খুলনায় সরকারি মৎস্য বীজ খামার দখলের ঘটনায় দুই সংগঠনের প্রতিবাদ

বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এরূপ আইনবহির্ভূত এবং জবরদখলমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দাজ্ঞাপন করছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনায় সরকারি মৎস্য বীজ খামার দখলের ঘটনায় দুই সংগঠনের প্রতিবাদ
খুলনায় সরকারি মৎস্য বীজ খামার দখলের ঘটনায় দুই সংগঠনের প্রতিবাদ |নয়া দিগন্ত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার মধ্যে থাকা ‘খুলনা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার’ দখল করে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ নামে আবাসিক হলের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে গত রোববার খামার কার্যালয়ের নামফলকের ওপর নতুন ব্যানার টাঙিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন।

বুধবার (১৩ আগস্ট) অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ড. মো: খালেদ কনক ও সদস্য সচিব মো: মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

একই ঘটনায় আলাদা বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফিশারিজ এক্সিকিউটিভ অ্যাসোসিয়েশন (বিএফইএ)। সংগঠনের আহ্বায়ক মো: কামরুজ্জামান শাহ্ স্বপন ও সদস্যসচিব মো: রাশেদুজ্জামান দিপু বলেন, এই অনাকাংখিত জবরদখলের ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, খামার ব্যবস্থাপকের কার্যালয়, মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার, গল্লামারি, খুলনা; উপ-প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট; দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র ফিশ হেলথ ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি ও একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ প্রায় ১০.৩৫ একর সরকারি জমি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী জবরদখল ও প্রতিষ্ঠানের মূল নামফলক অপসারণ করে অবৈধভাবে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ ঘোষণা করেছে। এতে মৎস্য অধিদফতরের এ প্রতিষ্ঠানটিতে কার্প ও চিংড়ি হ্যাচারি, প্রজননক্ষম মৎস্য ব্যবস্থাপনা, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর কলাকৌশল সম্বলিত প্রশিক্ষণ, রোগ নির্ণয় ও গবেষণা, জেনেটিক্যালি পরিশুদ্ধ রেণু ও পোনা উৎপাদন, বৃহত্তর খুলনাসহ পাশের অন্য জেলার ঘের ও খামারগুলোর ভৌত-রাসায়নিক প্যারামিটার পরীক্ষা, পিসিআর অ্যামপ্লিফিকেশনসহ অন্য কার্যক্রম বন্ধ করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বের করে দেয়া হয়েছে।

এহেন জঘন্য মবোক্রেসির মাধ্যমে শুধু জুলাই আন্দোলনের মহৎ ও পবিত্র উদ্দেশ্যই ভূলুণ্ঠিত হয়নি, বরং দেশের উৎপাদনমুখী মৎস্য সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব এবং কার্যক্রমও মারাত্মকভাবে ব্যাহত ও বিপর্যস্ত হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের দ্বারা সরকারি সম্পত্তি ও দফতরসমূহ জবরদখলের এহেন কর্মকাণ্ড দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি অশ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ।

উল্লেখ্য, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

বিসিএস (মৎস্য) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এরূপ আইনবহির্ভূত এবং জবরদখলমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দাজ্ঞাপন করছে। অনতিবিলম্বে অবৈধ দখলদার, উস্কানিদাতা এবং প্রতিষ্ঠানটিতে রাতে অবস্থানকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তিতে অবৈধ অনুপ্রবেশ, সম্পত্তি বিনষ্ট ও সরকারি কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি এবং মব সৃষ্টির মাধ্যমে জবরদখলকৃত দফতরসমূহ দখলমুক্ত করে স্বাভাবিক দাফতরিক কর্মকাণ্ড শুরু করার পরিবেশ নিশ্চিত করে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছি।