৪৬ কোটি টাকার পাওনা আদায়ে চিটাগাং কিংসকে আইনি নোটিশ দিলো বিসিবি

সেটির সমন্বয় করেই গত ৩০ জুন পর্যন্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, আয়কর এবং ক্রিকেটারদের ও দল সংশ্লিষ্টদের পারিশ্রমিক মিলিয়ে মোট ওই উল্লিখিত অঙ্কের অর্থ দাবি করা হয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
৪৬ কোটি টাকার পাওনা আদায়ে চিটাগাং কিংসকে আইনি নোটিশ দিলো বিসিবি
৪৬ কোটি টাকার পাওনা আদায়ে চিটাগাং কিংসকে আইনি নোটিশ দিলো বিসিবি |সংগৃহীত

চট্টগ্রামকে আর ছাড় দিতে চায় না ক্রিকেট বোর্ড। ভেঙে দিয়েছে সমঝোতা প্রস্তাব। কঠোর হয়েছে তারা, নিয়েছে কড়া ব্যবস্থা। করেছে চুক্তি বাতিল, পাওনা ৪৬ কোটি টাকা পেতে দিয়েছে আইনি নোটিশ।

বিপিএল দল চিটাগং কিংসের কাছে পাওনা অর্থের পরিমাণ নিয়ে টানাপোড়েন ও নানা খবরের ছড়াছড়ির মাঝে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে বিসিবি। বেশ মোটা অংকের পাওনা জমেছে এই ফ্রাঞ্চাইজির কাছে।

বিপিএলের তিনটি আসরে বিভিন্ন খাতের পাওনা ও দীর্ঘদিনের সুদ মিলিয়ে বিতর্কিত ফ্র্যাঞ্চাইজিটির কাছে ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ১৫৬ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৪৬ কোটি টাকা পাবে বিসিবি।

এর আগে বিপিএলের প্রথম দুই আসরের পাওনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় চিটাগং কিংসের সাথে চুক্তি বাতিল করে বিসিবি। তবে গত আসরের আগে সেই বকেয়া ১৭ কোটি টাকার প্রায় পুরোটাই মাফ করে দেয় বোর্ড।

শুধুমাত্র সাড়ে ৩ কোটি টাকার মতো পরিশোধ করতে বলা হয় চিটাগং কিংসকে। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সময়মতো সে টাকাও পরিশোধ করতে পারেনি তারা।

ফলে তাদের ওপর আর আস্থা রাখছে না বিসিবি। তাই বোর্ড গত ২২ জুলাই চুক্তি বাতিল করে চিটাগং কিংসকে আইনি নোটিশ দেয়। যেখানে সুদে-আসলে বকেয়া হালনাগাদ করে তাদের কাছে এতো টাকা দাবি জানায় বিসিবি।

সম্প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজির স্বত্তাধিকারী সামির কাদের চৌধুরি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ৪৫-৪৬ কোটি টাকার ব্যাপারটি কিভাবে এলো, এটি তিনি বুঝতে পারছেন না। যার পরিপেক্ষিতে ক্রিকেট বোর্ড সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিসিবির প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিপিএলের প্রথম ও দ্বিতীয় আসরে ক্রমাগতভাবে চুক্তির আইনি ও আর্থিক শর্ত ভঙ্গ করে গেছে চিটাগং কিংসের স্বত্তাধিকারী প্রতিষ্ঠান এস.কিউ. স্পোর্টস এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড।

২০১৩ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত বিসিবির পক্ষ থেকে অনেকবার তাগাদা ও নোটিশ দেয়া হয়েছে, এর মধ্যে ছিল ২০১৩ সালের ৭ মে সালিশি নোটিশ ও গত ২২ জুলাইয়ের আইনি নোটিশও। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজিটি চুক্তির শর্ত রক্ষা করতে পারেনি। পাওনার মাঝে আছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, আয়কর এবং ক্রিকেটারদের ও দল সংশ্লিষ্টদের পারিশ্রমিক।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ পথে ব্যাপারটি সমাধানের জন্য গত সেপ্টেম্বর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির সাথে একটি চুক্তি করে বিসিবি। কিন্তু সেই চুক্তির অর্থ পরিশোধ করতেও পুরোপুরি ব্যর্থ হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। এর ফলাফল হিসেবে, গত ২২ জুলাই নোটিশ দিয়ে সেই সমঝোতা চুক্তি বাতিল করে দেয় বিসিবি ও ৩৭ লাখ ৮২ হাজার ১৫৬ মার্কিন ডলার পাওনা দাবি করা হয়।

বিসিবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেই দাবি করা অর্থের ব্যাখ্যাও দিয়েছে। প্রথম দুই আসরের পাওনার সাথে যোগ করা হয়েছে ২০১২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত সুদের অর্থ। এ ছাড়াও প্রথম দুই আসরের পাওনা ছিল মার্কিন ডলারে। ডলারের বিপরীতে টাকার মানের অনেক পতন হয়েছে গত ১৩ বছরে।

সেটির সমন্বয় করেই গত ৩০ জুন পর্যন্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি, আয়কর এবং ক্রিকেটারদের ও দল সংশ্লিষ্টদের পারিশ্রমিক মিলিয়ে মোট ওই উল্লিখিত অঙ্কের অর্থ দাবি করা হয়েছে।

পাওনা অর্থে পরিমাণ আলাদা করেও তুলে ধরেছে বিসিবি। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির কাছে বোর্ডের মূল পাওনা ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৬৫ মার্কিন ডলার। আর ১৩ বছরের মোট সুদ ২২ লাখ ৩২ হাজার ৯২ ডলার।