রেকর্ড রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। ৫ রানেই হারায় ৩ উইকেট, ১৮ রানে পতন হয় চতুর্থ উইকেটের। যে ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি টাইগাররা। হেরেছে ৩৯ রানে।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বৃহস্পতিবার আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৮১ রানের সংগ্রহ পায় আইরিশরা। বিপরীতে তাওহীদ হৃদয়ের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসের পরও বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১৪২ রানে।
র্যাঙ্কিংয়ের দিকে তাকালে খুব একটা পার্থক্য নেই বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মাঝে। তবে নাম হিসেবে বাংলাদেশ অনেকটাই এগিয়ে। তবে আজ চট্টগ্রামে তার ছিটাফোঁটাও দেখা গেলো না, পাত্তাই পায়নি আইরিশদের সাথে।
নিজেদের ঘরের মাঠে কখনো ১৬৬ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি বাংলাদেশ। সিলেটে গতবছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৬ রানের লক্ষ্যে সহজেই জিতেছিল তারা। জিততে হলে আজ সেটি ছাপিয়ে যেতে হতো।
এদিকে চট্টগ্রামের মাঠ রান প্রসবা হলেও এতো রান তাড়া হয়েছে মাত্র ১ বার। ফলে আজ জিততে হলে অনেকটা অসম্ভবকে সম্ভব করতে হতো বাংলাদেশকে। তবে সেই পথ থেকে শুরুতেই ছিটকে যায় টাইগাররা।
একদম প্রথম ওভারেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি, দলীয় ২ রানের মাথায় ম্যাথু হামফ্রিসের শিকার হন তানজিদ তামিম (২)। পরের ওভারেই ফেরেন লিটন দাস, ৩ বল খেলে ১ রানে শেষ হয় তার ইনিংস।
১ রানের বেশি করতে পারেননি আরেক ওপেনার পারভেজ ইমনও। ৬ বল খেলে মার্ক অ্যাডেরের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ৩.৩ ওভারে মাত্র ৫ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সাইফ হাসান ও তাওহীদ হৃদয় মিলে এরপর হাল ধরার চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি। ৫.৩ ওভারে সাইফের স্ট্যাম্প ভেঙে দেন বেরি ম্যাকার্থি। ১৩ বলে ৬ রান নিয়ে আউট হন তিনি।
পাওয়ার প্লে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০/৪। সেখান থেকে তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী মিলে পরিস্থিতি সামলে নেয়ার চেষ্টা করেন। দুজনে পরের ৩৩ বলে যোগ করেন ৪৮ রান।
তবে এরপর আবার নামে বিপর্যয়। ১৬ বলে ২০ রান করা জাকের আলীকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন সেই ম্যাকার্থি। এরপর যা হয়, তা ভুলে যেতে চাইবে বাংলাদেশ। এক ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে দল।
ম্যাথু হামফ্রিসের এমন বিধ্বংসী বোলিংয়ের শিকার তানজিম সাকিব (৫), রিশাদ হোসেন (০) ও নাসুম আহমেদ (০)। ৭৪ রানে ৮ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে তাওহীদ হৃদয় হাল ছাড়েননি।
শরিফুলকে সাথে রেখে ১৬তম ওভারে এসে ৩৪ বলে তুলে নেন নিজের ফিফটি, একইসাথে বাংলাদেশ পৌঁছায় তিন অঙ্কে। এই জুটি ভাঙে ১৮ ওভার শেষে, শরিফুল আউট হন ১৩ বলে ১২ করে।
এরপর মোস্তাফিজকে নিয়ে ইনিংসের ইতি টানেন তাওহীদ হৃদয়। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ৫০ বলে ৮৩ রান করেG বল হারে ম্যাথু হামফ্রিস ৪ ও ম্যাকার্থি নেন ৩ উইকেট।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় আয়ারল্যান্ড। পল স্টার্লিং ও টিম টেক্টর মিলে যোগ করেন ৪০ রান। তবে পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে পল স্টার্লিংকে থামান তানজিম সাকিব।
টাইমিং মিস করে আকাশে তুলেছিলেন স্টার্লিং, সাইফ হাসান নিয়েছেন ক্যাচটি। ১৮ বলে ২১ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো জুটি বাঁধেন দুই ভাই হ্যারি টেক্টর ও টিম টেক্টর।
৯ম ওভারে এসে এই জুটি ভাঙেন রিশাদ হোসেন। ২৪ বলে ৩১ রান করা টিম টেক্টরকে তানজিদ হাসানের ক্যাচ বানান তিনি। ৭১ রানে ২ উইকেট হারায় আইরিশরা। তবে হ্যারি টেক্টর থামেননি, ফিফটি তুলে নেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলে ১ চার ৫ ছক্কায় ৪৫ বলে ৬৯ করে। বিপরীতে ছোট ছোট, তবে কার্যকরী ইনিংস খেলেন লরকান টাকার (১৮) ও কার্টিস ক্যাম্ফার (২৪)। তানজিম সাকিব ৪১ রানে ২ উইকেট নেন।



