জাহানারা আলম মুখ খোলার পর থেকে যেন নড়েচড়ে বসেছে দেশের ক্রিকেট। ক্রিকেটাররাও ভাঙতে শুরু করেছেন নীরবতা। নারী ক্রিকেটারদের হেনস্তায় বের হয়ে আসছে অনেক বড় নাম, নাম উঠে এসেছে নাজমুল আবেদিন ফাহিমেরও।
রোববার জাতীয় এক দৈনিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক নারী ক্রিকেটার রেশমা আক্তার আদুরিও মেয়েদের নিপীড়ন ও নিষ্পেষণের অন্ধকার অতীত তুলে ধরেছেন। দাবি করেছেন- প্রায় সব নারীদের সাথেই ঘটেছে এমন ঘটনা।
সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে আদুরি বলেন- ‘বিসিবির নারী বিভাগে যত পুরুষ কাজ করেছেন, সেটি বিভাগীয় প্রধান থেকে শুরু করে ইনচার্জ বা অন্যান্য দায়িত্বে থাকা পুরুষরা—তাদের শতকরা ৮০ ভাগই মেয়েদের উত্যক্ত করেছেন।’
‘নানা সময়ে কুপ্রস্তাব দেয়া থেকে শুরু করে যতভাবে ‘অ্যাবিউজ’ করা যায়, তারা সেটি করেছেন। এবং জাতীয় দলের শতকরা ৯৯ ভাগ ক্রিকেটারই এসবের শিকার হয়েছেন।’ যোগ করেন তিনি।
‘এখানে বলে রাখি, হাবিবুল বাশার স্যার সম্পর্কে আমি খারাপ কিছু কখনো শুনিনি। উনি অবশ্য নারী বিভাগে বেশিদিন ছিলেনও না। তবে বেশির ভাগেরই সমস্যা ছিল।’ এরপর বড় ধাক্কাটা দেন আদুরি।
বিসিবির বর্তমান পরিচালক ও অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে নিয়েও আঙুল তুলেন আদুরি। স্পষ্ট করেই বলেন- ‘অনেক মেয়ের কাছ থেকেই আমি উনার চারিত্রিক সমস্যার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি।’
‘আর উনার বিরুদ্ধে চরম পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তো আছেই। বিকেএসপির মেয়েরা ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো মেয়ে ক্রিকেট খেলতে পারে বলে উনি মনেই করেন না। কোরাম শুধু নিগার সুলতানা জ্যোতির একার নয়, ফাহিম স্যারেরও কোরাম আছে।’
আদুরির তালিকায় আছে চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে ইনচার্জ ও নির্বাচক পর্যন্ত অনেকেই। বলেন- ‘ভুলু স্যার (আব্দুল আউয়াল, বিসিবির সাবেক পরিচালক ও নারী বিভাগের প্রধান) যে কতভাবে জাহানারাকে উত্যক্ত করেছে, ক্রিকেট বোর্ডে অনেকেরই তা অজানা নয়।’
‘নির্বাচক সজল চৌধুরী স্যারের কথাও বলতে হয়। উনার কুপ্রস্তাবের শিকার অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ের অনেক ছোট ছোট মেয়ে। উনার নোংরামি নিয়ে অনেক অভিযোগ আমার কাছে আসে। খেলাঘরের রুহুল আমিন যে কত মেয়ের নিপীড়ক, বোর্ডের হর্তাকর্তারা একটু খবর নিলেই সেটা জানতে পারবেন।’
এদিকে এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করেছে ক্রিকেট বোর্ড। তারা হলেন- ম্যানেজার এস এম গোলাম ফায়েজ, ফিজিও সুরাইয়া আক্তার, কোচ মাহমুদ ইমন ও কর্মকর্তা সারফরাজ বাবু।



