ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা হবে আজ। ইতোমধ্যে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে। এ মামলায় পলাতক রয়েছেন শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ সোমবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো: গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ রায় হওয়ার কথা রয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো: শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো: মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিকে, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় বাড়ানো হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ-র্যাব, এপিবিএন-বিজিবির পাশাপাশি নিয়োজিত রয়েছে সেনাবাহিনী। তৎপর গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও। নিরাপত্তার স্বার্থে রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সীমিত করা হয়েছে জনসাধারণের চলাচলও।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এ রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। এর আগে, গত ২৩ অক্টোবর মামলার বিচারকাজ শেষে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ রায়ের তারিখ জানানোর জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন। সেদিন ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছিলেন, রায়ের এই তারিখ হবে অল্প সময়ের মধ্যে।
হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতন, ষড়যন্ত্র, উসকানি ও ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায় এই পাঁচটি অভিযোগে তাদের বিচার হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত অপরাধের বিচারের ইতিহাসে এটাই প্রথম রায়। এ মামলায় চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন, যা ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর প্রথম কোনো অভিযুক্তের রাজসাক্ষী হওয়া।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই ঐতিহাসিক বিচারিক প্রক্রিয়া গোটা বিশ্ব যেন সরাসরি দেখতে পারে সেজন্য রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বড় পর্দায়ও রায় দেখানো হবে।
প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার তামীম বলেন, ‘সোমবার রায়ের যে অংশ ট্রাইব্যুনাল পড়ে শোনাবেন, তা ট্রাইব্যুনালের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে। আর বিটিভির মাধ্যমে দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমও সেটি সরাসরি প্রচার করতে পারবে।’



