নারী বিশ্বকাপ

আশা জাগিয়েও প্রোটিয়াদের কাছে হারল বাংলাদেশ

নারী বিশ্বকাপের নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ৩ উইকেটে হেরে গেল বাংলাদেশ। বিশাখাপত্তনমে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৩২ রান করে টাইগ্রেসরা। যা দক্ষিণ আফ্রিকা পেরিয়ে যায় ৩ বল বাকি থাকতেই।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
শেষ ওভারের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে হারল টাইগ্রেসরা
শেষ ওভারের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে হারল টাইগ্রেসরা |সংগৃহীত

জয়ের ধারায় ফেরা হলো না বাংলাদেশের। খুব কাছে গিয়েও গড়া হলো না ইতিহাস, লেখা হলো না প্রোটিয়া বধ গল্প। দারুণ লড়াই করেও হেরে গেছে জ্যোতিরা। এই নিয়ে বিশ্বকাপে টানা তিন ম্যাচে হারল টাইগ্রেসরা।

নারী বিশ্বকাপের নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ৩ উইকেটে হেরে গেল বাংলাদেশ। বিশাখাপত্তনমে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২৩২ রান করে টাইগ্রেসরা। যা দক্ষিণ আফ্রিকা পেরিয়ে যায় ৩ বল বাকি থাকতেই।

আগের আসরে অংশ নিয়ে কেবল একটা ম্যাচ জিতেছিল জ্যোতিরা। এবার প্রথম ম্যাচেই পেয়ে যায় প্রথম জয়ের দেখা। ফলে ইতিহাস গড়ার সুযোগ ছিল আজ, তবে দূর হলো না আক্ষেপ। বাড়ল অপেক্ষা।

ম্যাচটা হঠাৎ করেই জমে উঠে। অথচ বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় সেরা ২৩২ রান করার পর ২২.১ ওভারে মাত্র ৭৮ রানে প্রোটিয়াদের ৫ উইকেট তুলে নেয় টাইগ্রেসরা। বুনতে থাকে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন।

সেখান থেকেই দলকে টেনে তুলেন মারিজানে ক্যাপ ও কোলে ট্রায়ন। এই দু’জনে ষষ্ঠ উইকেটে যোগ করেন ৮৫ রান। আর তাতেই ম্যাচে ফেরে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই জুটি ভাঙেন নাহিদা, ক্যাপ আউট হন ৭১ বলে ৫৬ রান করে।

এরপর নাদিন ডি ক্লার্ককে নিয়ে ইনিংস এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন ট্রায়ন। ৪৪তম ওভারে রাবেয়া খানের বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন ট্রায়ন। উল্টো বল বাউন্ডারি হলে ৬৪ বলে পেয়ে যান ফিফটি।

তাদের ৩৫ রানের জুটি ভাঙে ৪৪.৫ ওভারে রিতু মনির ডিরেক্ট থ্রুতে ট্রায়ন ৬৯ বলে ৬২ রান করে রান আউট হলে। তখনও জয়ের জন্য ৩১ বলে ৪০ রান প্রয়োজন প্রোটিয়াদের। বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৩ উইকেট।

এরপরও হয়তো ম্যাচে ফিরতে পারত বাংলাদেশ, তবে ক্যাচ মিস আর ফিল্ডিং মিসের মাশুল দিতে হয়। ক্লার্ক ৩৯ বলে ৩৭ ও মাসাবাতা ক্লাস ১৩ বলে ১০ রান নিয়ে অপরাজিত থেকে প্রোটিয়াদের জয় নিশ্চিত করেন।

এর আগে, প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ব্যাট হাতে আজ শুরু থেকেই সতর্ক ছিল বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতেই যোগ করে ৫৩ রান, যদিও খরচ হয় ১৬ ওভার।

১৭ ওভারের প্রথম বলেই আউট হন রুবিয়া হায়দার, ৫২ বলে ২৫ রান করে আউট হন তিনি। বড় হয়নি আরেক ওপেনার ফারাজানা হকের ইনিংসও, ৭৬ বল খেলে ৩০ রান নিয়ে আউট হন। ২৫ ওভার শেষে স্কোর ৭৩/২।

উইকেট না হারালেও প্রথম ২৫ ওভারে ছিল না রানের গতি। যা তৃতীয় উইকেট জুটিতে বাড়ানোর চেষ্টা করেন নিগার সুলতানা জ্যেতি ও শারমিন আক্তার। দু’জনের জুটিতে আসে ৯০ বলে ৭৭ রান।

৪০ ওভার শেষে ১৫০ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ, জ্যোতি ফিরেন ৪২ বলে ৩২ রান করে। তবে ফিফটি তুলে নেন শারমিন, যদিও ইনিংস এরপর আর বড় হয়নি। রান আউট হয়ে ফেরেন ৭৭ বলে ৫০ করে।

এরপর রানের গতি বাড়ান স্বর্ণা আক্তার। মাত্র ৩৪ বলে তুলে নেন ফিফটি। যা দেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে দ্রুততম ফিফটি। যেখানে ছিল তিনটি চার ও তিনটি ছক্কা। তার আগে দেশের হয়ে আর কেউ এক ম্যাচে তিনটি ছক্কা মারতে পারেননি।

স্বর্ণা অপরাজিত থাকেন ৩৫ বলে ৫১ রানে। সুবহানা মুস্তারি (৯) ও রাবেয়া খান (০) দ্রুত ফিরলেও ৮ বলে ১৯* রান তুলেন রিতু মণি। দু’জনের ১৮ বলের জুটিতে আসে ৩৭ রান। যা বাংলাদেশকে এনে দেয় ৬ উইকেটে ২৩২ রানের সংগ্রহ।

ওয়ানডে বিশ্বকাপে যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ২০২২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে তারা করেছিলে ৭ উইকেটে ২৩৪ রান।