নতুন মামলায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র কিরণ রিমান্ডে, গ্রেফতার পলক-আতিক

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমান শুনানি শেষে পলক ও আতিককে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন এবং কিরণের তিন দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
আসাদুর রহমান কিরণ, জুনাইদ আহমেদ পলক ও আতিকুল ইসলাম
আসাদুর রহমান কিরণ, জুনাইদ আহমেদ পলক ও আতিকুল ইসলাম |সংগৃহীত

জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা পৃথক মামলায় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণের বিরুদ্ধে আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমান শুনানি শেষে পলক ও আতিককে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন এবং কিরণের তিন দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দেন। গত ৪ জুন কিরণের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়।

আদালত পলক এবং আতিকের উপস্থিতিতে শুনানির দিন বুধবার ধার্য করেন। এদিকে ছয় দফা পিছিয়ে কিরণের রিমান্ড শুনানির দিনও বুধবার ধার্য করা হয়। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় শুনানি শুরু হয়। প্রথমে পলককে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর আতিক ও কিরণের মামলায় শুনানি শুরু হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘১৮ জুলাই সারা বাংলাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করা হয়। ছাত্রদের ডাকে সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসে। ওই দিন মুগ্ধ, ফাইয়াজসহ ৪৮ জনকে হত্যা করা হয়। এই কিরণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ সাথে নিয়ে উত্তরা এলাকায় হামলা চালায়। নিজে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করে। এই আসামি সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তাকে রিমান্ডে নিলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটিত হবে। তার সর্বোচ্চ সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করছি।’

কিরণের পক্ষে মোরশেদ হোসেন শাহীন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘গত ৪ জুন রিমান্ড আবেদন। ১১৭ দিন পর শুনানি হচ্ছে। তাহলে দেখেন রিমান্ডের যৌক্তিকতা বা গুরুত্বটা কেমন। আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নই। ভারপ্রাপ্ত মেয়র হওয়াটাই আমার জন্য কাল হয়েছে। শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি।’

এ সময় উত্তরা পূর্ব থানার আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই আতিকুর রহমান বলেন, ‘এ আসামিকে আদালতে হাজির করতে ছয় বার প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়। অনিবার্য কারণে তাকে আদালতে আনা হয়নি। জেল সুপারকে এর কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। আজ আদালতে হাজির করা হয়েছে।’

পরে আদালত কিরণের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন এবং আতিককে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

আতিক এবং কিরণের মামলার বিবরণী থেকে, আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই ইশতিয়াক মাহমুদ নামে এক ব্যবসায়ীসহ অন্যরা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। উত্তরা পূর্ব থানাধীন ৪ নম্বর সেক্টরস্থ আজমপুর নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাই স্কুলের সামনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। ইসতিয়াকের পেটে গুলি লাগে। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

এ ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবর ইশতিয়াক মাহমুদ পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনের নাম উল্লেখসহ মামলা দায়ের করেন।

হোসেন হত্যা মামলার বিবরণী থেকে, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিতে মারা যান ট্রাকচালক হোসেন। এ ঘটনায় তার মা রিনা বেগম ৩১ আগস্ট মামলা দায়ের করেন।