৮৩ মিনিটের গোলে আজারবাইজানের কাছে বাংলাদেশের হার

টানা চার আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতলো কয়েকবছর আগে আর্মেনিয়ার সাথে যুদ্ধ করা দেশটি।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
আজারবাইজানের কাছে ১-২ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ
আজারবাইজানের কাছে ১-২ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ |ছবি : নয়া দিগন্ত

আন্তর্জাতিক ম্যাচে দারুণ একটি বছর কাটানো বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের শেষটা জয়ে হয়নি। জয়তো দূরের কথা, ড্রও করতে পারেননি লাল-সবুজ মেয়েরা।

মঙ্গলবার জাতীয় স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় ফুটবলে আজারবাইজানের কাছে ১-২ গোলে হার। এতে টানা চার ফিফা প্রীতি ম্যাচে পরাজিত হলো আফঈদা খন্দকার প্রান্তির দল।

আজারবাইজান ও মালয়েশিয়ার কাছে হারের আগে বাংলাদেশ দল থাইল্যান্ড সফরে দুই ম্যাচেই পরাজিত হয়েছিল।

২৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ০-১ গোলে হেরে যাওয়া ম্যাচের একাদশ থেকে মঙ্গলবার তিন ফুটবলার বদল। ডিফেন্ডার কোহাতি কিসকু, মিডফিল্ডার মুনকি আক্তার এবং স্ট্রাইকার সুলতানা বাদ একাদশ থেকে। তাদের বদলে নেয়া হয় ডিফেন্ডার নবীরন খাতুন, মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী এবং স্ট্রাইকার তহুরা খাতুনকে।

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে ৭৪-এ অবস্থান আজারবাইজানের। আগের ম্যাচে তারা ২-০ গোলে জিতেছিল মালয়েশিয়ার বিপক্ষে। আজ জাতীয় স্টেডিয়ামে আজারবাইজানের বিপক্ষে ম্যাচের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ইউরোপের কোনো দলের বিপক্ষে খেলা বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের। যাদের ফিফা র‌্যাংকিং ১০৪।

দীর্ঘদেহ আর শক্তপোক্ত গড়নের সুবিধা নিয়েই আফঈদা খন্দকার প্রান্তিদের মুখোমুখি হয় মধ্য এশিয়ান দেশটির খেলোয়াড়রা। এই লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ তিনজাতি ফুটবলে ১৯ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে। বাম দিক থেকে আসা ক্রসে হেড করেন অধিনায়ক জাফরজাদা শিভিঞ্জ। আজারবাইজানের এই স্ট্রাইকারের নিখুঁত হেডে কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষক রূপনা চাকমার। অবশ্য ডিফেন্ডাররা কোনো মার্কিংই করেননি গোলদাতাকে। ফলে ফাঁকায় হেড করে দলকে এগিয়ে নেন জাফরজাদা।

অবশ্য এর আগে তহুরা খাতুনের পাসিং সেন্সের অভাবে বাংলাদেশ গোলের চান্স তৈরি করতে পারেনি। তিনি ছোট শামসুন্নাহারকে থ্রু পাস না দিয়ে আড়াআড়ি পাস দিয়ে নষ্ট করেন সুযোগ। অবশ্য পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ এরপর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালাতে থাকে।

৩২ মিনিটে ঋতুপর্নার থ্রু পাস থেকে মনিকা চাকমা গোলরক্ষককে একা পেলে বাম পায়ে শটও নেন। তা রুখে দেন আজারবাইজানের গোলরক্ষক শারীপোভা আইতাজ। তবে ৩৫ মিনিটে অর হতাশা নয়। স্বপ্না রানীর কর্নার থেকে আসা বল ক্লিয়ার করেন গোলরক্ষক আইতাজ। সে বল বক্সের সামনে পড়ে মারিয়া মান্ডার সামনে। সেখান থেকে মারিয়ার বাম পায়ের ভলির বল সোজা আশ্রয় নেয় ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ান দলটির জালে।

১-১ এ প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পর ৫২ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। ঋতুপর্নার ক্রসে মনিকার হেড পোস্ট ঘেঁষে গেলে উল্লাসে মেতে ওঠা হয়নি স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজার দশেক দর্শকের।

এই ম্যাচে কোচ পিটার বাটলার আর হাইলাইন ডিফেন্স কৌশলে খেলাননি দলকে। অবশ্য বাংলাদেশ দলের মিডফিল্ডাররা যদি মাঝ মাঠে আক্রমণের সময় ভুল পাসগুলো না দিতেন তাহলে আরো গোলের সুযোগ হতো।

এরপরও কাউন্টার অ্যাটাকে খেলে বাংলাদেশ গোলের সুযোগ তৈরি করে। ৮৩ মিনিটে তেমনই একটি কাউন্টার অ্যাটাক ব্যর্থ হওয়ার পরপরই সেই বলে গোল খেলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হারতে হয় বাংলাদেশকে। আকার ইলিজের ক্রসে অরক্ষিত মানইয়া এসরা ডান পায়ের শটে জয় এনে দেন আজারবাইজানকে। ফলে টানা চার আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতলো কয়েকবছর আগে আর্মেনিয়ার সাথে যুদ্ধ করা দেশটি।