তাজুল ইসলাম

জুলাই-আগস্টে প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা এক গৌরব উজ্জ্বল বীরত্বগাথা

জুলাই-আগস্টে প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা, শহীদের পরিবারের সাথে কথা বলে, পরিবারের সাথে কথা বলে এক গৌরব উজ্জ্বল বীরত্বগাথা দেখতে পাবেন। আমরা যদি তাদের তুলে আনতে না পারি, তাহলে এই জেনারেশনের কথা কিন্তু আমরা বুঝতে পারব না।

অনলাইন প্রতিবেদক
নয়া দিগন্তের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম
নয়া দিগন্তের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম |নয়া দিগন্ত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই-আগস্টে প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা এক গৌরব উজ্জ্বল বীরত্বগাথা।

তিনি বলেছেন, জুলাই-আগস্টে প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা, শহীদের পরিবারের সাথে কথা বলে, পরিবারের সাথে কথা বলে এক গৌরব উজ্জ্বল বীরত্বগাথা দেখতে পাবেন। আমরা যদি তাদের তুলে আনতে না পারি, তাহলে এই জেনারেশনের কথা কিন্তু আমরা বুঝতে পারব না। এবং আগামীতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেয়ার, আগামীর বাংলাদেশে কোনো প্রাসঙ্গিক থাকার কোনো অধিকার আমাদের থাকবে না।

আজ শনিবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দৈনিক নয়া দিগন্তের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেছেন, যে মহাবিপ্লব হয়েছে জুলাই এবং আগস্টে, ভেতর থেকে কী পরিবর্তন হয়েছে, সে উপলব্ধি আমাদের করতে হবে। ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয়ের দেয়ালে, শহরের দেয়ালে যে গ্রাফিতি, তাদের ভাষা, তাদের প্রেজেন্টেশন, তাদের মনের আকুতি আমাদের বুঝতে হবে। সে আলোকে নেরেটিভ তৈরি করতে হবে।

তিনি বলেছেন, আমাদের পত্রিকাগুলো শেখ হাসিনার শাসনের ভয়াবহ পরিস্থিতি পুরোপুরি তুলে আনতে পারেনি। এখনো সেসব তুলে আনার সময় আছে। প্রত্যেকটি গুমের ঘটনা তুলে আনতে হবে। জুলাই আন্দোলনের প্রত্যেকটি শহীদের ঘটনা তুলে আনতে হবে। নতুন প্রজন্মের ভাষা, আকুতি তুলে আনতে হবে।

তিনি বলেন, জেনজিকে আমরা অপদার্থ ভেবেছিলাম। বলতাম এগুলো পাবজি খেলে, এগুলো ফেসবুকে পড়ে থাকে, ফার্মের মুরগির মতো। কিন্তু আবাবিল পাখির মতো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথর আর লাঠি দিয়ে এক স্বৈরশাসককে শুধু চর্বিত ঘাসের ন্যায় পিষেই ফেলেননি, দিল্লি পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে গেছেন।

‘এটা এক মহাকাব্যিক বিপ্লব। এটা জাতির প্রবাহমান রক্তস্রোতের সাথে আমাদের মিশিয়ে দিতে হবে যে এমন বিপ্লব আমাদের সন্তানরা করতে পারে! তাদের বীরত্বগাথা লিখে রাখতে হবে, সংরক্ষণ করতে হবে আগামী প্রজন্মের জন্য। যাতে কোনোদিন প্রয়োজন হলে আমাদের সন্তানরা আবার একইভাবে জেগে উঠতে পারে।’

নয়া দিগন্তের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অভিনন্দন জানিয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আপনাদের দায়িত্বের কথাটি আরেকবার মনে করিয়ে দিয়ে মুক্ত বাংলাদেশে আবার আমরা সমৃদ্ধির সেই পর্যায়ে দেশকে নিয়ে যাবো, মুক্ত বাতাসে আমরা বুকভরে শ্বাস নিবো। বাংলাদেশ এমন পর্যায়ে যাবে, যেদিন আমাদের মানুষেরা উচ্চশিক্ষার জন্য, ব্যবসার জন্য ইউরোপ বা আমেরিকায় যাবেন না। ইংরেজরা যেমন বাংলাদেশে এসেছে ব্যবসা শেখার প্রয়োজনে, সভ্যতা শেখার প্রয়োজনে এই বাংলা, সোনার বাংলা আবার সেই পর্যায়ে বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে। আমেরিকান, ইউরোপিয়ান, চাইনিজ শিক্ষার জন্য, ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য, মেডিক্যাল সাইন্সের জন্য, ঐতিহ্যের জন্য, স্থাপত্যকলার জন্য এই বাংলাদেশে ফিরে আসবে। সেইদিনের স্বপ্ন দেখে আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।