দুই ভাইয়ের নদী দখল, অবিলম্বে বন্ধ করুন

আমরা আশা করব, নদী ভরাটের সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক জনস্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ পরিবেশ ও প্রতিবেশ নষ্ট করে কোনও কাজই চলতে পারে না।

স্বৈরাচারী আমলে ২০০৯-২০২৪ গণতন্ত্রের কোনো মূল্য দেয়া হয়নি বরং প্রতি পদে গণতন্ত্রের গলা টিপে ধরা হয়েছে। কারণ ওদের কোথাও কোনো জবাবদিহি ছিল না। তার প্রমাণ নারায়ণঞ্জের সোনারগাঁওয়ের একটি ঘটনা।

একটি সহযোগী দৈনিকের খবরে প্রকাশ, সোনারগাঁওয়ে নদীর জায়গা ও সরকারি খামজমি আল-মোস্তফা কোপানির পক্ষে স্থানীয় সাবেক ক্ষমতাসীন দলের নেতা আপন দুই ভাই ভরাট করছেন। উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ার চর এলাকায় মেঘনা নদীর শাখা মারিখালী নদীতে রাতে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু ফেলে জমি দখল করা হচ্ছে। পতিত দলের সোনারগাঁও উপজেলার যুগ্ম সম্পাদক ও তার ছোট ভাই পিরোজপুর ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে এ বালু ভরাটের অভিযোগ উঠেছে।

ওই দুই ভাই অভিযোগ অস্বীকার করলেও এলাকাবাসী জানান, আল-মোস্তফা কোম্পানি নদীর জায়গা ও সরকারি খাসজমি দখল করে এবং বালু ভরাট করার দায়িত্ব দেয় এই দুই ভাইকে। ভরাটের ফলে এ নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার হাজারও মানুষ এ নদীতে গোসল করা থেকে শুরু করে নদী থেকে নিত্যদিন ব্যবহারের পানি নিতে এ স্থানটি ব্যবহার করত। বর্তমানে ভরাট করার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। জেলেদের জীবিকাও নষ্ট হয়েছে। নদীর জমির পাশাপাশি ব্যক্তিমালিকানার জায়গাও দখলে নিয়েছেন তারা।

কিন্তু দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ কথা বলতে সাহস পাননি।

আষাড়িয়ার চর গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন রাতের বেলা নদী ভরাট করা হয়।

পিরোজপুর ইউনিয়নের ওই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘আমার বড় ভাই আল-মোস্তফা কোম্পানি থেকে ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে বালু ভরাটের কাজ পেয়েছেন। সেই সূত্রে আমি এ কাজে জড়িত। এ জায়গা সরকারি কি না তা আমাদের জানা নেই।’

কোম্পানির চেয়ারম্যান মোস্তফা বলেন, ‘এলাকাবাসী জায়গা ভরাট করছে। এখানে আমাদের কোম্পানিরও কিছু জমি রয়েছে। আমাদের জমিও ভরাট করা হচ্ছে। আমাদের ভূমি থেকে আড়াই শ’ ফুট দূরে খাল। বিআইউবিøউটিএর লোকও মেপেছে। এখন যেহেতু বর্ষাকাল, সব জায়গায় খাল দেখা যায়। তাই তারা ভরাট কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। বর্তমানে আমরা ভরাট কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’

হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বলেন, ‘বালু ভরাটের প্রমাণ পাওয়া গেছে। দখলদারদের তাদের স্বপক্ষে কাগজপত্র নিয়ে এসিল্যান্ড কার্যালয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

সোনারগাঁও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, সরকারি খাস সম্পত্তি ও নদীর জায়গা কাউকে দখল করতে দেয়া হবে না। ঘটনাস্থলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। দখলের প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিআইডব্লিউটিএ মেঘনা ঘাট নদীবন্দরের উপপরিচালক বলেন, শাখা নদীগুলোর বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেখভাল করবেন। কেউ নদীর জায়গা দখল করলে ব্যবস্থা নেবেন।

আমরা আশা করব, নদী ভরাটের সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক জনস্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ পরিবেশ ও প্রতিবেশ নষ্ট করে কোনও কাজই চলতে পারে না।