বাংলার ভূমিসন্তান-শহীদ জিয়াউর রহমান

জিয়াউর রহমান একজন শক্তিশালী, দূরদর্শী ও স্বদেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন। তার মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বে বড় শূন্যতা সৃষ্টি করে, যা স্বাভাবিকভাবে দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করে। সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের মধ্যে অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। দেশের প্রতিরক্ষা ও সীমান্তনীতি, যা জিয়াউর রহমান দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছিলেন, তার ধারাবাহিকতা ঝুঁকিতে পড়ে। দেশের জনগণ শোক ও হতাশার মধ্যে পড়ে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণে অর্থনীতি ও বিনিয়োগেও প্রভাব পড়ে

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দূরদর্শী নেতা ছিলেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার প্রতিফলন দেখা গেছে। সৈনিক হিসেবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সাহসী। পাকিস্তানের সামরিক কমান্ডের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।

এই পদক্ষেপের ফলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এক বড় বিপদের মধ্যে পড়েছিলেন। পাকিস্তানি সেনারা যেকোনো সময় তাকে গ্রেফতার বা হত্যা করতে পারত। আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানি সামরিক ও প্রশাসনিক কমান্ডের আজ্ঞা অগ্রাহ্য করে স্বাধীন পদক্ষেপ নেন। তিনি সৈন্যদের উদ্দীপিত করেন এবং মুক্তিযুদ্ধকে শক্তিশালী করার জন্য সশস্ত্র প্রতিরোধের আহ্বান জানান।

এই ঘোষণা শুধু রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়; বরং দেশের জনগণকে অনুপ্রাণিত করার এবং মুক্তিযুদ্ধকে প্রেরণা দেয়ার একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। এই সাহসী পদক্ষেপই পরে জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে একজন কেন্দ্রীয় ও চিরস্থায়ী নেতারূপে প্রতিষ্ঠিত করে।

জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনৈতিক অবস্থানকে ভারতের প্রভাবমুক্ত করার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মিত্র ছিল, কিন্তু স্বাধীনতার পর ক্রমেই ভারতের রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাংলাদেশের ওপর বাড়তে থাকে। জিয়াউর রহমান এটিকে দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছিলেন।

ভারতীয় প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসার জন্য জিয়াউর রহমানের পদক্ষেপ
‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ ধারণা আসলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বড় মোড় ঘোরানোর ঘটনা।

কেন তিনি এই ধারণা আনলেন?
মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’-কে রাষ্ট্রের মূল দর্শন হিসেবে গ্রহণ করেছিল, যা ঐতিহাসিকভাবে ভারতীয় বাঙালি জাতীয়তাবাদের সাথে যুক্ত ছিল। এর মাধ্যমে ভারতের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বাংলাদেশে অক্ষুণ্ণ থাকার আশঙ্কা দেখা দেয়। জিয়াউর রহমান দেখলেন, যদি শুধু ভাষাভিত্তিক পরিচয়ে জাতীয়তাবাদ সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে তা পশ্চিমবঙ্গকেন্দ্রিক ভারতীয় প্রভাবকে বাংলাদেশে জায়গা করে দেবে।

তিনি বললেন, আমরা বাঙালি হতে পারি, তবে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রথম পরিচয় ‘বাংলাদেশী’। এই দৃষ্টিভঙ্গি ভারতের বাঙালি পরিচয়ের বাইরে একটি ভৌগোলিকভাবে স্বাধীন রাষ্ট্রীয় সত্তা জোরালো করে।

ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ
বাংলাদেশে কেবল মুসলিম নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানসহ নানা সম্প্রদায় আছে। ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ তাদের সবার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিচয় তৈরি করে। তিনি পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ ভারতের বাঙালি জাতীয়তাবাদের সাথে নয়, বরং নিজস্ব ভূখণ্ড, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জনগণের অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয় গড়ে তুলবে। এভাবেই ভারতের প্রভাবমুক্ত একটি স্বাধীন রাজনৈতিক দর্শন প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ, ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ কেবল একটি রাজনৈতিক স্লোগান ছিল না; বরং এটি ছিল ভারতীয় আধিপত্য থেকে মুক্ত একটি স্বাধীন রাষ্ট্রীয় দর্শনের ভিত্তি।

বহুমাত্রিক কূটনীতি
জিয়াউর রহমানের বহুমাত্রিক কূটনীতি ছিল ভারতের প্রভাব থেকে বেরিয়ে এসে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও বহুমুখী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ আরব দেশগুলোর সাথে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ান। শ্রমবাজার উন্মুক্ত করে দেন, যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশী শ্রমিক প্রেরণ শুরু হয়, আজও রেমিট্যান্স অর্থনীতির ভিত্তি। মুসলিম বিশ্বের সাথে সক্রিয় অংশগ্রহণ, ওআইসিতে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করেন। এর মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যে বাংলাদেশকে শক্তিশালী সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভারতের প্রভাবমুক্ত একটি আন্তর্জাতিক সমর্থন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক

পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে ভারসাম্য আনেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর (বিশেষত থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া) সাথে নতুন কূটনৈতিক যোগাযোগ গড়ে তোলেন। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও জাপানের সাথে উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়ান, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কূটনীতিকে শক্তিশালী করেন। দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা ও ভারতের প্রভাব ভারসাম্য করতে তিনি সার্ক গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক কৌশলগত শক্তি হিসেবে পরিচিতি দেন।

সীমান্তে কঠোর অবস্থান
জিয়াউর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেন। ভারতের সাথে দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা যেমন, সীমান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারতের একতরফাভাবে প্রভাব বিস্তার ও আগ্রাসী আচরণের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও কঠোর অবস্থান নেন। তিনি কেবল কূটনৈতিক পর্যায়ে নিন্দা বা আলোচনা করেননি, বরং সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে মোতায়েন করে দেশের সার্বভৌমত্ব এবং সীমান্ত অখণ্ডতা নিশ্চিত করেন। এই পদক্ষেপ দেশের নিরাপত্তা, স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং জাতীয় আত্মমর্যাদাকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অবৈধ অনুপ্রবেশ : জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ ছিল সীমান্ত নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি সীমান্তে সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে মোতায়েন করে, ভারত বা অন্য কোনো দেশের একতরফাভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টা প্রতিহত করতেন। এর ফলে শুধু সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে না, দেশের সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও দৃঢ়ভাবে রক্ষা পায়।

চোরাচালান : জিয়াউর রহমানের সময় চোরাচালান প্রতিরোধ সীমান্ত নিরাপত্তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল। তিনি সীমান্তে সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সক্রিয়ভাবে মোতায়েন করেন এবং প্রয়োজনীয় নজরদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন, যাতে ভারত বা অন্য কোনো দেশের মাধ্যমে পণ্যের অবৈধ প্রবেশ বন্ধ করা যায়। এর ফলে শুধু দেশের আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে না, অর্থনীতি ও জনসাধারণের নিরাপত্তাও রক্ষা পায়।

ফারাক্কা ব্যারাজ ইস্যুতে কঠোর অবস্থান : ভারত গঙ্গা নদীর পানি একতরফাভাবে ফারাক্কা ব্যারাজের মাধ্যমে সরিয়ে নেয়ায় বাংলাদেশের কৃষি, মৎস্য ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। জিয়াউর রহমান বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তোলেন এবং জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে উত্থাপন করেন। ভারতের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের পানির ন্যায্য অংশীদারত্ব দাবি করেন।

পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা
জিয়া আঞ্চলিক পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। দক্ষিণ এশিয়ার নদীগুলো যৌথভাবে ব্যবহারের প্রস্তাব দেন, যাতে কোনো দেশ একতরফা সিদ্ধান্ত না নিতে পারে। নদী খনন ও অভ্যন্তরীণ পানিসম্পদ উন্নয়ন, দেশের অভ্যন্তরে নদী খনন, খাল পুনঃখনন ও সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেন। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ভ‚গর্ভস্থ পানির পাশাপাশি নদী-খাল ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পানি ইস্যু শুধু ভারতের সাথে আলোচনায় সীমাবদ্ধ না থেকে, তিনি বিষয়টি মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর ফোরামে তোলেন। এতে পানি সমস্যাকে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় ইস্যুর বাইরে এনে বৈশ্বিক গুরুত্ব দেয়ার কৌশল নেন।

অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা : জিয়াউর রহমানের নীতি অনুযায়ী অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন ছিল ভারতের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা এড়ানোর মূল লক্ষ্য। বহুমুখী বৈদেশিক বিনিয়োগ ও সহায়তায় তিনি মধ্যপ্রাচ্য, পশ্চিমা দেশ এবং জাপান, ইউরোপের সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি একপক্ষীয় নির্ভরশীলতা থেকে মুক্তি পায় এবং বহুমুখী সমৃদ্ধির পথ সুগম হয়।

প্রবাসী শ্রমিক প্রেরণ : জিয়াউর রহমানের সময় বাংলাদেশী শ্রমিকদের প্রবাসে পাঠানো শুরু হয়। প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতির জন্য একটি শক্ত ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহ দেয়।

জাতীয় নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনী শক্তিশালীকরণ : জিয়াউর রহমানের সময় জাতীয় নিরাপত্তা ও সেনাবাহিনী শক্তিশালীকরণ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার মূল ভিত্তি ছিল। সেনাবাহিনী আধুনিকায়নে সেনাবাহিনীতে আধুনিক প্রযুক্তি, অস্ত্রোপকরণ এবং প্রশিক্ষণে উন্নত করেন। সামরিক ইউনিটগুলোর প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি বৃদ্ধি করা হয়, যাতে সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কার্যকরভাবে রক্ষা করা যায়।

প্রতিরক্ষা কৌশল ও নীতিনির্ধারণে জোর দেন, যাতে দেশ নিজস্ব সামরিক সক্ষমতা দিয়ে কোনো বহিরাগত চাপ মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়। ভারতের সামরিক প্রভাব ও সম্ভাব্য হুমকির বিরুদ্ধে রণকৌশলগত প্রস্তুতি নিশ্চিত করেন। সীমান্তে সক্রিয় মোতায়েন এবং শক্তিশালী গোয়েন্দা ব্যবস্থা স্থাপন করে দেশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয় দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে, যা বাংলাদেশের জন্য এক গভীর রাজনৈতিক ও সামাজিক শোক ও বিপর্যয় সৃষ্টি করে।

ঘটনার প্রেক্ষাপট ও প্রভাব
জিয়াউর রহমান একজন শক্তিশালী, দূরদর্শী ও স্বদেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন। তার মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বে বড় শূন্যতা সৃষ্টি করে, যা স্বাভাবিকভাবে দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করে। সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের মধ্যে অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। দেশের প্রতিরক্ষা ও সীমান্তনীতি, যা জিয়াউর রহমান দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছিলেন, তার ধারাবাহিকতা ঝুঁকিতে পড়ে। দেশের জনগণ শোক ও হতাশার মধ্যে পড়ে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণে অর্থনীতি ও বিনিয়োগেও প্রভাব পড়ে।

জিয়াউর রহমানকে ‘বাংলার সূর্য সন্তান’ হিসেবে গণ্য করা হতো। তার হত্যার ফলে জাতীয় চেতনা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্বাধীনতার মূল্য ও আত্মমর্যাদার প্রশ্নও নতুনভাবে সামনে আসে। এই হত্যাকাণ্ড শুধু একজন নেতার মৃত্যু নয়; বরং বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল।

জিয়াউর রহমান সত্যিই একজন স্বজনপ্রীতিমুক্ত, ন্যায়নিষ্ঠ এবং জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। তিনি কেবল ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা দলের স্বার্থের জন্য নয়, দেশের বৃহত্তর স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতেন। প্রশাসন, সেনা বা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে তিনি পক্ষপাত এড়িয়ে ন্যায় ও দক্ষতার ভিত্তিতে কাজ করতেন। দেশের সার্বভৌমত্ব, সীমান্ত নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার মতো বিষয়গুলোতে তিনি সর্বদা জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতেন। ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক সুবিধার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া ছিল তার নীতির সাথে বিরোধপূর্ণ। সাধারণ মানুষের কল্যাণ, নিরাপত্তা ও স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষা করাই তার নেতৃত্বের মূল নীতি ছিল। তিনি জনগণের স্বাভাবিক আকাক্সক্ষা ও আশা সম্মান করে তা বাস্তবায়নে সক্রিয় পদক্ষেপ নিতেন। এসব গুণাবলি জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বতন্ত্র, ন্যায়পরায়ণ এবং স্বদেশপ্রেমী জাতীয় নেতা হিসেবে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

লেখক : সিনিয়র ফেলো, এসআইপিজি

নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি

[email protected]