বগুড়ায় সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মিলন কারাগারে

পুলিশ বিভাগে আওয়ামী ক্যাডার হিসেবে পরিচিতি মিলন চাকরিজীবনে জয়পুরহাট, দিনাজপুর ও মেহেরপুর জেলার পুলিশ সুপারসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকালে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন যা দুদক তদন্ত করছে।

আবুল কালাম আজাদ, বগুড়া অফিস

বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ হামিদুল আলম মিলনকে প্রতারণা মামলায় গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠিয়েছেন বগুড়ার একটি আদালত।

সোমবার দুপুরে তিনি বগুড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এ হাজির হয়ে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতারণা মামলায় জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক মেহেদী হাসান তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

হামিদুল আলম মিলন সারিয়াকান্দী উপজেলার বাসিন্দা এবং প্রায় আড়াই দশকের পুলিশ ক্যারিয়ারে তিনি জেলা, মহানগর, রেঞ্জ ও সদর দপ্তরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। তবে তার কর্মজীবনে বিতর্কের ছায়া ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি বগুড়ায় এসপি মিলন ও ডিআইজি মিলন নামে পরিচিত।

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। কারণ হিসেবে জানানো হয়-২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে থাকলেও তিনি ২০২৪ সালের একতরফা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দী–- সোনাতলা) আসনে তার স্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাদী আলম লিপির সংসদ নির্বাচনী প্রচারণায় সরাসরি অংশ নেন। তিনি স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণেও সক্রিয় ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিসিপ্লিন উইং তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বহিষ্কার না করে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়।

সাবেক এ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নতুন করে প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার ও আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশকে তার ‘বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা’ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

পুলিশ বিভাগে আওয়ামী ক্যাডার হিসেবে পরিচিতি মিলন চাকরিজীবনে জয়পুরহাট, দিনাজপুর ও মেহেরপুর জেলার পুলিশ সুপারসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকালে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন যা দুদক তদন্ত করছে। নিজ এলাকা সারিয়াকান্দি উপজেলা ছাড়াও তিনি বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা, মালতিনগরসহ জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় স্থাবর অস্থাবর সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। তিনি ২০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার হিসেবে ২০০০ সালে চাকরিতে যোগ দেন।

বগুড়ার সিনিয়র জেল সুপার দুপুরে জেলা কারাগারে নেয়ার কথা নিশ্চিত করেন।