গাইবান্ধায় হাসপাতালের বারান্দায় ডেঙ্গু রোগী, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন

যেহেতু ডেঙ্গু রোগ এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সেহেতু এ রোগের চিকিৎসায় অবহেলা করার সুযোগ নেই। সঙ্গতকারণে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

ডেঙ্গু জ্বর এখন শহরাঞ্চল থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগের চিকিৎসা নিতে জেলা শহরের হাসপাতালগুলোতেও রোগীরা যাচ্ছেন। এমন একটি হাসপাতল গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল। কিন্তু এখানে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে হাসপাতালের বারান্দায়। সরকারি হাসপাতালে মানুষ ন্যূনতম স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা পেতে চান। কিন্তু হাসপাতালগুলো যেন চিকিৎসাসেবায় সেই কাক্সিক্ষত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারছে না। এমন চিত্র গাইবান্ধা সদর হাসপাতালেও বিদ্যমান রয়েছে। অথচ গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল জেলার অন্যতম সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র। সারা জেলা থেকে রোগীরা উল্লিখিত হাসপাতালে যান চিকিৎসাসেবা নিতে। কিন্তু হাসপাতালের অনুন্নত পরিবেশে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের হতাশ হতে হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশে হাত ধোয়ার বেসিন নষ্ট। এর ঠিক নিচে আবর্জনার স্তূপ। টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। মানুষের ভিড়। সেই সাথে চিকিৎসকদের অবহেলা ও ওষুধের অপর্যাপ্ততা তো আছেই।

একটি সহযোগী দৈনিকে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, গাইবান্ধায় ডেঙ্গু আতঙ্ক শহর থেকে গ্রামেও ছড়িয়েছে। হাসপাতালে বাড়ছে রোগী। তবে হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড খোলা হয়নি। সাধারণ রোগী ও ডেঙ্গু রোগীদের একই জায়গায় রেখে চলছে চিকিৎসা। এডিশ মশার মাধ্যমে ছড়ানো এ রোগ নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনরা। বাধ্য হয়ে অনেকে বারান্দায় নোংরা পরিবেশে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

অবস্থা এমন নাজুক যে, এ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত অনেক রোগীর মশারি নেই। পরিসংখ্যান বলছে, এই মৌসুমে হাসপাতালে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন ৩২৪ জন। আর ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজন ভর্তি হয়েছেন। আগের ভর্তি রোগী আছেন এখনো ১৩ জন।

হাসপাতালের নিচতলা ও দোতলায় শয্যা ফাঁকা না থাকায় পুরুষ এবং মহিলা ওয়ার্ডের মেঝেতে ও বারান্দায় রোগী। দোতলায় মহিলা ওয়ার্ডের বারান্দায় মশারির নিচে ডেঙ্গু রোগী। পাশে সাধারণ রোগী রয়েছেন। নিচতলায় পুরুষ ওয়ার্ডের বারান্দায় শিশু ওয়ার্ড ঘেঁষে ডেঙ্গু রোগী রাখা হয়েছে। এখানে কোনো কোনো ডেঙ্গু রোগীর মশারি নেই। কয়েল জ্বালিয়ে সাধারণ রোগীদের পাশে রাখা হয়েছে। পাশে নবজাতক ওয়ার্ড। হাসপাতালে ব্যাপক রোগীর চাপ।

সরকারি হাসপাতালগুলোতে পরিচ্ছন্ন কর্মী রয়েছেন। কিন্তু হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন অবস্থা দেখে মনে হয় তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। এসব বিষয় তদারকি করারও যেন কেউ নেই। হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোরভাবে নজরদারি করা উচিত। একই সাথে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রোগীদের নিয়মিত দেখাশোনা না করার অভিযোগও খতিয়ে দেখতে হবে।

যেহেতু ডেঙ্গু রোগ এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সেহেতু এ রোগের চিকিৎসায় অবহেলা করার সুযোগ নেই। সঙ্গতকারণে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কোনো অজুহাতে বারান্দায় অযত্ন-অবহেলায় ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা কাম্য হতে পারে না।