ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক উত্তরবঙ্গের চলাচলে গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়ক। এ পথে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার যানবাহন যাতায়াত করে। এর সম্প্রসারণ ও সংস্কারকাজের মেয়াদ দুই বছর হতে না হতে ২৫ কিলোমিটারজুড়ে খানাখন্দে ভরে গেছে। শুধু তাই নয়, অনেক স্থানে সড়ক দেবে গেছে। ফলে গাড়ি চলাচলে ধীরগতি ও দুর্ঘটনা বাড়ছে।
একটি সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক উদ্বোধনের দুই বছরের মাথায় সড়কের অন্তত ২৫ কিলোমিটার এলাকায় বড় বড় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক দেবে গেছে। এতে ঘন ঘন দুর্ঘটনা এবং যানজটে বসে থেকে হাজারো যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কয়েক মাস ধরে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের কালিহাতীর এলেঙ্গা থেকে সদর উপজেলার তারটিয়া পর্যন্ত খানাখন্দে ভরে গেছে। এ ছাড়া মির্জাপুর থেকে গোড়াই পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে সড়ক দেবে গেছে। বাস্তবতা হলো- নিম্নমানের কাজ ও ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত পণ্য পরিবহনে অল্প দিনে সড়কে এমন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক বিভাগ নামমাত্র সংস্কার করায় কয়েক ঘণ্টা পর আবার তা উঠে গেছে। এতে মহাসড়কে চলাচলকারীদের দুর্ভোগ লাঘব হয়নি। অবস্থা এত নাজুক যে, চন্দ্রা থেকে কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত আগে যেখানে ৮০-৮৫ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানো যেত, সেখানে এখন ভাঙাচোরা ও গর্তে ১৫-২০ কিলোমিটার গতিতে চালাতে হয়। ফলে সময় বেশি লাগার পাশাপাশি গরমে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের।
টাঙ্গাইল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেছেন, সড়ক বিভাগ, জেলা আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন কমিটির সভায় একাধিকবার আলোচনা করেও কোনো সুরাহা হয়নি।
বিগত সরকারের সময় সড়কে কাজের নামে লুটপাট হয়েছে। এর ফল ভোগ করছেন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলাচলকারীরা। শুধু ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক নয়, দেশের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থায় এক নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। অথচ মহাসড়ক কিংবা সড়ক সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা যাদের দায়িত্ব তারা যেন নির্বিকার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়কগুলোর দুর্গতি দেখেও না দেখার ভান করে।
প্রতিবেদন অনুসারে, সড়কটি নির্মাণ করেছে আব্দুল মোনেম লিমিটেড, ডিয়েনকো ও মীর আক্তার নামের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার। প্রশ্ন হলো- এসব প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি নিশ্চিত করবে কে? সড়ক ও জনপথ বিভাগ কি সড়কের সমস্যা দেখবে না? কিন্তু দেখে শুনে মনে হয়, সড়ক নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো গরজ নেই। অথচ সারা দেশের সড়ক ও মহাসড়কগুলো সংস্কারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। সড়ক-মহাসড়কের যেসব স্থানে খানাখন্দসহ অন্য সমস্যা রয়েছে, তা দ্রুত মেরামত করতে হবে। শুধু ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক নয়, দেশের অন্যান্য সড়কের মেরামতকাজে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে সরকার, এটিই সবার প্রত্যাশা।