মধ্য এশিয়ান ক্লাবগুলোর বিপক্ষে আবাহনীর জয়ের কোনো রেকর্ড নেই। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) জাতীয় স্টেডিয়ামে এই অঞ্চলের ক্লাব মুরাস এফসির সামনে পড়ে তারা। কিরগিজস্তান ফুটবলের নতুন এই শক্তি প্রথম ১০ মিনিটে ঝড় বইয়ে দেয়। তবে আবাহনীর গোলরক্ষক মিতুল মারমা এবং ডিফেন্ডারদের প্রতিরোধে রক্ষা। কিন্তু বিরতির পর বাংলাদেশী ক্লাবটির খেলোয়াড়দের ভুলে গোল আদায় করে ২-০ তে জয় তুলে নেয় মুরাস। তাতে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্লে-অফ জিতে গ্রুপ পর্বে উঠলো কিরগিজ ক্লাবটি। আর হেরে বিদায় আবাহনীর।
৬ মিনিটে পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে মুরাসের ওলে মারচুকের গোল মিস। ১০ মিনিটে চাবেল গোমেজের শট রুখে দেন মিতুল মারমা। এরপর পরই আলাই গুলভ মাসকাতের শটেও বাধা তিনি। শুরুর এই ধাক্কা সামলে নিজেদের গুছিয়ে নেয় আবাহনী। তাদের আক্রমণের মূল ভরসা ছিলেন মোহামেডান থেকে আসা সোলেমান দিয়াবাতে এবং পুলিশ থেকে আসা স্ট্রাইকার আল আমিন। এই দুইজনই ছিলেন কিরগিজ ক্লাবের রক্ষণভাগের আতঙ্ক।
১৮ মিনিটে সোলেমানের চিপ অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রস্ট হয়। অবশ্য ২৩ মিনিটে মিতুল মারমার অসামান্য অবদানেই গোলের হাত থেকে রক্ষা। চাবেল গোমেজের শট আবাহনীর অধিনায়ক আসাদুজ্জামান বাবলুর গায়ে লেগে গোলে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল। মিতুল কর্নার করেন তা। ২৩ মিনিটে থ্রু পাস থেকে বল পেয়ে ফাঁকায় ঢুকে পড়েন স্ট্রাইকার আল আমিন। তবে তার শট মুরাসের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়।
৩১ মিনিটে সোলেমান দিয়াবাতের ক্রসে ইব্রাহিমের শট বাইরে যায়। ৪১ মিনিটে ইব্রাহিম ও বসুন্ধরা কিংস থেকে আসা শেখ মোরসালিন গোল করতে ব্যর্থ হলে পুরো প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য।
৪৮ মিনিটে গোল আদায় মুরাসের। বাম দিক থেকে আসা ক্রসে আবাহনীর ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে নেয়া আতাই জুমাসেভের হেডে পরাস্ত আবাহনীর জাতীয় দলের গোলরক্ষক মিতুল।
পিছিয়ে পড়া পর কোচ মারুফুল হক তুলে নেন আল আমিন, ইব্রাহিম ও শাহ কাজেমকে। এতে বিকল্প হিসেবে নামা পাপন সিং, জাফর, এনামুল গাজী, মিরাজুলরা কিছুই করতে পারেননি। অবশ্য ৭২ মিনিটে মোরসালিনের শট বিপক্ষ কিপার কর্নার করলে ম্যাচে ফেরা হয়নি। এরপর বাংলাদেশী ক্লাবটির সমতা আনার শেষ চেষ্টা ধূলিসাৎ হয় ৯২ মিনিটে ডিফেন্ডার কামরুলের ভুলে। তার কাছ থেকে বল কেড়ে বক্সে ঢুকে নিখুঁত শটে মুরাসের জয় নিশ্চিত করেন আতাই জুমাসেভ।
ম্যাচ শেষে মুরাসের কোচ সার্গেই পুচকভ জানান, আবাহনী অনেক ভালো দল। তবে তারা এখন লিগ ম্যাচের বাইরে। তাই তারা ভালো খেলতে পারেনি। তাদের স্ট্রাইকার সোলেমান দিয়াবাতেও দুর্দান্ত খেলেছে।
আবাহনীর কোচ মারুফুল হকের মতে, প্রথমার্ধে আমরা সঠিক ট্র্যাকেই ছিলাম, কিন্তু বিরতির পর ক্লান্ত আল আমিন তার জোনে একটি আক্রমণ রুখতে ব্যর্থ হয়েছেন। এতে যে ক্রস হয়েছে তাতেই গোল হজম। অথচ আমাদের পরিকল্পনাই ছিল মুরাসকে কোনো ক্রস করতে দেবো না। কারণ, এটা তাদের অন্যতম অস্ত্র।
তিনি আরো বলেন, আমার রিজার্ভ বেঞ্চও পোক্ত ছিল না। তা না হলে এই ম্যাচে জেতা সম্ভব ছিল।