চীনে পাচারের অভিযোগে মানব পাচারকারী চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার

বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো: মাহবুব আলম।

নিজস্ব প্রতিবেদক
গ্রেফতার ৪ পাচারকারী
গ্রেফতার ৪ পাচারকারী |নয়া দিগন্ত

চীনে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীদের পাচার করে যৌনপল্লীতে বিক্রির অভিযোগে চার সদস্যের একটি মানব পাচারকারী চক্রকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৪।

সম্প্রতি চীন থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণীর দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আজ বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো: মাহবুব আলম।

গ্রেফতার পাচারকারীরা হলেন- চক্রের মূলহোতা আব্বাস মোল্লা (৩৬), জাহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু (৩১), মিনার সরদার (৩০) ও মোহাম্মদ রিপন শেখ (২৮)।

র‌্যাব জানায়, ভুক্তভোগী তরুণী পিরোজপুরের একটি বিউটি পার্লারে চাকরি করতেন। এ বছরের মার্চে ফেসবুকে চীনে উচ্চ বেতনের চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে বাবু নামে এক ব্যক্তির সাথে তিনি যোগাযোগ করেন। পরে বাবুর পরামর্শে তার বোনসহ ঢাকায় আসেন। চক্রের সদস্যরা তাদের পাসপোর্ট ও ভিসার কাজ সম্পন্ন করে ১৩ জুন চীনে পাঠায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে বিউটি পার্লারে চাকরি না দিয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়া হয়।

ভুক্তভোগী তরুণী জানান, চক্রের সদস্যরা অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল ও শারীরিক নির্যাতন চালাত। পরে কৌশলে পালিয়ে তিনি দেশে ফেরেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর শাহ আলী থানায় মামলা দায়ের করেন।

লে. কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, ‘ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে ছায়াতদন্ত শুরু করি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের মূলহোতা ও সহযোগীদের অবস্থান শনাক্ত করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি আরো জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিরা স্বীকার করেছে, তারা প্রায় ১০ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তরুণীদের চাকরি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করে আসছিল।

র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী, চক্রটি পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন, এনআইডি ও ভিসা প্রসেসিংয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে নথিপত্র তৈরি করত। অন্তত ২০ জন নারীকে চীনে পাচার করা হয়েছে বলে র‌্যাবের কাছে তথ্য রয়েছে, তবে প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে।

গ্রেফতার চারজন ছাড়াও দেশের আরো কয়েকজন এবং কিছু চীনা নাগরিক এই চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।