এশিয়া কাপ শেষ বাংলাদেশের। চ্যাম্পিয়ন হবার স্বপ্ন সাথে নিয়েই ঘরে ফিরছে টাইগাররা। ফুরোয়নি ফাইনালে ওঠার অপেক্ষা। ‘অলিখিত সেমিফাইনালে’ পাকিস্তানের কাছে ১১ রানে ধরাশায়ী জাকের আলি বাহিনী।
এশিয়া কাপ ফাইনালে দেখা মিলবে ভারত-পাকিস্তান লড়াই। টুর্নামেন্টের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো ফাইনালে মুখোমুখি হবে এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। হাইভোল্টেজ ফাইনাল গড়াবে ২৮ সেপ্টেম্বর।
অথচ বোলাররা তাদের কাজটা করে দিয়েছিলেন, পাকিস্তানকে ১৩৫ রানেই আটকে দেন। তবে ব্যাটাররা পারেননি এই রানটাও তাড়া করতে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৯ উইকেটে তুলে ১২৪ রান।
১৩৬ রানের সহজ লক্ষ্যটাও কঠিন হয়ে উঠে প্রথম ওভারেই। শাহিন আফ্রিদির বলে রানের খাতা খোলার আগে ফিরেন পারভেজ ইমন। ১ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
আগের দুই ম্যাচে ফিফটি হাঁকানো সাইফ হাসান আজ দেখেশুনেই খেলতে থাকেন। সাথে ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তবে জুটি জমেনি। ৪.২ ওভারে ফেরেন হৃদয়, ১০ বলে ৫ করে শাহিনের শিকার তিনি।
চারে নামেন শেখ মেহেদী। তবে তাকে রেখেই ৫.১ ওভারে ফিরেন সাইফ। ১৫ বলে ১৮ রান করে হারিস রউফের বলে ক্যাচ দেন সাইমকে। পাওয়ার প্লে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৬/৩।
শেখ মেহেদী ও নুরুল হাসান সোহান মিলে এরপর যোগ করেন ১৭ বলে ১৫ রান। এই জুটি ভাঙেন নাওয়াজ, ১০ বলে ১১ রানে ফেরেন তিনি। সোহানের ইনিংসটাও বড় হয়নি, সাইমের বলে ফেরেন ২১ বলে মাত্র ১৬ করে।
১১.৪ ওভারে ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর মাঠে আসেন অধিয়ায়ক জাকের আলি। তবে ফিরতেও সময় লাগেনি, ৯ বলে ৫ রান করতেই শেষ হয় তার ইনিংস। একপ্রান্ত ধরে খেলতে থাকেন শামিম।
১৭তম ওভারে এসে শামিমকে ফেরান শাহিন আফ্রিদি। ২৫ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩০ রান নিয়ে ফেরেন শামিম। এরপর তানজিম সাকিব ১০ ও তাসকিন করেন ৪ রান। একই ওভারে দু’জনকেই ফেরান হারিস রউফ।
হারিসেরই শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। এক ২ বলে লাগতো ১২। তবে সেই সমীকরণ মেলানো যায়নি। হারিস রউফ ও শাহিন আফ্রিদি নেন ৩টি করে উইকেট।
এর আগে দুবাইয়ে এদিন নিয়মিত অধিনায়ককে ছাড়া জাকের আলিই আসেন টস করতে। নেন আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত। অধিনায়ক জাকের প্রথম ওভারেই বল তুলে দেন তাসকিনের হাতে।
গত ম্যাচে একাদশে না থাকা এই পেসার চতুর্থ বলেই পেয়েছেন উইকেটের দেখা। মাত্র ৪ রানে ভেঙেছে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। তাসকিন ফেরান সাহিবজাদা ফারহানকে (৪)।
পরের ওভারে আঘাত আনেন শেখ মেহেদী। তিনিও ভারতের বিপক্ষে ছিলেন না দলে। সেই আক্ষেপ মেটান প্রথম ওভারেই তার শিকার সাইম আইয়ুব (০)। ৫ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
এরপর আঘাত আনেন রিশাদ হোসেন। জোড়া শিকার তার। প্রথমে ফখর জামানকে ফেরানোর পর হোসাইন তালাতকে ফিরিয়েছেন তিনি। যা ভেঙে দেয় পাকিস্তানের ইনিংসের মেরুদণ্ড।
৬.৩ ওভারে তানজিম সাকিবকে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ফখরের ২০ বলে ১৩ রানের ইনিংস। সেই ওভারে দেন মাত্র ২ রান। পরের ওভারের প্রথম বলে এসেই ফেরান হোসাইন তালাতকে। তালাত ফেরেন ৭ বলে মাত্র ৩ করে।
৯ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৭/৪।
সালমান আগা ও মোহাম্মদ হারিস মিলে সেখান থেকে হাল ধরার চেষ্টা করেন। তবে সালমানকে ফিরিয়ে সেই চেষ্টা ব্যর্থ করেন মোস্তাফিজ।
সালমান ফেরেন ২৩ বলে ১৯ করে। ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ষষ্ঠ উইকেটটাও চলে আসতো পারতো, তবে ঝাঁপিয়ে পড়েও শাহিন আফ্রিদির ক্যাচটা নিতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান।
এরপর আরো একবার জীবন পান শাহিন। সুযোগ পেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাট করতে থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১২ বলে ১৯ রান করা শাহিনকে থামান তাসকিন। এরপর মোহাম্মদ নাওয়াজকে নিয়ে জুটি বাঁধেন হারিস।
এই জুটিই পাকিস্তানকে পৌঁছায় তিন অঙ্কে। ২৪ বলে ৩৮ রান আসে জুটিতে। হারিসকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মেহেদী, ২৩ বলে ৩১ করে আউট হন তিনি। নাওয়াজ ফেরেন ১৫ বলে ২৫ করে।
১৮.২ ওভারে ১২০ রানে ৮ম উইকেট হারায় পাকিস্তান। এরপর ফাহিম আশরাফের ৯ বলে ১৪ রানে ১৩৫ পর্যন্ত পৌঁছায় পাকিস্তান। বলা যায় বল হাতে নিজেদের কাজটা করে দিয়েছেন বোলাররা।
তাসকিন আহমেদ ২৮ রানে ৩, শেখ মেহেদী ২৮ রানে ২ ও রিশাদ হোসেন ১৮ রানে নেন ২ উইকেট।