অগ্নিপরীক্ষা বাংলাদেশের, প্রতিপক্ষ হংকং

সিঙ্গাপুরের কাছে হেরে যাওয়ায় অবশ্য বাংলাদেশের এশিয়ান কাপের পথ কঠিন হয়ে গেছে। কাগজ-কলমে যে সম্ভাবনাটুকু রয়েছে, তা বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের কোনো বিকল্প নেই।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশ দলের
জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বাংলাদেশ দলের |ইন্টারনেট

বাংলাদেশের অগ্নিপরীক্ষা আজ। হংকংয়ের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে রাতে মাঠে নামছেন জামাল ভূঁইয়ারা। এশিয়ান কাপের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার শেষ সুযোগ এই ম্যাচটা। জয় ছাড়া যেখানে কোনো বিকল্প নেই।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে এটি ঘরের মাঠে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ম্যাচ। এর আগে, সিঙ্গাপুরের সাথে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলে দল। তবে সেই ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায় হামজারা।

তবে হতাশাজনক সেই হারের দুঃখ ভুলে এবার ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যেই রাত ৮টায় ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে হংকংয়ের মুখোমুখি হবে হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা।

সিঙ্গাপুরের কাছে হেরে যাওয়ায় অবশ্য বাংলাদেশের এশিয়ান কাপের পথ কঠিন হয়ে গেছে। কাগজ-কলমে যে সম্ভাবনাটুকু রয়েছে, তা বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের কোনো বিকল্প নেই।

এদিকে বাছাইপর্বে সি’ গ্রুপের টেবিলের শীর্ষে থাকা সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের পয়েন্ট সমান ৪ করে। এখন পর্যন্ত টেবিলের চূড়ায় থাকার লড়াইটাও চলছে এই দুই দলের মাঝে। ভারত ও বাংলাদেশের পয়েন্ট মাত্র ১ করে।

এদিকে হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের কোনো গল্প নেই বাংলাদেশের। একে অপরের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেছে ৪টি। যেখানে তিনটিতে হারের বিপরীতে একবার ড্র করে লাল সবুজেরা।

১৯৭৫ সালে মারদেকার কাপে হংকং ৯-১ গোলে হারায় বাংলাদেশকে। তবে ২০০৩ সালে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ২-২ ড্র করেছিল দু’দল। ২০০৬ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দুই দেখায় ১-০ ও ২-০ ব্যবধানে হারে লাল-সবুজরা।

হংকংয়ের এই দলটাও যেন বাংলাদেশের মতোই। স্কোয়াডে আছে প্রবাসীদের আধিপত্য। দলের ২৫ জনের পাঁচজনই ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত। ফুটবলার আছেন জাপান, ক্যামেরুন, জার্মানি থেকেও।

অন্যদিকে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়েও হংকংয়ের থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে ৩৮ ধাপ। হংকং আছে ১৪৬তম অবস্থানে, বাংলাদেশ ১৮৪’তে। তবে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার দুর্ভাবনা বাড়িয়েছে চোটের ছোবল।

মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সুমন রেজা নেই আগে থেকেই। চোট থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তপু বর্মন ও ফরোয়ার্ড আল আমিন। এদিকে কানাডা থেকে ঢাকায় এসে সামিত সোম অনুশীলন করেছেন মাত্র এক সেশন।

সবকিছু মিলিয়ে পরিস্থিতি খুব একটা স্বস্তিকর নয় স্বাগতিকদের জন্য। এদিকে হয়নি ঠিকঠাক প্রস্তুতিও। ইউরোপের কোনো দলের সাথে খেলা হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত নেপালের সাথে খেলে জামাল ভূঁইয়ারা।

সেখানেও ছিল না ভালো স্মৃতি। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়। অন্যটা নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মাঠেই গড়ায়নি। যদিও ঘরের মাঠ আর চেনা দর্শকের সামনে খেলাটাই হবে দলের জন্য বড় অনুপ্রেরণা।

এদিকে এই ম্যাচ থেকে পূর্ণ তিন পয়েন্টেই চোখ বাংলাদেশ অধিনায়কের। জামাল ভুঁইয়া বলেছেন, ‘ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে চাই। ডু অর ডাই হলেও, আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। আমাদের লক্ষ্য তিন পয়েন্ট অর্জন করা।’

আজ হংকং ম্যাচের পর বাংলাদেশের হোম ম্যাচ থাকবে আর একটি। ভারতের বিপক্ষে সেই ম্যাচের আগে আজ জয় তুলে নিতে চাইবেন জামাল-হামজারা। তা করতে পারলে বাংলাদেশের এশিয়ান কাপে খেলার স্বপ্নটা টিকে থাকবে।

হেরে গেলে তো বটেই, ড্র করে বসলেও কাগজে কলমে সুযোগ থাকবে বটে। কিন্তু স্বপ্নটা আদতে শেষই হয়ে যাবে। ফলে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার অপেক্ষা আরো বাড়তে পারে টাইগারদের।