নিয়মিত ওপেনার উসমান খাজা অস্বস্তি বোধ করায় ইনিংস ওপেন করতে নেমে মাত্র ৬৯ বলে দূরন্ত এক সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়াকে দুই দিনেই অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে জয় উপহার দিয়েছেন ট্রাভিস হেড। পার্থ স্টেডিয়ামে ৮ উইকেটের এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অজিরা।
২০৫ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে হেড ৮৩ বলে ১৬ বাউন্ডারি ও চারটি ওভার বাউন্ডারির সহায়তায় একাই করেছেন ১২৩ রান। দ্বিতীয় দিন ২৮.২ ওভারে জয় নিশ্চিতে মার্নাস লাবুশানে ৫১ ও স্টিভ স্মিথ ২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
ম্যাচ শেষে হেড বলেছেন, ‘দুর্দান্ত দুটি দিন কেটেছে। যা ছিল অবিশ্বাস্য। এ কারণেই আবেগটা একটু বেশি। গতকাল প্রথম দিন ইংল্যান্ড দারুণ খেলেছে। প্রথম ইনিংসে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে ছিল। কিন্তু আমরা ছেড়ে কথা বলিনি। যেভাবে আজ আমি দলের জয়ে অবদান রেখেছি তা সত্যিই স্পেশাল।’
মধ্যাহ্ন বিরতির পর দুই পেসার স্কট বোল্যান্ড ও মিচেল স্টার্ক ঝলকে ইংল্যান্ডের ইনিংসে ধস নামে। ১ উইকেটে ৬৫ রান সংগ্রহ করে ইনিংস বিরতিতে যায় সফরকারীরা। ওই সময় এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ডকে হঠাৎ করেই থামিয়ে দেন দুই পেসার। চার ওভারে দুজন মিলে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে বেশিদূর এগুতে দেননি। এর মধ্যে বোল্যান্ড ১১ বলের ব্যবধানে একে একে বেন ডাকেট (২৮), অলি পোপ (৩৩) ও হ্যারি ব্রুককে (০) সাজঘরের পথ দেখান। দুই বল পর স্টার্ক ৮ রানে জো রুটকে ফেরত পাঠান।
স্টার্ক যখন অধিনায়ক বেন স্টোকসের (২) উইকেট তুলে নেন তখন ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৮৮। অভিজ্ঞ এই পেসার প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা ৫৮ রানে ৭ উইকেট দখল করেছেন। দ্বিতীয় ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নিয়ে স্টার্ক ইংল্যান্ডের ইনিংস গুটিয়ে দেন। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো স্টার্ক টেস্টে ১০ উইকেট দখল করলেন।
অষ্টম উইকেটে গাস এ্যাটকিনসন (৩৭) ও ব্রাইডন কার্সের (২০) ৫০ রানের জুটিতে ইংল্যান্ড কিছুটা হলেও মুখরক্ষা করতে পেরেছে। তবে চা বিরতির সময় ১৬৪ রানে অল আউট হলে অস্ট্রেলিয়ার জয় সময়ের ব্যপার হয়ে দাঁড়ায়।
নিয়মিত ওপেনার খাজার অনুপস্থিতিতে এর আগে টেস্ট ক্রিকেটে নয়বার ইনিংস ওপেন করতে নামা হেডের ওপর আরো একবার নির্ভর করে অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ব্যবস্থাপনার এই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না সেটা হেড দ্রুতই প্রমাণ করেন। ব্যাট হাতে নিয়ন্ত্রণ নিজের করে নিয়ে হেড এগিয়ে যেতে থাকেন। ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে টেস্টে ৪ হাজার রান পূর্ণ করেন হেড।
অভিষিক্ত জেড ওয়েদারাল্ড পুল শট খেলতে গিয়ে ২৩ রানে কার্সের বলে বেন ডাকেটের হাতে ধরা পড়েন। স্টোকসের এক ওভারে হেড চারটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডার হাঁকিয়ে এক প্রান্তে দ্রুতগতিতে রান সংগ্রহ করতে থাকেন।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ১২৩ রান সংগ্রহ করা অস্ট্রেলিয়া চার রানে ন্যাথান লিঁওকে হারিয়ে ইংল্যান্ডের থেকে ৪০ রানে পিছিয়ে ছিল। স্টোকস ৩৬ বলে ২৩ রানে ৫ উইকেট দখল করেন। ইংল্যান্ডের সামনে সুযোগ ছিল ২০১০-১১ সিরিজের পর প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট ম্যাচ জয়ের। প্রথম ইনিংসে স্টার্কের দূরন্ত বোলিংয়ে তারা ১৭২ রানে অল আউট হয়েছিল।



