ইতিহাস গড়লেন উসমান দেম্বেলে। নাম লেখালেন সেরাদের সেরার তালিকায়। যেখানে এতোদিন উচ্চারিত হতো মেসি-রোনালদোদের নাম, সেখানে নিজের নামটাও লিখে দিয়েছেন এই ফরাসি সুপারস্টার।
প্যারিসে সোমবার রাতে আলো ঝলমলে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেম্বেলের হাতে তোলে দেয়া হয় বহুল আকাঙ্ক্ষিত ট্রফিটা। ‘ঘরের মঞ্চে’ এমন ইতিহাস গড়ার মুহূর্ত তাকে এনে দিয়েছে ভিন্ন রোমাঞ্চ।
থিয়াত্র দ্যু শাতলের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রোনালদিনহো খাম খুলে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করার আগেই দর্শকরা স্লোগান তুলেন দেম্বেলের নামে। এমন মুহূর্ত নিশ্চয়ই সবার জীবনে আসে না।
‘দেশের ছেলে’ বলে কথা, এমনটাই তো স্বাভাবিক হওয়া! দেম্বেলে একে তো ফ্রান্সের ছেলে, তারপর প্যারিসেরই ক্লাব পিএসজি’র তারকা। এইটুকু ব্যতিক্রম না হলে কী আর হয়!
অবশ্য দিনভর ছড়িয়েছে নানা গুঞ্জন। কেউ কেউ তো লামিনে ইয়ামালকে ব্যালন ডি অর তুলে দেয়া বাকি বলছিলেন কেবল। তবে এবার আর ভুল হলো না, যাকে নিয়ে ছিল আলোচনা-জোর সম্ভাবনা, তার হাতেই উঠল ট্রফিটা।
অবশ্য এর প্রাপ্যই ছিলেন তিনি। গত মৌসুমে ৫৩ ম্যাচে ৩৫ গোল ও ১৬টি গোল বানিয়ে জিতিয়েছেন ঐতিহাসিক ‘ট্রেবল’। প্যারিস যে ট্রফিটার জন্য মাথা কুটে মরেছে, সেই চ্যাম্পিয়নস লিগও এনে দিয়েছেন।
পিএসজি’র স্বপ্ন চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে দেম্বেলের অবদান ছিল বিশাল। ১৪ গোলে সরাসরি অবদান (৮ গোল, ৬ গোলে সহায়তা)। ফরাসি কোনো ক্লাবের হয়ে এক মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে যা সর্বোচ্চ।
দেম্বেলে মাকে পাশে রেখে বুঝে নিয়েছেন ব্যালন ডি’অর ট্রফিটা। মঞ্চে উঠে সবার আগে অতিথিদের মাঝে বসা মাকে বলেছেন, ‘আমরা একসাথে এটা করেছি।’ আবেগ আর ধরে রাখতে পারেননি, কেঁদেও ফেলেন।
এরপর দেম্বেলে বলেন, ‘এটি আমার ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা অর্জন। পিএসজিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই ২০২৩ সালে আমাকে সই করানোর জন্য। সতীর্থরা সব সময় অসাধারণ। এটা ব্যক্তিগত ট্রফি নয়, আমাদের সবার অর্জন।’
রেমন্ড কোপা, মিশেল প্লাতিনি, জ্যাঁ পিয়েরে পাঁপিন, জিনেদিন জিদান ও করিম বেনজেমার পর ষষ্ঠ ফরাসি হিসেবে ব্যালন ডি’অর জিতলেন দেম্বেলে। অবশ্য তার পিএসজি সতীর্থদের দেখার ভাগ্য হয়নি।
ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানের রাতে মার্শেইয়ের মাঠে লিগের ম্যাচ ছিল লুইস এনরিকের দলের। এদিকে পিএসজি কোচ এনরিকেও জিতেছেন ইয়োহান ক্রুইফ ট্রফি। বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার। জিতেছেন সক্রেটিস অ্যাওয়ার্ডও।