আবু সাঈদ হত্যা : অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি বুধবার

মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগে থাকা ৩০ জন আসামির মধ্যে গ্রেফতার ছয়জন আজ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
শহীদ আবু সাঈদ
শহীদ আবু সাঈদ |ইন্টারনেট

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে আসামিপক্ষের পরবর্তী শুনানি আগামীকাল বুধবার।

এই মামলায় গ্রেফতারকৃত ছয় আসামির মধ্যে তিনজনের পক্ষে আজ মঙ্গলবার শুনানি করেন তাদের আইনজীবীরা।

অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে আসামি সুজন চন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী আমিনুল গনী টিটো এবং ইমরান চৌধুরী আকাশের পক্ষে আইনজীবী সালাউদ্দিন রিগ্যান শুনানি করেন।

এই মামলায় পলাতক ২৪ আসামির জন্য রাষ্ট্র নিযুক্ত চারজন আইনজীবীকে শুনানির জন্য নির্ধারণ করে দেন বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। সেই সাথে এই আসামিদের পক্ষে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। আজ প্রসিকিউসন পক্ষে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলামসহ অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগে থাকা ৩০ জন আসামির মধ্যে গ্রেফতার ছয়জন আজ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।

গতকাল প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেন।

আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৩০ জুন ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরো গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। জাজ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দু’টি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

সূত্র : বাসস