ঢাকার অদূরে গাজীপুরের শ্রীপুর। এখানে একটি ছোট খালের ওপর নির্মিত সেতুর বিম ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। গাড়ি উঠলে দুলতে থাকে সেতুটি। এ ব্যাপারে সহযোগী একটি দৈনিকের শ্রীপুর সংবাদদাতার প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার দুখলা খালের ওপর নির্মিত সেতুর মাঝ বরাবর নুয়ে পড়েছে। সেতুর মাঝে ঢেউয়ের মতো তৈরি হয়েছে। চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। আরেকটু দেবে গেলে সেতু ভেঙে খালের পানিতে পড়ে যাবে। এ দিকে বিমের ফাটল দিন দিন বড় হচ্ছে। সেতুটি ভেঙে গেলে এ পথে চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সেতুটি শ্রীপুর পৌরসভার ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড সীমান্তে দুখলা খালের ওপর নির্মিত। এটি পৌরসভার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা- নতুন বাজার ও দুখলাকে যুক্ত করেছে। ছয় থেকে সাত দিন ধরে সেতুর নিচের বিম ভাঙা দেখা যাচ্ছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় যান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া দুই বছর ধরে এর নিচ থেকে পলেস্তারা খসে পড়েছিল। যানবাহন উঠলে সেতু বাঁকা হয়ে যাচ্ছিল। চরম ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি নিয়ে কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা নেই। অথচ সবার জানা, পুরনো সেতু শিল্পাঞ্চলে রাখা কোনো অবস্থানেই ঠিক হয়নি।
সেতুটি ১৯৮৫ সালে তৈরি করা। সে হিসাবে ৪০ বছরের পুরনো। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এটি বাস্তবায়ন করেছে। আগে এটি কম ব্যবহৃত হলেও ১০ বছর ধরে এর ব্যবহার বেড়েছে বহুগুণ। শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠায় প্রতিদিন প্রচুর যানবাহন চলাচল করছে।
গার্মেন্ট মালিক জসিম উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের ছোট কারখানায় শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। তারা সবাই এ সেতু দিয়ে চলাচল করেন। দিনে চারবার এ সেতু পার হন তারা। আমাদের বিকল্প কোনো সড়ক নেই। তাই দ্রুত এটি ভেঙে নতুন সেতু করার দাবি দীর্ঘদিনের। কেউ কথা রাখছেন না।’ রিভার অ্যান্ড নেচার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, ‘সেতু এ অবস্থায় থাকলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কোনো দুর্ঘটনার পর ব্যবস্থা নিলে সেটি দায়িত্বের অবহেলা।’ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী শাহেদ আখতার বলেন, ‘চেষ্টা করছি সেতুটি নতুন করে করতে। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। আশা করি, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করতে পারব।’
গাজীপুরের শ্রীপুর একটি শিল্পাঞ্চল। স্বাভাবিকভাবে এখানে মানুষজনের চলাচলও খুব বেশি। বিকল্প কোনো উপায় না থাকায় বিপজ্জনক হওয়া সত্তে¡ও সেতুটির ওপর দিয়ে যেভাবে যানবাহন ও মানুষজন চলাচল করছে, তাতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে এখনই সেতুটির প্রয়োজনীয় সংস্কার অথবা নতুন করে আরেকটি সেতু নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।
আমাদের প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিবাসীদের নিরাপদ যাতায়াতের কথা বিবেচনায় নিয়ে সময়ক্ষেপণ না করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর অতি দ্রুত ভাঙা সেতু ভেঙে নতুন করে অথবা প্রয়োজনীয় সংস্কারে প্রকল্প হাতে নেবে।



