ঘরের মাঠে যেন লজ্জায় ডুবল ভারত। নিজেকের ফাঁদে আটকা পড়লো নিজেরাই। কলকাতা টেস্টে হেরে গেছে অবিশ্বাস্যভাবে। মাত্র ১২৪ রানের লক্ষ্য পূরণ করতে নাজেহাল স্বাগতিকেরা হেরে গেছে ৩০ রানে।
প্রথম দুই দিন শেষেই বোঝা যাচ্ছিল তৃতীয় দিনেই নিষ্পত্তি হচ্ছে কলকাতা টেস্টের। হলোও তাই। প্রথম ইনিংসে লিড নিয়েও প্রোটিয়া স্পিনারদের ঘূর্ণিতে কাবু ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারলো মোটে ৯৩ রান।
ভারতের মাঠে এর চেয়ে কম রান তাড়ায় হেরে যাওয়ার ঘটনা আছে আর মাত্র একটি। ২০০৪ সালে মুম্বাইয়ে ১০৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভারতের বিপক্ষে ৯৩ রানেই অলআউট হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
অন্যদিকে নিজেদের ইতিহাসেও এর চেয়ে কম তাড়া করে একবারই হেরেছে ভারত। ১৯৯৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বার্বাডোজ টেস্টে ১২০ রানের লক্ষ্য ছুঁতে পারেনি তারা। সেই তিক্ততা যেন আজ ফিরল আবার।
এদিকে, এই জয়ে ভারতের মাটিতে দীর্ঘদিনের খরা কাটালো দক্ষিণ আফ্রিকা। সাদা পোশাকে ১৫ বছর পর ভারতে জয় পেলো প্রোটিয়ারা। সবশেষ জয় এসেছিল ২০১০ সালে। মাঝের ৮ টেস্টের সাতটিতেই হারে তারা, অন্যটি হয় ড্র।
ইডেন গার্ডেনে বোলাররা সুবিধা পেয়েছিল প্রথম দিনেই। সেদিন পতন হয় ১১ উইকেটের। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৫৫ ওভারে সব কটি উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫৯ রানে থেমেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
জবাব দিতে নেমে প্রথম ইনিংসের ৬২.২ ওভারে ১৮৯ রানে থামতে হয় স্বাগতিকদের। পায় ৩০ রানের লিড। পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসেও চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা, ৯৩ রানে হারায় ৭ উইকেট।
তবে রোববার টেম্বা বাভুমার সৌজন্যে আরো ৬০ রান যোগ করে তারা। ১৩৭ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। এছাড়া করবিন বশের ব্যাট থেকে আসে মহামূল্যবান ২৫ রান। এই ইনিংসে আসে ১৫৩ রান।
প্রথম ইনিংসে ৩০ রানের লিড থাকায় ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৪ রান। সহজ লক্ষ্য পেলেও ইডেনে তা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। দলের খাতায় ১ রান যোগ হতেই ফেরেন দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল (০) ও লোকেশ রাহুল (১)।
এরপর ওয়াসিংটন সুন্দর ও ধ্রুব জুরেলরা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও সব তছনছ করে দেন স্পিনার সিমন। সুন্দর ৩১ আর শেষদিকে অক্ষর প্যাটেল ২৬ রান করেন। দল থামে ৯৩ রানে।
প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৪ উইকেট তুলে নেন সিমন হার্মার। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন মার্কো জানসেন ও কেশভ মহারাজ। এই হারে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা।
বোলারদের একচ্ছত্র দাপট থাকা ম্যাচে চার ইনিংসের একটিতেও ২০০ রান হয়নি। ১৯৫৯ সালের পর এই প্রথম কোনো ম্যাচে দেখা গেল এমন ঘটনা। আর পুরো ৪ ইনিংসে ফিফটি ছিল মাত্র ১টি।



