ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ

অধিনায়কত্ব খারাপ করছেন না মিরাজ। মূলত ব্যাটাররা রান করতে পারছেন না বলেই ফল পক্ষে আসছে না। আর ব্যাটিং নিয়ে তার বক্তব্য ‘পরিস্থিতির শিকার।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ
ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ |সংগৃহীত

অপেক্ষা ফুরোচ্ছে মিরপুরের। ঘরের ছেলেরা ফিরছে ঘরে, মিরাজ-তাসকিনরা ফিরছেন শের-ই-বাংলাতে। দুই বছরে বেশি সময় পর হোম অফ ক্রিকেটে ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

আজ শনিবার বেলা দেড়টায় তিন ম্যাচ সিরিজের ওয়ানডেগে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তবে এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে নানা কারণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে টিম বাংলাদেশ।

আফগানিস্তানের কাছে যাচ্ছেতাই ভাবে পর্যদুস্ত হওয়ার ঘা এখনো দগদগে। দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে আবার সমর্থকদের কাছে হেনস্তা- এসবের মধ্যেই আবার মাঠে নামছে ফিল সিমন্সের শিষ্যরা।

এদিকে ওয়ানডেতে দল রীতিমতো ধুঁকছে। এক সময়ের প্রিয় এই ফরম্যাটে লেগেছে জয়খরা। শেষ ১২ ম্যাচে জয় মাত্র একটি। হেরেছে পরপর টানা চার সিরিজ। যেখানে ধবলধোলাই হয়েছে দুইবার।

স্বাভাবিকভাবেই এমতাবস্থায় কিছুটা চাপে থাকবে মিরাজরা, তবে ঘরের মাঠে চেনা দর্শকদের সামনে খেলাটা যোগাবে অনুপ্রেরণা। যদিও এই মিরপুরে খেলা শেষ সিরিজটাও নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ।

সিরিজটা যেমন বাংলাদেশের জয়ের ধারায় ফেরার উপলক্ষ্য, তেমনি সরাসরি বিশ্বকাপে যাবার পথও। ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক সময়ে ছয় নম্বরে থাকা দল, এখন দশে নেমে গেছে। ফলে বাড়ছে শঙ্কা।

২০২৭ বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নিতে হলে সেই বছরের ৩১ মার্চের মাঝে র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা নয়ের মাঝে থাকতে হবে। তবেই পাওয়া যাবে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার টিকিট। যেখানে এখন নয় নম্বরে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজটা জিততে পারলে গল্পটা ভিন্ন হতো, তবে নয় নম্বরে থেকে সিরিজটা শুরু করতে পারতো বাংলাদেশ। এমনকি এই সিরিজে জিতলে উঠে যাবার সুযোগ ছিল সেরা আটেও।

তবে আফগানরা সিরিজ হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে গেছে। যদিও সেই সমীকরণ মেলাতে সময় ও সুযোগ আছে এখনো ঢের- তবে অপেক্ষা বাড়াতে চান না সমর্থকেরা।

ফিল সিমন্স অবশ্য এসব পরোয়া করছেন না একদমই। বাংলাদেশের প্রধান কোচের কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজটি অন্য আরেকটি সিরিজের মতোই। তবে তিনি ভাবছেন ব্যাটারদের বেহাল দশা নিয়ে।

শেষ কয়েক সিরিজে ব্যাট হাতে একদমই ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। মাঝে মাঝে একটু একটু ঝলক দেখালেও ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পুরোপুরি ব্যর্থ। দাড় করাতে পারছে না জুটি।

এসব উপলব্ধি করে সিমন্স বলেন, ‘আমরা ভালো জুটি গড়তে পারিনি, বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোয়। শুরুতে জুটি হয়েছে, মিডল অর্ডার ভেঙে পড়েছে। শ্রীলঙ্কাতেও দেখেছি আমরা। সহজেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম, এরপর একটি রান আউট ও এরপর দ্রুতই ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলি।’

তিনি আরো বলেন, ‘মাঝের সময়টায় জুটি গড়তে হবে। ছেলেরা এখানেই কাজ করার চেষ্টা করছে যতটা সম্ভব। একটি বাজে সিরিজ আমাদের গিয়েছে, ব্যাটাসম্যানরা খারাপ করেছে। তবে শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে আমাদের।’

এদিকে অধিনায়ক মেহেদী মিরাজকে নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা। তার অধিনায়কত্বে ১০ ওয়ানডে খেলে মাত্র একটি জিতেছে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতেও ভালো করতে পারছেন না, রান পেলেও স্ট্রাইকরেট নিয়ে আছে প্রশ্ন।

তবে এমতাবস্থায়ও তিনি পাচ্ছেন কোচের সমর্থন। সিমন্সের মতে, অধিনায়কত্ব খারাপ করছেন না মিরাজ। মূলত ব্যাটাররা রান করতে পারছেন না বলেই ফল পক্ষে আসছে না। আর ব্যাটিং নিয়ে তার বক্তব্য ‘পরিস্থিতির শিকার।’

তিনি বলেন, ‘দলের কারণে তার এমন খেলতে হয়। বিশেষ করে জুটি গড়ার জন্য তার এই কাজটা করতে হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় এভাবে খেলতে হয়েছে তার। তবে আমি নিশ্চিত, ভিন্ন পরিস্থিতিতে সে ভিন্নভাবে খেলবে।’