কাঠের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় সেতুতে, ত্রুটি সারাতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন

আমরা মনে করি স্থানীয় জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে সংযোগ সড়ক নির্মাণে তড়িঘড়ি করে পদক্ষেপ নিতে হবে।

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ও রাজবাড়ী ইউনিয়নের একটি খালের ওপর কোটি টাকার সেতু। কাঠের সিঁড়ি বেয়ে এই সেতুতে উঠতে হয় বলে একটি সহযোগী দৈনিকের শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা জানান। কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হলেও সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক প্রস্তুত করা হয়নি। ফলে সেতুটি অব্যবহৃত পড়ে ছিল। গ্রামের মানুষ নিজেদের প্রচেষ্টায় সেতুর দুই পাশে কাঠের সিঁড়ি তৈরি করে নেন। এখন কাঠের তৈরি সিঁড়িই নদী পারাপারের প্রধান ভরসা। মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এ পথে চলছে।

উপজেলার দুই ইউনিয়নকে এক করেছে সেতুটি। গোসিংগা ইউনিয়নের চাওবন গ্রাম রাজবাড়ী ইউনিয়নের ডোয়াইবাড়ি গ্রামের ওপর দিয়ে যাওয়া পারুলী নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে সেতুটি। বছর পার হলেও সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক প্রস্তুত করা হয়নি। ফলে দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এলাকাবাসী একত্র হয়ে সেতুর দুই পাশে ২০ ফুট লম্বা কাঠের সিঁড়ি বানিয়ে নিয়েছে। এই কাঠের সিঁড়ি বেয়ে সেতু ব্যবহার করে যাতায়াত করছেন এলাকাবাসী। মূল সেতু ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থ। নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কর্মকর্তার কার্যালয়। মেসার্স মিথুন এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ সেতুর নির্মাণকাজ করেছে। সেতুর দুই পাশে দু’টি লম্বা কাঠের সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। এখন সে দু’টি সিঁড়িও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ সিঁড়ি বেয়ে স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা এ সেতু পার হয়। রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিতে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়টি নিয়ে আলাপ করছেন। মানুষের এ দুর্ভোগ কমাতে একটা ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানা যাচ্ছে। শ্রীপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানাচ্ছেন দ্রুত দুই পাশের সংযোগ সড়ক স্থাপন করে সেতু ব্যবহার উপযোগী করা হবে। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করা হবে। বিষয়টি অতি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে সমস্যার সমাধান করা হবে।

সেতু নির্মাণ নিয়ে প্রায়ই তুঘলকি কাণ্ড ঘটে। সংযোগ সড়ক নেই কিন্তু সেতু নির্মাণ করে ফেলা হয়। পরে সেই সেতু জনসাধারণের উপকারে আসে না। অনেক সময় এ ধরনের সেতু বাড়তি ভোগান্তি তৈরি করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায় কোনোমতে কাজ শেষ করে তাদের লাভ তুলে নিতে। সেটা উপকারে আসবে কি না তারা সেটা দেখতে চায় না। এ দিকে স্থানীয় প্রশাসন অনেক সময় এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ কাজে বাগড়া দেয় না। এমনকি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা চোখ বুঝে থাকেন। অনেক সময় দেখা যায় উন্নয়ন প্রকল্পের নামে একটি চক্র অবৈধভাবে অর্থ আয় করে নিতে চায়। শ্রীপুরের সেতুটির ব্যাপারে এমন কোনো অশুভ আঁতাত হয়েছে কি না তার তদন্ত হওয়া উচিত। আমরা মনে করি স্থানীয় জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে সংযোগ সড়ক নির্মাণে তড়িঘড়ি করে পদক্ষেপ নিতে হবে।