জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) একটি আধুনিক, জবাবদিহিমূলক গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে কাজ করে তা নিশ্চিত করার জন্য এর যথেষ্ট আইনি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন।
গুম সংক্রন্ত তদন্ত কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এনএসআই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশের প্রধান বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে কাজ করে, দেশীয় ও বিদেশী উভয় ধরনের গোয়েন্দা তথ্য এই সংস্থার আওতায় থাকবে।
এই সংস্থা জাতীয় নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ দমন এবং রাজনৈতিক ও নাশকতামূলক কার্যকলাপের ওপর নজরদারি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করে।
এটি সীমান্ত গোয়েন্দা সংস্থার সাথেও জড়িত এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি পর্যবেক্ষণ করে। এনএসআই অন্যান্য সংস্থার সাথে কাজ করে, যেমন ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), এরফলে অধিক্ষেত্রের মধ্যে ওভারল্যাপিং, অতিরিক্ত ব্যবহার এবং আন্তঃসংস্থাগত সংঘাত দেখা দেয়। ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিকীকরণের কারণে এর কার্যকারিতা গুরুতর তদন্তের আওতায় এসেছে।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, সংস্থাটি জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির ওপর কঠোরভাবে মনোযোগ দেয়ার পরিবর্তে রাজনৈতিক বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণ এবং দমন করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
এনএসআই তার ক্ষমতা, সীমাবদ্ধতা ও তদারকি ব্যবস্থা সংজ্ঞায়িত করে এমন একটি বিস্তৃত সংবিধানসম্মত আইন ছাড়াই কাজ করে। এতে স্বাধীন সংসদীয় বা বিচার বিভাগীয় তদারকির অভাব রয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণহীন কর্তৃত্ব এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
কমিশন এনএসআই-কে জোরপূর্বক গুমের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ পেয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও এটিকে নির্যাতন এবং অন্যান্য দুর্ব্যবহারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করে, যেখানে এর কার্যক্রমের অস্বচ্ছতার কারণে ভুক্তভোগীদের আইনি আশ্রয় সীমিত।
যদিও এনএসআই জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং সন্ত্রাসবাদ দমন এবং গোয়েন্দা প্রচেষ্টায় অবদান রেখেছে, তবুও এটি গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। এরমধ্যে রয়েছে রাজনীতিকরণ, স্বচ্ছতার অভাব, অপর্যাপ্ত তদারকি এবং গুরুতর মানবাধিকার উদ্বেগ।
সূত্র : বাসস