নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের নেপথ্যে অন্যতম নায়ক ছিলেন গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুমা। তবুও গত কয়েকদিন ধরে তার পিএসজি ছাড়ার গুঞ্জন জোরালো হয়ে উঠেছিল। এ সময়ই কোচ লুইস এনরিকে নতুন গোলরক্ষককে দলে ভেড়ান, যা দোন্নারুমার সাথে তার দূরত্বের ইঙ্গিত দেয়। নতুন ঘোষিত স্কোয়াডে জায়গা হয়নি এই ইতালিয়ান তারকার। অবশেষে হতাশা ও ভাঙা হৃদয়ে ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন তিনি।
ইনস্টাগ্রামে দেয়া এক আবেগঘন বার্তায় দোন্নারুমা লিখেছেন, ‘এখানে আসার প্রথম দিন থেকেই মাঠে ও মাঠের বাইরে পিএসজির জন্য এবং নিজের স্বপ্ন পূরণে আমি সর্বোচ্চটা দিয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, কেউ একজন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি আর এই দলের সঙ্গী হবো না, হবো না সফলতার সঙ্গীও। এ সিদ্ধান্ত আমাকে ভীষণভাবে হতাশ করেছে।’
বুধবার রাতে উয়েফা সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী পিএসজি মুখোমুখি হবে ইউরোপা লিগের চ্যাম্পিয়ন টটেনহ্যামের। এই ম্যাচের স্কোয়াড থেকে দোন্নারুমাকে বাদ দেয়ার পর কোচ লুইস এনরিকে বলেন, ‘দোন্নারুমা বিশ্বের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। পাশাপাশি তিনি একজন চমৎকার মানুষও। তবে এটাই শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলারদের বাস্তবতা। এই কঠিন সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ দায় আমার। দলের জন্য যেরকম গোলরক্ষক প্রয়োজন, তা নিশ্চিত করতেই আমাকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’
গত শনিবার পিএসজি ফরাসি ক্লাব লিলের গোলরক্ষক লুকাস শ্যাভালিয়েরকে দলে ভিড়িয়েছে। বোনাসসহ সব খরচ মিলিয়ে তার মোট মূল্য ধরা হয়েছে ৬৪ মিলিয়ন ডলার। এমনকি এনরিকে তাকে প্রধান গোলরক্ষক হিসেবেই কিনে নিয়েছেন বলে সূত্রমতে নিশ্চিত করেছে ইএসপিএন। কোচ লুইস এনরিকে শ্যাভালিয়েরকে প্রধান গোলরক্ষক হিসেবেই নিয়েছেন।
একই সময়ে পিএসজি দোন্নারুমাসহ দুই শীর্ষ গোলরক্ষককে একসাথে দলে রাখার আগ্রহ দেখায়নি। এই খবরের পর থেকে চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ইন্টার মিলানের মতো ক্লাবগুলো দোন্নারুমার এজেন্ট এনজো রাইওলার সাথে যোগাযোগ শুরু করেছে।
পিএসজি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে দোন্নারুমা লিখেছেন, ‘আশা করি আমি পার্ক দ্য প্রিন্সেসে একবার আরো দর্শকদের শেষ বিদায় জানাতে পারব। যদি সেটা সম্ভব না হয়, আপনারা যে সমর্থন দেখিয়েছেন, তা আমার কাছে কতটা মূল্যবান, তা আমি কখনও ভুলব না। আপনারা আমাকে অনেক জাদুকরী রাত উপহার দিয়েছেন এবং এই জায়গাটাকে আমি ঘরের মতো অনুভব করেছি। আমার সতীর্থরা যাদের সাথে আমি লড়াই করেছি, হাসি ভাগ করেছি এবং অসংখ্য মুহূর্ত কাটিয়েছি, তারা সবসময় আমার দ্বিতীয় পরিবার হিসেবে থাকবে।’
ইএসপিএনের তথ্য অনুযায়ী, মেয়াদের আরো এক বছর বাকি থাকলেও দোন্নারুমা পিএসজির সাথে নতুন চুক্তির আশা করেছিলেন। তবে উভয়পক্ষ একমত হতে পারেনি। তিনি ইতোমধ্যেই পিএসজির অন্যতম সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকধারী (মাসে সাড়ে আট লাখ ইউরো) ছিলেন এবং এবার সেটি আরো বাড়াতে চেয়েছিলেন, যা ফরাসি জায়ান্টরা মেনে নেনি। পাশাপাশি কোচ লুইস এনরিক এমন গোলরক্ষক চাইছিলেন, যিনি পা দিয়ে বল খেলার ক্ষেত্রেও সমান দক্ষ। এই গুণাবলীই তিনি নতুন গোলরক্ষক লুকাসের মাঝেও খুঁজে পান।