেড়েছিল। এতে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে ১২৫ কোটি ডলার আয় হয়েছে। এ খাতে রফতানি বেশ কয়েক বছর পর শতকোটির ঘরে পৌঁছেছে।

পরিবেশ দূষণজনিত কারণে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের পর থেকে এই খাতের রফতানি কমতে থাকে টানা দুই বছর শতকোটি ডলারের নিচে রফতানি থাকার পর অর্থবছর (২০২১-২২) এই খাতটি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরটি শেষ হয়েছে ৫২ বিলিয়ন বা পাঁচ হাজার ২০০ কোটি ডলারের রফতানি আয় দিয়ে। আগের অর্থবছরের তুলনায় অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া রফতানি খাতের এই ধারা ধরে রাখা যাবে কি না সেটি এখন প্রশ্ন। এজন্য আমাদের রফতানিযোগ্য পণ্যের গুণগত মান বাড়াতে হবে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি বাড়াতে হলে বৈশ্বিক সংস্থা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সনদ নিতে হবে। দেশের পরিবেশ অধিদফতরের নির্ধারিত মানদণ্ড অর্জন করতে হবে। চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনে শতভাগ কাঁচামাল আমাদের দেশে আছে। তথাপিও এই শিল্পের বিকাশ কাক্সিক্ষত মানের নেই। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং সরকারকেও এগিয়ে আসা উচিত। কিছু উন্নত দেশ চামড়ার অভাবে তাদের ট্যানারি বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু সেসব দেশে চামড়াজাত পণ্য তৈরির কারখানা যথারীতি চালু আছে। ফলে সেসব দেশে শিল্পের কাঁচামাল বা ফিনিশড লেদারের চাহিদা রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগালে আমাদের রফতানি আয় বাড়বে।

চামড়াবিহীন জুতা রফতানিতে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে আমাদের দেশে। ইউরোপ-আমেরিকার বাইরে আফ্রিকায় চামড়াবিহীন জুতার গন্তব্য হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে জুতার বাজার ভারত ও চীনের দখলে। চামড়াবিহীন জুতার বাজার ধরতে হলে উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে হবে। শ্রমিকদের দক্ষতা প্রতিনিয়ত বাড়াতে হবে।

বিশ্ববাজারের ক্রেতারা এখন বহুমুখী উৎস থেকে চামড়া সংগ্রহ করছেন। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। সাভারের শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারকে আরো বেশি কার্যকর করতে হবে। পরিবেশবান্ধব শিল্পনগরী হিসেবে এর উত্তরণ ঘটাতে হবে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য থেকে জানা যায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১১ মাসে (জুলাই-মে) চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি থেকে ৯৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। দুর্ভাগ্য হলো এটি আগের অর্থবছর ২০২২-২৩ এর চেয়ে ১৪.১৭ শতাংশ কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জুলাই-মে সময়ে এখান থেকে রফতানি হয়েছে ১১২ কোটি ডলার। যা ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ১.৭৪ শতাংশ কম অর্থাৎ ক্রমান্বয়ে এ খাত থেকে তুলনামূলকভাবে রফতানি কমে যাচ্ছে, যা এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ খাতকে অবহেলার বা অবজ্ঞারই প্রতিচ্ছবি।

এ শিল্প নিয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা আলোচনা পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা হলেও তাতে বাস্তবধর্মী কোনো পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন না হওয়ায় কাক্সিক্ষত ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু পোশাক শিল্পের ওপর ভর করে দেশের রফতানি আয় বাড়ানোর চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

লেখক : অর্থনীতি বিশ্লেষক ও ব্যাংকার
[email protected]