বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি সোমবার (২৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত হবে।
আজ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।
এর আগে, গত ২২ জুলাই বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই দিন ধার্য করেন।
মামলার ৩০ আসামির মধ্যে গ্রেফতার ছয়জনকে ওইদিন ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির হন। পলাতক ২৪ আসামির জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত ৬ জন আইনজীবী নিয়োগের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি করেন। এ সময় অন্য প্রসিকিউটররাও তার সাথে ছিলেন।
এর আগে, গত জুনে মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই দুপুরে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) সংলগ্ন পার্ক মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ।
২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেরোবি’র ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
দুই হাত মেলে বুক পেতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, তাতে আরো গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন।
ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২ এ।