১০ মিনিটের পথে লাগে ১ ঘণ্টা, জনগণের ভোগান্তি দূর করুন

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট একটি অবহেলিত উপজেলা। এই উপজেলার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দুর্ভোগের প্রতীক। বছরের পর বছর কোনো সংস্কার নেই। একটি সহযোগী দৈনিকের কুমিল্লা প্রতিনিধির পাঠানো খবরে বলা হয়েছে, নাঙ্গলকোট উপজেলার তিনটি সড়কই খানাখন্দে জর্জরিত, শত শত গর্তে পানি জমে অনেকটা ডোবার রূপ নিয়েছে। চলাচল করতে গিয়ে তিনটি ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষকে প্রতিদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষক থেকে শুরু করে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স সবাই ভোগান্তি পোহাচ্ছে। যাত্রীরা বলছেন, একসময় ১০ মিনিটের পথ এখন পাড়ি দিতে সময় লাগছে এক ঘণ্টা। বৃষ্টি হলে জমে থাকা পানিতে রাস্তা আর খাল-পুকুরের পার্থক্য বোঝা যায় না।

উপজেলার মাহিনী-জোড় পুকুরিয়া সেতু পর্যন্ত সড়ক, নাঙ্গলকোট শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়ক এবং নাঙ্গলকোট স্টিল সেতু থেকে মাধবপুর পর্যন্ত সড়কের অবস্থা নাজুক। তিনটি সড়কের প্রায় ১৫ কিলোমিটারজুড়ে খানাখন্দ। বেশির ভাগ সড়কের পাশে ড্রেন না থাকায় পনি সরে না। অল্প বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে থাকে এবং নষ্ট হয়ে যায়। মাহিনী-জোড় পুকুরিয়া সড়কের মাহিনী দারুল কুরআন মাদরাসা থেকে অলিপুর বাজার পর্যন্ত বেহাল অবস্থা।

চার বছর ধরে সড়কটি অচল অবস্থায় পড়ে আছে। মাঝে মাঝে ইটের টুকরা ফেলে মেরামতের চেষ্টা করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই আগের অবস্থায় ফিরে যায়।

নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়কের চেহরিয়া কৈয়া, ভুলুয়াপাড়া, সাবিত্রা ও নাঙ্গলকোট অংশের দুরবস্থা চরমে। বিশেষ করে কৈয়া গ্রামের ভেতরের চার-পাঁচটি বড় গর্ত পুরোপুরি পানিতে ভরা। ওই অংশ দিয়ে ছোট যানবাহন তো দূরের কথা, পথচারীদেরও চলাচল করা কঠিন।

নাঙ্গলকোট স্টিল সেতু থেকে মাধবপুর পর্যন্ত সড়কের মাক্রবপুর ও মাধবপুর অংশের অবস্থা আরো ভয়াবহ। সড়কে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় অ্যাম্বুলেন্স যেতে পারছে না। এতে অনেকসময় অসুস্থ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন। রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের দুপুয়া গ্রামের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ‘মাহিনী-অলিপুর-জোড় পুকুরিয়া সড়কটি চার বছর ধরে বেহাল। ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য বরাদ্দে ইট-সুরকি ফেলে কিছুটা ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়। টেকসই সংস্কার ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।’

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী বলেন, ‘মাহিনী-অলিপুর জোড় পুকুরিয়া সড়কটি বিভাগীয় প্রকল্পে প্রস্তাব করা হয়েছে। নাঙ্গলকোট-শ্রীফলিয়া-বাঙ্গড্ডা সড়কটি জিওবি প্রকল্পে প্রস্তাব রয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে কাগজপত্র তৈরি করে অফিসে পাঠানো হবে।’

৩০ হাজার মানুষকে ১০ মিনিটের পথ যেতে ১ ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হচ্ছে, এটাও এ যুগে বিশ্বাস করতে হয়। সড়ক যেখানে মানুষের চলাচলের পথ সুগম করে দেবে, সেখানে দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পায় কিভাবে? চার বছর ধরে সড়কগুলোর কোনো সংস্কার নেই। সড়ক তৈরিও করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। সরকারি এ সড়কের কাজ স্থানীয় সরকারের পক্ষে সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য জনগণের দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা এ সড়কের ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি আশা করছি।