নীলাভ সমুদ্রের তলদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্যানেল আলোচনা আয়োজন করে ইতিহাস গড়ল ওরিডু মালদ্বীপ। ২০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি এ আয়োজন করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখায়।
এই প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক উদ্যোগে ২০ জন অংশগ্রহণকারী সম্পূর্ণ পানির নিচে নেমে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনায় মালদ্বীপ সরকারের প্রতিনিধি, মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স এবং ওরিডু মালদ্বীপের শীর্ষ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। প্রযুক্তি, টেকসই উন্নয়ন ও জাতীয় সহনশীলতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় হয় পুরোপুরি পানির নিচেই।
পাঁচজন বক্তা বিশেষ প্রযুক্তি-সজ্জিত ডাইভিং মাস্ক ব্যবহার করে দুই মিনিট করে বক্তব্য রাখেন। এসব মাস্কে মাইক্রোফোন এবং পানির নিচে স্পিকার ও উপকূলের অডিও সিস্টেমের সাথে যুক্ত ছিল। ফলে সমুদ্রতলের দর্শক ও স্থলভাগের দর্শনার্থীরা স্পষ্টভাবে আলোচনাটি শুনতে পারেন।
প্যানেলে ছিলেন:
- মৎস্য ও সামুদ্রিক সম্পদ মন্ত্রী আহমেদ সিয়াম।
- ওরিডু মালদ্বীপের সিইও খালিদ আল-হামাদি।
- মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সালীম।
- ওরিডু মালদ্বীপের ডিরেক্টর অব অপারেশনস শাবীন আলী।
- ওরিডু মালদ্বীপের সিনিয়র ম্যানেজার অব ট্রান্সমিশন আফশীন মোহাম্মদ।
এছাড়া সমুদ্রতলে উপস্থিত ছিলেন এমএমপিআরসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিরুই ইব্রাহিমসহ ওরিডু মালদ্বীপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিদেশি অতিথিরা। অনুষ্ঠানটি বাহা ফুলহাদুর সামুদ্রিক এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনার সময় সরাসরি ভিডিও কলে যুক্ত হন ওরিডু গ্রুপের সিইও আজিজ আলুথমান ফাখরু ও ওরিডু মালদ্বীপের চেয়ারপারসন ফাতিমা সুলতান আল-কুয়ারি। এটি প্রযুক্তির বৈশ্বিক শক্তি এবং সীমান্ত পেরিয়ে সংযোগ স্থাপনের সক্ষমতা তুলে ধরে।

ওরিডু মালদ্বীপের সিইও খালিদ আল-হামাদি বলেন, “এটি শুধু একটি রেকর্ড ভাঙার আয়োজন নয়। এটি আমাদের প্রতিশ্রুতির জীবন্ত উদাহরণ সীমাহীন উদ্ভাবন, শক্তিশালী সংযোগ এবং সাহসী ভাবনাকে নতুন গভীরতায় নিয়ে যাওয়ার গল্প।”
বাহা ফুলহাদুর সমুদ্রতল হিসেবে নির্বাচিত হয় এর অনন্য সামুদ্রিক পরিবেশের জন্য। এখানে ৯৫ শতাংশ প্রবাল অক্ষত রয়েছে। এ অঞ্চলের প্রধান আকর্ষণ ৮০০ বছরের প্রাচীন ‘লেটুস কোরাল’, যা বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত প্রাকৃতিক বিস্ময় ও পরিবেশগত সহনশীলতার প্রতীক।
গিনেস রেকর্ড অর্জনের এই সাফল্য আসে দীর্ঘ প্রস্তুতি, মাসের পর মাস পরিকল্পনা ও বহুবারের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের পর। পানির নিচে যোগাযোগ ব্যবস্থা, ডাইভারদের নিরাপত্তা ও পরিবেশ রক্ষাসহ প্রতিটি বিষয় নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা হয়।
নানা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিশেষ সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় এবং অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দিতে বারবার রিহার্সাল করা হয়। প্রথম অফিশিয়াল চেষ্টাতেই সফল হওয়া প্রমাণ করে ওরিডু মালদ্বীপ টিম ও সহযোগীদের নিবেদন, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা।
এই মাইলফলক অর্জন শুধু ওরিডু মালদ্বীপ নয়, গোটা দেশের জন্যও গৌরবের। এটি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরল মালদ্বীপের সামুদ্রিক সৌন্দর্য এবং প্রযুক্তি দিয়ে ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা।
২০ বছর পূর্তির উদযাপন উপলক্ষে ওরিডু মালদ্বীপ ভবিষ্যতে আরও সাহসী ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।