বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, ‘আমরা আগামী দিনে যে একটা ক্যাডিবেল ইলেকশনের কথা বলছি, সুষ্ঠু এবং ইতিহাসের সেরা নির্বাচনের কথা বলছি, সবটাই সম্ভব হবে যদি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিতে নির্বাচন হয়। এটাও বলেছি, আমরা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চাই। ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হতে হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি রচনা করে তার ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে।’
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, এটা স্বাক্ষরিত হবে। স্বাক্ষরিত হওয়ায় এটা রাষ্ট্রীয় দলিল হিসেবে স্বীকৃত হবে। যদি এটা আইনি প্রক্রিয়ায় না আসে, তাহলে স্টেট এভিডেন্স হিসেবে ডকুমেন্ট হিসেবে এটা স্বীকৃতি পায় না। তাহলে আমরা যে আগামী দিনের বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছি, সুশাসন-ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, জবাবদিহিতামূলক, জনকল্যাণমুখী একটি রাষ্ট্র কায়েম হবে; পুরনো যে ফ্যাসিবাদী আমলের সবকিছু সংস্কার করে, ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে নবযাত্রা শুরু হবে, তার জন্য জুলাই চার্টারের আইনি ভিত্তির কোনো বিকল্প নেই।’
আইনি ভিত্তিটা কিভাবে হবে— এমন প্রশ্ন তুলে নিজে উত্তর দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, ‘আমরা বলেছি, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হতে হবে একটা শক্তিশালী আইনি ভিত্তিতে। যাতে পরবর্তী সময়ে সনদটি চ্যালেঞ্জের মুখে না পড়ে, চ্যালেঞ্জ করে এটাকে আবার রহিত করার সুযোগ না পায়। বাংলাদেশের ইতিহাস আছে অনেক বিষয়ে আইন হয়েছে আবার এগুলো চ্যালেঞ্জ হয়েছে, রহিত হয়েছে।’
সেগুলোর বিষয় তিনি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘বারবার ভুল পদক্ষেপ নিয়ে হাঁটি এবং জুলাই সনদ আবার এটা চ্যালেঞ্জে পড়ে যায়। তাইলে আমরা কি সারা জীবনে এই ক্রাইসিসে ভুগব? সারা জীবন রক্ত দেব? জীবন দেব? আমরা কি বারবার এরকম এক ফ্যাসিবাদের উত্থানের একটা পথ উন্মুক্ত রেখে আবার ফাসিবাদকে ফিরিয়ে আনার জন্য, অবকাশ তৈরি করে রেখে যাওয়ার জন্য সংস্কার করছি, অবশ্যই নয়। সেজন্য সংবিধান অর্ডার ২০২৫ নামে যদি অর্ডারটা জারি হয়। এটা কোথাও চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নাই। এবং এটাই আইনগতভাবে শক্তিশালী একটা অবস্থান।’
তিনি বলেন, ‘আর্টিকেল-৭-এ জনগণের পরম অভিপ্রায়ের কথা বলা আছে। তার ভিত্তিতে যদি এই কনস্টিটিউশন অর্ডারটা যদি হয়, এটা সবচাইতে শক্তিশালী হবে। এরপরে আমরা বলেছি সরকার এটা করার পরে এটাকে আরো শক্তিশালী করতে পারে। মানে শক্তির উপর শক্তি। জোরের উপর জোর হবে যদি এটাকে আবার রেফারেন্ডমে (গণভোট) দেয়া হয়।’
তাহলে আর বিন্দু পরিমাণও ছিদ্র উন্মুক্ত থাকার সুযোগ এখানে নাই। আইনি চ্যালেঞ্জ বা অন্য কোনোভাবে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ থাকবে না। আমরা এই প্রস্তাবটা দিয়েছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আযাদ বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়া ও সাংবিধানিক প্রসেসে মেনেই পলিটিক্স করে আসছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ আমাদের অর্জন বারবার বলেছি, বাংলাদেশকে মেনে নিয়েই কিন্তু সবাই রাজনীতি করছে। আমরাও তাই। সুতরাং এখানে পিছনের কথা টানার কোন সুযোগ নাই। মুক্তিযুদ্ধ না মানলে বাংলাদেশকে তো অস্বীকার করা হয়ে যাবে।’