জেআইসিতে গুম ও নির্যাতন

হাসিনাসহ ১৩ আসামির বিচার শুরু

বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠন করার আদেশ দেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

আওয়ামী লীগের শাসনামলে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম করে নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

সেই সাথে এই মামলার সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো: গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ অভিযোগ গঠন করার আদেশ দেন।

এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ এনে প্রসিকিউশন পক্ষে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেফতার তিন সেনা কর্মকর্তাসহ আসামিদের নির্দোষ দাবি করে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চান তাদের আইনজীবীরা।

আসামিদের মধ্যে গ্রেফতার যে তিন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়, তারা হলেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো: সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

শেখ হাসিনা ও তার উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ এ মামলায় পলাতক অপর আসামিরা হলেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো: আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) মো: সাইফুল আবেদিন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো: সাইফুল আলম, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী ও মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর গত ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে ১৫ জন কর্মরত সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনী। আর্মি অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো: হাকিমুজ্জামান বলেন, দু’টি মামলার ৩০ জন আসামির মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। তাদের মধ্যে নয়জন অবসরপ্রাপ্ত, একজন এলপিআরে গেছেন এবং বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৫ জন।

ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব মো: হাফিজ সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৪১(১) এর ক্ষমতাবলে এবং দি প্রিজন অ্যাক্ট এর ধারা ৩ এর বি অনুসারে ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত এমইএস বিল্ডিং নং-৫৪-কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। গ্রেফতার সেনা কর্মকর্তাদের পরবর্তীতে এই কারাগারে রাখা হয়।

সূত্র : বাসস