শ্বশুড় শহীদ আফ্রিদিকে বিশ্ববাসী চিনেছিল কেনিয়ার মাঠে ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার জন্য। ৩৭ বলে তার করা শতরানটি ছিল ওয়ানডেতে সবচেয়ে দ্রুতগতির। ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন তিনি। এখন পাকিস্তান ক্রিকেটে চলছে আরেক আফ্রিদির রাজত্ব। তিনি শাহীন শাহ আফ্রিদি।
কয়েক বছর আগে জুনিয়র আফ্রিদি হয়েছেন সিনিয়র আফ্রিদির মেয়ে জামাই। তবে এখন যেভাবে টি-২০তে লোয়ার অর্ডারে ব্যাটে ঝড় তুলছেন জুনিয়র আফ্রিদি তাতে হয়তো আগামীতে ব্যাট হাতেও কোনো রেকর্ড গড়ে ফেলবেন এই পেস বোলার। এবারের টি-২০ এশিয়া কাপে দুই ম্যাচে শাহীন আফ্রিদির ব্যাটিং তান্ডব।
ভারতের বিপক্ষে ১৬ বলে ৩৩ রান করার পর ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৪ বলে ২৯ রান। দুই ম্যাচেই তাকে কোনো বোলার আউট করতে পারেনি।
পাকিস্তান দলে ২০১৮ সালে বাহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে অভিষেক শাহীন আফ্রিদির। ব্যাট হাতে তেমন কিছুই দিতে পারছিলেন না। বল হাতেই ছিলেন বিপক্ষ ব্যাটারদের মূর্তিমান আতংক। ৩১ টেস্টে ১১৬ উইকেট। ওয়ানডেতে ৬০ ম্যাচে ১২৪ শিকার। আর টি-২০তে ৭৫ ম্যাচে উইকেটের সেঞ্চুরী। ব্যাট হাতে ছিল টেস্টে ২৪৯, ওয়ানডেতে ২৩৬ এবং টি-২০তে ১৮২ রান। ২০ ওভারের ম্যাচে এই ১৮২ রানের মধ্যে ৬৬ রানই এসেছে এবারের এশিয়া কাপে দুই ম্যাচে। তবে ফ্রাঞ্চাইজি টি-২০তে ৪০ ম্যাচে ৩৭০ রান তার।
শাহীন আফ্রিদির এই বদলে যাওয়া ব্যাটিংয়ের নেপথ্যে আছে ইনজুরির প্রভাব। ২০২২ সালে হাঁটুর ইনজুরি সারতে অপারেশন করতে হয় তাকে। এরপর রিহ্যাবের সময় তাকে বোলিংয়ে অতোটা সিরিয়াস না হয়ে ব্যাটিংয়ে বেশী সময় দিতে বলা হয়। তখন থেকেই ব্যাটিংয়ে মনযোগী। এতেই বদলে যায় এই পেস বোলারের ব্যাটিং স্টাইল। এবারের এশিয়া কাপের আগ পর্যন্ত ৩০ টি-২০ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ১৮৮ রান। সেই রানই এবারের এশিয়া কাপে ২৫০ এ নিয়ে গেছেন। এশিয়া কাপের ৬৬ রানই সংগ্রহকে নিয়ে গেছে আড়াইশতে।
আফ্রিদি যে লোয়ার অর্ডারে তান্ডব চালাতে শিখেছেন তা ২০২৩ সালে পিএসএল এর ফাইনালে জানান দেন। চ্যাম্পিয়ন লাহোর কালান্দার্সের হয়ে প্রথম ইনিংসে ১৫ বলে ৫ ছক্কা ও ২ বাউন্ডারীতে ৪৪ রান করেন। সেই ম্যাচে মুলতান সুলতানের বিপক্ষে ১ রানে জিতে শিরোপা জয় লাহোরের। তখন বল হাতেও ছিলেন সফল। নেন ৪ উইকেট। আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচের মতো সেই খেলাতেও হয়েছিলেন ম্যান অব দ্যা ম্যাচ।
২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সালের পাকিস্তান সুপার লিগ। এই সময়ে শাহীন আফ্রিদির হাঁকানো ছক্কার সংখ্যা ছিল মাত্র ২টি ছক্কা। তার সর্বোচ্চ রান ছিল ১২। তবে এরপরের তিন আসরে যেন ব্যাট হাতে বাতাসে ভাসছেন তিনি। এই তিন পিএসএলে তিনি মেরেছের ২৪টি ছক্কা।
এবার ওমানের বিপক্ষে ১ বলে ২ রান করার পর ভারতের বিপক্ষে ৪ ছক্কায় ৩৩ রান করেন। এরপর পরশু মাস্ট উইন ম্যাচে আমিরাতের বিপক্ষে ২ ছক্কা ও ৩ চারে ১৪ বলে ২৯ রান।



