বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার কমনওয়েলথ মহাসচিবের

আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি হলো অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করা। যাতে বাংলাদেশের জনগণ কমনওয়েলথকে বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে গণ্য করতে পারে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বোচওয়ে
কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বোচওয়ে |বাসস

কমনওয়েলথ মহাসচিব শার্লি বোচওয়ে বলেছেন, তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনদের সাথে কথা বলছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে ও ভবিষ্যতে কিভাবে কমনওয়েলথ বাংলাদেশের মানুষকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করছেন।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সরকারি সফরে আসা শার্লি বোচওয়ে আরো বলেন, বাংলাদেশের প্রতি কমনওয়েলথ পরিবার দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি ঢাকাস্থ হাইকমিশনারদের সাথে বৈঠকে কমনওয়েলথ সনদের আলোকে বাংলাদেশকে সমর্থন আরো জোরদার করা নিয়ে আলোচনা করেন।

মহাসচিব সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ভেরিফায়েড পেইজে লিখেছেন, ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনারদের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের উপকারে কমনওয়েলথের ভূমিকা বাড়ানোর বিষয়ে সফল আলোচনা হয়েছে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা, ব্রিটেনের হাইকমিশনার সারাহ কুক, কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ শুহাদা ওসমান, পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার, শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপালা উইরাক্কোডি এবং মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিউনিন রশীদ।

শার্লি বোচওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সাথেও সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবহিত করার জন্য সিইসিকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

কমনওয়েথ মহাসচিব বলেন, নির্বাচনে বাংলাদেশী নাগরিদের পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কমনওয়েলথের করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সাথেও বৈঠক করেন। বোচওয়ে বলেন, কমনওয়েলথ সনদ অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে তাদের মতামত শোনা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রিফাত আহমেদের সাথে সাক্ষাতে আইনশৃঙ্খলা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ব্যবস্থায় বিচার বিভাগের ভূমিকায় তার নেয়া উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

তিনি বাংলাদেশের বিচারিক সক্ষমতা বাড়ানো এবং ভালো অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার মাধ্যমে সহায়তা অব্যাহত রাখতে কমনওয়েলথের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশে সফরে তার প্রথম বৈঠক ছিল যুবনেতাদের সাথে। মহাসচিব বলেন, তাদের চিন্তাচেতনা এবং গণতন্ত্রের প্রতি প্রত্যাশা আমাকে মুগ্ধ করেছে। ন্যায়সঙ্গত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়তে কমনওয়েলথ বাংলাদেশের তরুণদের পাশে থাকবে।

মহাসচিব কমনওয়েলথের নতুন কৌশলগত পরিকল্পনার বিষয়েও অংশীজনদের সাথে আলোচনা করেন। এই পরিকল্পনায় গণতন্ত্রকে প্রধান স্তম্ভ হিসেবে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের আশা পূরণে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা সবচেয়ে কার্যকর করার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন।

চারদিনের এই সফরের অংশ হিসেবে আজ সোমবার তিনি অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। তাদের আলোচনার বিষয় হবে গণতন্ত্র, শাসন, স্থিতিশীলতা ও জাতীয় অগ্রগতি বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর উপায়।

সফরের আগে মহাসচিব বাংলাদেশকে কমনওয়েলথের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি স্বাধীনতার পর থেকে দুই পক্ষের স্থায়ী অংশীদারিত্বের কথাও স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, কমনওয়েলথ এবং বাংলাদেশের মধ্যে দৃঢ় অংশীদারিত্ব রয়েছে। এটি আসন্ন নির্বাচনের সময় আরো গুরুত্বপূর্ণ।

মহাসচিব বলেন, আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি হলো অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করা। যাতে বাংলাদেশের জনগণ কমনওয়েলথকে বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে গণ্য করতে পারে।

সম্প্রতি কমনওয়েলথের নির্বাচন পূর্বমূল্যায়ন দলের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফর করেন। তারা সব রাজনৈতিক দলের সাথে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের পূর্বপরিস্থিতি যাচাই করেছেন।

সূত্র : বাসস