দুই দলের দুই ব্যাটারের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আলোর কাছে পরাজিত হলো সফরকারী আফগানিস্তানের যুবারা। আফগানিস্তানের ছুড়ে দেয়া ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ২৩১ রান করার পর আলো স্বল্পতায় বৃষ্টি আইনে ৫ রানে জিতলো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দলের পক্ষে সেঞ্চুরিয়ান কালাম সিদ্দিকী এ্যালেন প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন। ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ।

আজ দারুণ একটি শতক হাঁকান কালাম সিদ্দিকী এ্যালেন
আফগানিস্তানের ছুঁড়ে দেয়া ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। দলীয় ১৫ রানে দুই ব্যাটারকে হারিয়ে থমকে যায় যুব টাইগাররা। ৬০ রানে ৩য় উইকেটের পতনের পর গ্যালারি ভর্তি দর্শকরা স্তম্ভিত হয়ে যান। কিন্তু মিডল অর্ডারে কালাম সিদ্দিকী এ্যালেন এবং রিজান হোসেনের সাহসী ব্যাটিং আবারো দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে থাকে। দুজনের ১৩৯ রানের জুটি শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের মাতিয়ে তোলে। দর্শকদের মুহুর্মুহু ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে নেচে ওঠে গোটা স্টেডিয়াম। এরই মাঝে সেঞ্চুরি তুলে নেন এ্যালেন।
কিন্তু এক রান পরেই ১০১ রান করে এ্যালেন সাজঘরে ফেরার পর আবারো হোঁচট খায় বাংলাদেশ। কিন্তু অপর প্রান্তে রিজান একের পর এক চার মেরে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন। অবেশষে ৪৬ ওভার শেষে বাংলাদেশ দলের রান যখন ৪ উইকেটে ২৩১, তখন আলো স্বল্পতায় খেলা শেষ করে দেন আম্পায়ার। অবশেষে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশকে ৫ রানে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। রিজান হোসেন অপরাজিত ছিলেন ৭৫ রানে। আফগানদের পক্ষে ওয়াহিদুল্লাহ জাদরান ২টি উইকেট লাভ করেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান যুব দল। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৫ রান করার পর আফগান শিবিরে প্রথম আঘাত হানে বাংলাদেশ। ৫৬ রানে ২য় উইকেটের পতনের পর ঘুরে দাঁড়ায় আফগানিস্তান। শেষমেষ মিডল অর্ডার ব্যাটার উজাইরুল্লাহর হার না মানা ১৪০ রানে ভর করে ৯ উইকেটে ২৬৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে সফরকারীরা।
উজারুল্লাহ ১৩৭ বলে ১টি ছক্কা ও ১৬টি বাউন্ডারিতে এই রান করেন। দলের হয়ে খালিদ আহমাদজাই ৩৪ এবং ফয়সাল সিনোজাদা ৩৩ রান করেন। বাংলাদেশ দলের ইকবাল হোসেন ইমন ৫৭ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন। রিজান হোসেন ২টি, সবুজ ও আজিজুল হাকিম ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
ম্যাচ শেষে বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার প্রদান করেন। বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন ও ম্যাচ রেফারি সেলিম সাহেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এই জয়ের ফলে ৫ ম্যাচের ওানডে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশের যুবারা। আগামী শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৯টায় ২য় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে। বিনা টিকিটেই দর্শকরা এই ম্যাচটিও দেখার সুযোগ পাবেন।
দীর্ঘ ১৯ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ পেতে সকাল থেকেই দর্শকদের স্রোত নেমে আসে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে। বেলা বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে দর্শক। ১৮ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামের প্রায় বেশরভাগই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আনুমানিক ১২ হাজারের মতো দর্শক মাঠে বসে যুব ক্রিকেটারদের খেলা উপভোগ করেন।
কিন্তু ম্যাচের ৪ ওভার বাঁকি থাকতেই আলোর ঘাটতিতে খেলা শেষ হওয়ায় দর্শক হতাশ হয়ে বাড়ি ফেরেন। অনেকে বোতল ছুঁড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্টেডিয়ামের চারপাশে ফ্লাডলাইটের বিশাল চারটি টাওয়ার দাঁড়িয়ে থাকলেও শুধুমাত্র আলোর অভাবে একটি জমজমাট খেলা বন্ধ হওয়া মেনে নিতে পারেননি দর্শকরা। তারা অতিদ্রুত ফ্লাডলাইট চালুর দাবি জানান।



