হাসিনা-জয়-পুতুলের দুর্নীতির তিন মামলায় আরো ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

মামলাটিতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। তারা হলেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জহিরুল ইসলাম খান।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল |ইন্টারনেট

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি জমি বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা পৃথক তিন মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আরো আটজন।

আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে তারা সাক্ষী দেন। এরপর আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

এরমধ্যে শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটিতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। তারা হলেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জহিরুল ইসলাম খান।

শেখ হাসিনা-পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জহিরুল ইসলাম খান।

সেইসাথে, শেখ হাসিনা-জয়সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষী দিয়েছেন চারজন। তারা হলেন অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির রাজউক ভবন শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক লায়লা নুর বেগম, সোনালী ব্যাংক পিএলসির রাজউক ভবন শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ মনির হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জহিরুল ইসলাম খান এবং দুদকের সহকারী পরিচালক ধীরাজ চন্দ্র বর্মন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগে গত ১৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন।

তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। মামলায় সাক্ষী করা হয় ২৩ জনকে।

শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় অপর আসামিরা হলেন জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো: আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য শফি উল হক, খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম সরকার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

অপরদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।

তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দু’জনসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এম রাশেদুল হাসান। মামলায় সাক্ষী করা হয় ২১ জনকে।

শেখ হাসিনা ও জয় ছাড়াও এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত অপর আসামিরা হলেন জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো: আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সদস্য মো: নুরুল ইসলাম, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

এছাড়া, রাজধানীর পূর্বাচলে দশ কাঠার প্লট জালিয়াতির ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে তৃতীয় মামলাটি করেন।

তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ১৬ জনকে।

মামলার অপর ১৬ আসামিরা হলেন জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব মো: শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো: আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), মো: নুরুল ইসলাম, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপ-পরিচালক মো: হাফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমান, তদন্ত প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

সূত্র : বাসস