এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশ

আর নেই কোনো সমীকরণের মারপ্যাঁচ, নেই কোনো বাধা। শ্রীলঙ্কায় ভর করে সুপার ফোরে বাংলাদেশ।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
আফগানিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের
আফগানিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের |সংগৃহীত

ধন্যবাদ শ্রীলঙ্কা— লিটন দাস এমন একটা কৃতজ্ঞতা বার্তা পাঠাতেই পারেন কুশল মেন্ডিসদের। এর প্রাপ্যই বটে তারা, আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশকে সুপার ফোরে নিয়ে যাওয়ার কারিগরই তো তারা।

যাহোক, আর নেই কোনো সমীকরণের মারপ্যাঁচ, নেই কোনো বাধা। শ্রীলঙ্কায় ভর করে সুপার ফোরে বাংলাদেশ। চতুর্থ ও শেষ দল হিসেবে শিরোপার লড়াইয়ে যোগ দিলো টাইগাররা।

অন্যদিকে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে হেরে গেল আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কার সাথে পেরে উঠল না দলটি। বৃথা গেছে মোহাম্মদ নাবিদের চেষ্টা। ১৭০ রানের লক্ষ্য দিয়েও হেরে গেছে ৮ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটে।

এই জয়ে ‘বি’ গ্রুপের চাম্পিয়ন হয়েই সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা। প্রথম পর্বের তিনটি ম্যাচই জিতেছে আসালাঙ্কারা। অন্যদিকে তিন ম্যাচের দুটিতে জিতে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে শেষ চারে বাংলাদেশ।

গ্রুপ অব ডেথে থাকায় কাজটা এমনিতেই কঠিন ছিল। তার উপর সুযোগ থাকলেও হংকংয়ের সাথে হেসেখেলে জয় আসেনি, বাড়িয়ে নিতে পারেনি রানরেট। আর শ্রীলঙ্কার সাথে তো হেরেছে খুব বাজেভাবেই।

আর আফগানিস্তানের সাথে মঙ্গলবার শেষ ম্যাচে জয় এসেছে মাত্র ৮ রানে। সব মিলিয়ে নেট রান রেটেও অনেকটা পিছিয়ে পড়ে লিটন দাসরা। শেষ চারে উঠতে তাই বাড়তে থাকে অপেক্ষা।

অপেক্ষাটা ছিল আফগানিস্তানের হারের। শ্রীলঙ্কা যদি আজ বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানকে হারায়, তাহলে বাংলাদেশকে আর কোনো অঙ্ক কষতে হবে না। সরাসরি উঠে যাবে সুপার ফোরে।

তবে আবুধাবিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৬৯ রানের পুঁজি পায় আফগানিস্তান। টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত এতো রান তাড়া করে জেতেনি কোনো দল। ফলে বাড়ে শঙ্কা।

এদিকে লক্ষ্য তাড়ায় এদিন জ্বলে উঠতে পারেননি আগের দুই ম্যাচে জয়ের নায়ক পাথুম নিশানকা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ফেরেন (৬) ওমরজাইয়ের শিকার হয়ে। ২.২ ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ২২ রানে।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই কামিল মিশারার উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ৬ ওভারে আসে ২ উইকেটে ৫৩ রান। তবে হাল ধরেন কুশল পেরেরা ও কুশল মেন্ডিস, জুটিতে আসে ৩৬ বলে ৪৫ রান।

পেরেরা ইনিংস বড় করতে পারেননি, ফেরেন ২০ বলে ২৮ করে। এরপর চারিথ আসালাঙ্কা ফেরেন ১২ বলে ১৭ করে। ১৪.৫ ওভারে ১১৯ রানে ৪ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। পেন্ডুলামের মতো ঘুরতে ম্যাচের ভাগ্য।

তবে এরপর আফগানদের আর সুযোগ দেয়নি শ্রীলঙ্কা, দেননি ‘দুই' মেন্ডিস। ২৩ বলে ৫২ রানের অপরাজিত জুটি গড়েন কুশল মেন্ডিস ও কামিন্দু মেন্ডিস। যা ১৮.৪ ওভারেই নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কার জয়।

৪১ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে কুশল মেন্ডিস অপরাজিত থাকেন ৫২ বলে ৭৪ করে, ১৩ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন কামিন্দু মেন্ডিস। আফগানদের হয়ে বল হাতে তেমন কেউ সুবিধা করতে পারেনি।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি আফগানিস্তানের। ওপেনিং জুটি ভাঙে মাত্র ২৬ রানেই। রহমানুল্লাহ গুরবাজ ফেরেন ৮ বলে ১৪ রান করে, নুয়ান থুসারার শিকার হয়েছে। একই ওভারে ফেরান করিম জানাতকেও।

নিজের তৃতীয় ওভারে এসে থুসারা আউট করেছেন আরেক ওপেনার সেদিকউল্লাহ আতালকেও (১৮)। ফলে ৪০ রানেই আফগানরা হারায় ৩ উইকেট। পাওয়ার প্লে শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৪৫।

আফগানিস্তান ১২.১ ওভারে দলীয় ৭৯ রানের মাঝে আরো ৩ উইকেট হারায়। দরবেশ রাসুলিকে (৯) আউট করেন দুশমান্থ চামিরা। আজমতউল্লাহ ওমরজাইকেও (৬) থিতু হতে দেননি দাসুন শানাকা।

একপ্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট গেলেও অন্যপ্রান্তে স্নায়ুচাপ ধরে রেখে খেলছিলেন ইব্রাহীম জাদরান। তবে বেশিদূর এগোতে পারেননি তিনি। দুনিথ ভেল্লালেগের শিকার হোন ২৭ বলে ২৪ করে

এক শ’র আগে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে যায় আফগানিস্তান। তবে সপ্তম উইকেটে ৩০ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়ে ফেলেছিলেন মোহাম্মদ নবি ও রশিদ খান। এই জুটিও ভাঙেন থুসারা, রশিদ ফেরেন ২৩ বলে ২৪ করে।

১৭.১ ওভারে ১১৪ রানে ৭ উইকেট হারায় আফগানরা। ১৮ ওভার শেষে স্কোর ছিল ১২০। তবে ১৯ ওভারে চামিরা থেকে ১৭ ও শেষ ওভারে ভেল্লালেগের থেকে ৩২ রান নেন মোহাম্মদ নাবি।

অর্থাৎ শেষ দুই ওভারে ৪৯ রান করে আফগানরা। তাতে তাদের পুঁজি গিয়ে ঠেকেছে ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে। আর তিনি নিজে মাত্র ২০ বলে তিনি স্পর্শ করেন ফিফটি। যা আফগানিস্তানের হয়ে সবচেয়ে দ্রুততম।

শেষ বলে রান আউট হবার আগে তার ব্যাটে আসে ৩ চার ও ৬ ছক্কায় ২২ বলে ৬০ রান! এখানেই ঘুরে যায় খেলা। নুয়ান থুসারা ১৮ রানে ৪ উইকেট নেন।