জাহানারার পাশে দাঁড়ালেন তামিম, নিরপেক্ষ তদন্তের আবেদন

এসব অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর গতরাতেই তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তবে তামিম ইকবাল মনে করেন সরকারিভাবেও বিষয়টি তদন্ত করা হোক।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
তামিম ইকবাল ও জাহানারা আলম
তামিম ইকবাল ও জাহানারা আলম |সংগৃহীত

জাহানারা আলমের পাশে দাঁড়িয়েছেন তামিম ইকবাল। জানিয়েছেন নিরপেক্ষ তদন্তের আবেদন। সাবেক এই অধিনায়কের শঙ্কা— যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়া হলে আগামীতে মেয়েরা খেলাকে পেশা হিসেবে নিতে ভয় পাবে।

বৃহস্পতিবার এক ইউটিউব চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম ও নারী বিভাগের সাবেক ইনচার্জ মৃত তৌহিদ মাহমুদ দ্বারা যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেন জাহানারা আলম।

এছাড়া তার ক্যারিয়ার থমকে যাওয়ার পেছনে জাতীয় দলের কয়েকজন কোচিং স্টাফ ও খেলোয়াড়ের ভূমিকা ছিল বলেও দাবি করেন জাহানারা। বিসিবির কাছে চিঠি লিখেও যার প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন তিনি।

এসব অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর গতরাতেই তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তবে তামিম ইকবাল মনে করেন সরকারিভাবেও বিষয়টি তদন্ত করা হোক। সেই সাথে হেনস্তার শিকার সব নারী ক্রিকেটারদের সাহস নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তামিম লেখেন, (হুবহু তুলে ধরা হলো) ‘জাহানারা আলম যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সবগুলোই গুরুতর এবং সেসব সত্যি হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মতো নয়। শুধু একজন জাতীয় ক্রিকেটার বা সাবেক অধিনায়ক বলেই নয়, যে কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটার হোক বা যে কোনো খেলার ক্রীড়াবিদ কিংবা যে কোনো নারী, কারো প্রতিই এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

বিসিবি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বটে। তবে আমি মনে করি, এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কিংবা সরকারি পর্যায়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত, যেখানে বিসিবি সংশ্লিষ্ট কেউ থাকবেন না, যাতে বিন্দুমাত্র পক্ষপাতের সুযোগ না থাকে। যত দ্রুত সম্ভব এই কমিটি গঠন করা উচিত ও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপারটিকে দেখা উচিত। দ্রুততার সাথে তদন্ত শেষ করে দোষী যে-ই হোক, যার যতটুকু দায় থাকুক, উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

কয়েকদিন আগে জাতীয় দলের পরিবেশ নিয়েও জাহানারা কিছু অভিযোগ করেছেন, যা বিসিবি পরে উড়িয়ে দিয়েছে। একজন ক্রিকেটার যখন দল নিয়ে এত গুরুতর অভিযোগ করেন, সেসব অবশ্যই খতিয়ে দেখা উচিত। কিন্তু যাচাই না করেই বিসিবি যেভাবে অতি দ্রুত উড়িয়ে দিয়েছে, কখনোই তা কাম্য নয়।

জাহানারার অভিযোগের পর আরো বেশ কিছু ঘটনার কথা জানতে পারছি নানা মাধ্যমে। আমি প্রতিটি নারী ক্রিকেটারকে অনুরোধ করব, যারা নানা সময়ে এসব ঘটনার শিকার হয়েছেন, সেটা সরাসরি হোক বা আকারে-ইঙ্গিতে, যে কোনোভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছে, সবাই মুখ খুলবেন এবং সাহস নিয়ে এগিয়ে আসবেন। দেশের ক্রিকেট তথা ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে এটা প্রয়োজন। কথা দিচ্ছি, আমাকে ও আমাদের আপনাদের পাশে পাবেন।

জাহানারার অভিযোগগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা যদি না নেয়া যায়, যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো মেয়ে ক্রিকেট বা যে কোনো খেলায় আসতে ভয় পাবে, খেলাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পিছপা হবে। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।’