আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

আগের দুই ম্যাচে যা ঘটেছিল, তার ব্যতিক্রম কিছু হয়নি আবুধাবিতে মঙ্গলবার। আরো একবার আফগানিস্তানের কাছে অসহায় হার। এবার যেতে পারেনি তিন অঙ্কেও। মেহেদী মিরাজের দল হেরেছে রেকর্ড ২০০ রানে!

নয়া দিগন্ত অনলাইন
আফগানিস্তানের কাছে হারল বাংলাদেশ
আফগানিস্তানের কাছে হারল বাংলাদেশ |সংগৃহীত

যা মোটেও চায়নি কেউ, তাই হয়ে গেল বাংলাদেশ লজ্জায় ডুবল। আফগানিস্তানের কাছে ধবলধোলাই হলো টাইগাররা। ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো ঘটলো এমন ঘটনা। ওয়ানডে ক্রিকেটে সব মিলিয়ে যা ৩৩তম।

আগের দুই ম্যাচে যা ঘটেছিল, তার ব্যতিক্রম কিছু হয়নি আবুধাবিতে মঙ্গলবার। আরো একবার আফগানিস্তানের কাছে অসহায় হার। এবার যেতে পারেনি তিন অঙ্কেও। মেহেদী মিরাজের দল হেরেছে রেকর্ড ২০০ রানে!

ব্যাট হাতে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল ভয়াবহ। দলের রান সংখ্যা যেন টেলিফোন নম্বর। এক সাইফ হাসান ছাড়া কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কেও! দশে নামা হাসান মাহমুদের ব্যাটে আসে ২৩ বলে ৯ রান।

সুবাদে আগে ব্যাট করে আফগানিস্তানের ৯ উইকেটে ২৯৩ রানের বিপরীতে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ২৭.১ ওভারে ৯৩ রানে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে যা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার।

অথচ এতো বড় রান তাড়ায় শুরু থেকেই দারুণ কিছু করতে হতো বাংলাদেশকে। সাইফ হাসান এক প্রান্ত থেকে খানিকটা চেষ্টা করলেও কেউ দিতে পারেননি সঙ্গ। তানজিদ তামিমের জায়গায় এসে ব্যর্থ নাইম শেখও।

সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে নাইম ওয়ানডে খেলেছিলেন ২০২৩ এশিয়া কাপে। দুই বছরের বেশি সময় পর দলে প্রত্যাবর্তন হলেও ব্যাট হাতে ছিলেন আগের মতোই। ২৪ বলে মাত্র ৭ রান করে আউট হন তিনি।

তিনে নেমে যথারীতি ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম দুই ম্যাচে ২ ও ৭ রান করার পর আজ ফেরেন ১৬ বলে মাত্র ৩ রান করে। সব মিলিয়ে শেষ ৬ ম্যাচে তার রান মোটে ৪৯! ১৩ ওভারে ৪৭ রানে ২ উইকেট হারায় দল।

বাকিরাও যেন রান না করার পণ নিয়েই মাঠে এসেছেন।

তাওহীদ হৃদয় থেকে রিশাদ হোসেন, কে কার থেকে বাজে ব্যাটিং করতে পারেন— যেন তার প্রতিযোগিতায় ছিলেন। ঘরোয়াতে রান বন্যা করা নুরুল হাসান আউট হন মাত্র ২ রান নিয়ে।

৭০ রানের ঘরেই ৩ উইকেট হারায় দল। সব মিলিয়ে ৩ উইকেটে ৭০ থেকে ৯৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

নিজের মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেই ৫ উইকেট তুলে নেন বিলাল সামি। ১২ রানে ৩ উইকেট নেন রশিদ খান।

সব মিলিয়ে গোটা সিরিজে ১১ উইকেট নিলেন রশিদ। উইকেট। ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের হয়ে যা রেকর্ড। তাতেই ওয়ানডেতে আফগানদের কাছে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হলো প্রথমবার।

এর আগে বল হাতে উইকেটের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ১৬ ওভারের শেষ পর্যন্ত। তিন অঙ্কের দোরগোড়ায় গিয়ে প্রথমবার উপলক্ষ পায় টাইগাররা।

দলকে ৯৯ রানে রেখে ফেরেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ।

৪৪ বলে ৪২ রান করা গুরবাজকে ফেরান তানভীর ইসলাম। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সেদিকুল্লাহ আতালকে নিয়ে ৯৩ বলে আরো ৭৪ রান যোগ করেন ইবরাহিম। ৩১.৩ ওভারে এই জুটি ভাঙেন সাইফ।

পার্ট টাইম এই স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আতাল ফেরেন ৪৭ বলে ২৯ রান করে। সেই ওভারে কোনো রান দেননি সাইফ। পরের ওভারে এসে হাশমতুল্লাহ শাহিদিকেও (২) ফেরান তিনি।

৩৬.৫ ওভারে দলীয় ১৮৬ রানে সেঞ্চুরির পথে থাকা ইবরাহিমকে হারায় আফগানরা। রান আউট হয়ে তার ইনিংস শেষ হয় ১১১ বলে ৯৫ রানে। আগের ম্যাচেও ১৪০ বলে সমান ৯৫ রান নিয়ে আউট হয়েছিলেন তিনি।

ইকরাম আলিখিলকে পরের ওভারে ফাঁদে ফেলেন সাইফ। ১৩ বলে মাত্র ২ রান করেন তিনি। ৩৭.৪ ওভারে ১৮৮ রানে ৫ উইকেট হারায় আফগানরা। ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন হয় ৪১.৩ ওভারে।

তানভিরের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। ২১ বলে ২০ রান করে বোল্ড হন তিনি। রশিদ খানকে (৮) থিতু হতে দেননি মেহেদী মিরাজ। তবে একপাশ আগলে ইনিংস ধরে রাখেন মোহাম্মদ নাবি।

শেষ পর্যন্ত ফিফটি তুলে অপরাজিত থাকেন ৩৭ বলে ৬২ রান নিয়ে। যেখানে শেষ ৩ ওভারেই তুলেন ৫৪ রান। তাতে ৯ উইকেটে ২৯৩ রানের সংগ্রহ পায় আফগানরা। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুঁজি।