যেখানে যাওয়ার কথা, সেখানে হয়তো পৌঁছাতে পারেননি মোস্তাফিজ, তবে তিনি নিজেকে যেখানে নিয়ে গেছেন বাংলাদেশের জন্য সেটাও অনেক বড় প্রাপ্তি। যার একটা ঝলক দেখা গেল গতরাতে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
দুবাইয়ে শনিবার টসে হেরে আগে ব্যাট কর ৭ উইকেটে ১৬৯ রানের বিশাল পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। যেখানে তারা শেষ ৬ ওভারেই তোলে ৭০ রান! যেখানে মোস্তাফিজ ২ ওভারে দেন মাত্র ১১ রান।
অথচ ১৫তম ওভারে নাসুম ১৭, ১৬তম ওভারে তাসকিন ১৪, ১৮তম ওভারে শরিফুল ১৮ ও শেষ ওভারে তাসকিন এসে দেন ১০ রান। মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে এখানেই অন্যদের পার্থক্য পরিষ্কার।
সহজ করে বললে কেবল মোস্তাফিজের জন্য শ্রীলঙ্কার পুঁজি দুই শ’-এর কাছাকাছি পৌঁছায়নি। ফলে বাংলাদেশ ম্যাচটা জিতে নেয় ১ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে। অন্যথায় ফলাফল ভিন্নও হতে পারত।
দলকে জেতানোর পথে সব মিলিয়ে ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দেন মোস্তাফিজ, শিকার করেন ৩ উইকেট। তাতেই মোস্তাফিজ গড়েছেন অনন্য এক কীর্তি, বসে গেছেন সাকিব আল হাসানের পাশে।
১৪৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচ শুরু করা মোস্তাফিজ প্রথমে আউট করেছেন কুশল পেরেরাকে। আর এরপর নিজের শেষ ওভারে তিন বলের মাঝে ফেরান কামিন্দু মেন্ডিস (১) ও হাসারাঙ্গাকে (২)।
শেষ তিন বলে জোড়া উইকেট নিয়ে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বনে গেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। যদিও সিংহাসনটা ভাগ করতে হয়েছে সাকিবের সাথে।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাকিব ও মোস্তাফিজের উইকেট সংখ্যা এখন ১৪৯। সাকিব ১৪৯ উইকেট নিয়েছেন ১২৯ ম্যাচে। মোস্তাফিজ তাকে ছুঁয়ে ফেলেছেন ১১৭তম ম্যাচেই।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় মোস্তাফিজ এখন সাকিবের সাথে যৌথভাবে চতুর্থ স্থানে। তাদের চেয়ে বেশি উইকেট আছে ইশ সোধি (১৫০), টিম সাউদি (১৬৪) ও রশিদ খানের (১৭৩)।
সাকিব এবং সাউদি দু’জনই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলে দিয়েছেন। ফলে মোস্তাফিজের টি-টোয়েন্টিতে সেরা বোলার হওয়া লড়াইটা চলবে রশিদ খান ও সোধির সাথে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টির নতুন ‘রাজা’ এখন লিটন দাস। ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসানের শ্রেষ্ঠত্বের রাজমুকুট দখলে নিয়েছেন তিনি। বনে গেছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজে ফিফটির রেকর্ডে সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়েছেন লিটন দাস। চলতি এশিয়া কাপে ছক্কায় তিনি পেছনে ফেলেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। এবার রানের হিসাবেও সাকিবকে টপকে চূড়ায় উঠে গেছেন লিটন। ১১৪ ম্যাচ ও ১১২ ইনিংসের ক্যারিয়ারে সাকিবকে ছাড়িয়ে তার সংগ্রহ এখন ২ হাজার ৫৫৬ রান।
যেখানে অলিখিত অবসরের আগে ১২৯ ম্যাচ ও ১২৭ ইনিংসে ২ হাজার ৫৫১ রান করেছেন দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার। লিটন, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ ছাড়া বাংলাদেশের আর কারো নেই ২ হাজার রান।
এছাড়া মাহমুদউল্লাহর ৭৭ ছক্কা টপকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছক্কার মালিক লিটন, তার ছক্কা সংখ্যা এখন ৭৮। এছাড়া সাকিবের ১৩ ফিফটির রেকর্ড ভেঙে ১৫টি ফিফটি নিয়ে সবার উপরে আছেন লিটন।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের বিশ্ব রেকর্ড রোহিত শর্মার। ১৫১ ইনিংসে করেছেন ৪ হাজার ২৩১ রান। আর পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম, ১২১ ইনিংসে করেন ৪ হাজার ২২৩ রান।