বায়ুদূষণে ঢাকার লক্ষ্যণীয় অবনতি

এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বায়ুদূষণে ঢাকার লক্ষ্যণীয় অবনতি
বায়ুদূষণে ঢাকার লক্ষ্যণীয় অবনতি

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা টানা বৃষ্টিপাতের মধ্যে নিয়মিত ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে ছিল ঢাকার বাতাসের মান। তবে গত দুদিন হলো ঢাকায় বৃষ্টির প্রবণতা কমেছে, সেই সাথে উঠছে রোদ। রোদ বের হওয়ার সাথে সাথে ফের পুরনো চরিত্রে ফিরেছে রাজধানীর বায়ুদূষণ।

রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ৯টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৪৭। বিশ্বের বিভিন্ন শহরের বাতাসের মান নির্ণয়কারী সংস্থা আইকিউএয়ারের শ্রেণি অনুযায়ী এই স্কোর ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’। তবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণির খুবই কাছাকাছি ঢাকার স্কোর।

সাধারণত বায়ুদূষণের সূচক (এইকিআই) শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’।

একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়।

তবে, কণা দূষণের এই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।

অর্থাৎ, ‘অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণি থেকে ঢাকার বাতাস রয়েছে মাত্র চার পয়েন্ট দূরে।

এই সময়ে ১৮১ স্কোর নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর ছিল চিলির সান্তিয়াগো, আর ১৭৭ নিয়ে তার পরেই ছিল পাকিস্তানের লাহোর। এ ছাড়া ১৭৭, ১৭৪ ও ১৭২ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষণে শীর্ষ পাঁচ শহরের তালিকায় আরো ছিল যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, কঙ্গোর কিনশাসা ও যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপলিস। এই তালিকায় আজ ঢাকা উঠে এসেছে নবম স্থানে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।

ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।