নেপালের বিপক্ষে প্রায় ভুলতে যাওয়া জয়ের স্বাদ পাওয়া হলো না আজো, আবারো বাড়ল অপেক্ষা। বাগে পেয়েও জামাল ভূঁইয়ারা পূরণ করতে পারেননি প্রত্যাশা। জোড়া গোল করেও দলকে জেতাতে পারলেন না হামজা চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ফিফা প্রীতি ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলে দুই দল। তবে এই ম্যাচে জেতেনি কেউ, ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় লড়াই। শেষ মুহূর্তে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়েন সমর্থকেরা।
একটা সময় বলে-কয়ে নেপালকে হারাতো বাংলাদেশ। তবে স্বাদ প্রায় ভুলতেই বসেছে টাইগাররা। ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর নেপালকে শেষবারের মতো হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ছয়টি ম্যাচ খেলেও জেতা হয়নি আর।
সুযোগ ছিলো আজ, ঘরের মাঠে হামজা-সামিত সোমদের নিয়ে প্রস্তুত ছিল বাংলাদেশ। হংকংয়ের মাটিতে শেষ ম্যাচে যেভাবে খেলেছিল বাংলাদেশ, তার কিছুই ছিল না প্রথমার্ধে আজ ঘরের মাঠে।
বেশ কিছু ভালো সুযোগ তৈরি করেছিল অবশ্য; তবে সুযোগকে গোলে রূপান্তর করতে পারেননি ফাহিম-রাকিবরা। ২৯ মিনিটে প্রতি আক্রমণে গোল করে এগিয়ে যায় নেপাল। পরাস্ত হন বাংলাদেশের গোলকিপার মিতুল মার্মা।
বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে ব্যাক পাস দেন নেপালের সুমিত শ্রেষ্ঠা। বক্সের ভেতর থাকা রোহিত চাঁদ বাঁ পায়ের জোড়ালো শটে দলকে এগিয়ে দেন। ঘরের মাঠে ভরপুর দর্শকের সামনে বড় ধাক্কা খায় জামাল ভূঁইয়ার দল।
৩৬ মিনিটে অবশ্য সমতাগ ফেরার দারুন সুযোগ মিস করেন বাংলাদেশ। সতীর্থের উচু করে বাড়ানো বল বক্সের মধ্যে পেয়ে যান ফাহিম। কিন্তু তার শট দক্ষতার সাথে রুখে দেন নেপালের ডিফেন্ডার অনন্ত তামাঙ।
পিছিয়ে পড়ে বিরতিতে গেলেও বিরতি থেকে এসে ম্যাচে ফিরতে মোটেও সময় নেয়নি বাংলাদেশ। মাঠে ফিরেই দলকে আনন্দে ভাসান হামজা। স্তব্ধ গ্যালারিতে ফেরান উত্তেজনা। গোল যেমন ছিল আনন্দের, তার চেয়েও সুন্দর ছিল গোলের ধরন।
৪৫ মিনিটে ডান পাশ থেকে ফাহিমের ক্রস নেপালের এক খেলোয়াড় হেডে বিপদমুক্ত করতে চেয়েছিলেন, সেই বল বক্সের বাইরে পেয়ে যান জামাল ভূঁইয়া। তার বাড়ানো বল বাইসাইকেল কিকে জালে পাঠান হামজা চৌধুরী।
সেই উত্তেজনার রেশ কাটতে না কাটতেই পরের গোল পেয়ে যায় বাংলাদেশ ও হামজা। এবারের গোল আসে পেনাল্টি থেকে। ৪৮তম মিনিটে রাকিব হোসেন নেপাল বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ।
স্পট কিকে কোনো ভুল করেননি হামজা। বাংলাদেশ দলের হয়ে পঞ্চম ম্যাচে এটি তার তৃতীয় গোল। এই গোলে ২-১ গোলে ম্যাচে এগিয়ে যায় হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা।
ম্যাচের সত্তরতম মিনিটে তিনটি পরিবর্তন এনেছেন বাংলাদেশ কোচ কাবরেরা। নেমেছেন শাকিল আহাদ তপু, শাহরিয়ার ইমন ও মোহাম্মদ হৃদয়। ৮০তম মিনিটে হামজাকেও উঠিয়ে নিতে হয়। ছোটখাট চোট পেয়েছেন তিনি।
হামজার বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছেন কিউবা মিচেল। ১৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ এটি। তবে ম্যাচে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি তিনি। বাংলাদেশও বড় কোনো সুযোগ পায়নি আর।
জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় সমান ২-১ গোলে এগিয়ে থেকেই। এরপর যোগ করা হয় আরো ৫ মিনিট। সেখানেই বদলে যায় ম্যাচের মোড়। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোল হজম করে বসে দল।
কর্নার থেকে আসা বলে পা ছুঁইয়ে নেপালকে সমতায় ফিরিয়েছেন অনন্ত তামাং। তাতে ২-২ সমতা ফেরে ম্যাচে। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় জামালদের।



