স্বপ্ন সত্যি করে যা বললেন মুশফিক

এই টেস্টকে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টেস্ট না বলে ‘মুশফিকের টেস্ট’ বললেই বোধহয় ভালো হবে। এই ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকে শততম টেস্ট খেলার কীর্তি গড়লেন মুশফিকুর রহিম।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
শততম টেস্টের আগে মুশফিকুর রহিমকে বিশেষ ক্যাপ পরিয়ে দেন হাবিবুল বাশার সুমন
শততম টেস্টের আগে মুশফিকুর রহিমকে বিশেষ ক্যাপ পরিয়ে দেন হাবিবুল বাশার সুমন |ইন্টারনেট

‘বাংলাদেশের হয়ে কেউ ১০০ টেস্ট খেলবেন’- বিষয়টা অনেকটা স্বপ্নের মতোই ছিল। সেই স্বপ্ন সত্যি করেছেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে সাদা পোশাকে বুধবার খেলছেন নিজের শততম টেস্ট।

প্রথম টেস্ট জিতে ইতোমধ্যেই সিরিজে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ, আজ সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নেমেছে টাইগাররা। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয় খেলা।

এই টেস্টকে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টেস্ট না বলে ‘মুশফিকের টেস্ট’ বললেই বোধহয় ভালো হবে। এই ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকে শততম টেস্ট খেলার কীর্তি গড়লেন মুশফিকুর রহিম।

প্রায় দেড় শ’ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ৮৩ জন ক্রিকেটার খেলেছেন ১০০ ম্যাচ। এই তালিকায় ৮৪তম সংযোজন হতে যাচ্ছে মুশফিকের নাম। সময়ের হিসেবে এই সেঞ্চুরি করতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগছে তারই।

২৬ মে ২০০৫ সালে অভিষেক হওয়া মুশফিক ২০ বছর ৫ মাস ১২৪ দিনের মাথায় খেলতে যাচ্ছেন শততম টেস্ট।

এর আগে শততম টেস্ট খেলতে সবচেয়ে বেশি সময় লেগেছিল ইংল্যান্ডের গ্রাহাম গুচের, ১৭ বছর ২০৩ দিন।

সবচেয়ে কম সময়ে শততম টেস্ট খেলার রেকর্ড সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুকের, মুশফিকের এক বছর পর অভিষেক হওয়া সাবেক এই ব্যাটার মাত্র ৭ বছর ২৮৭ দিনের মধ্যে খেলে ফেলেছিলেন শততম টেস্ট।

অর্থাৎ আরাধ্য এই কীর্তি গড়তে মাঠেই কেবল নয়, মাঠের বাহিরেও ধৈর্যের কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে মুশফিককে। প্রায় ২১ বছর টেস্ট খেলা মোটেও সহজ কিছু নয়!

এদিকে মুশফিকের এই কীর্তি ঘিরে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই বোর্ড কর্তাদের। এই মাইলফলক রাঙাতে ম্যাচ শুরুর আগে ১০ মিনিটের বিশেষ আয়োজন রেখেছিল বিসিবি। যেখানে নানাভাবে মুশফিককে সম্মান জানানো হয়।

আয়োজনের শুরুটা হয় মুশফিকের অভিষেক টেস্টের অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনকে দিয়ে। আজ শততম টেস্টের আগে তাকে বিশেষ ক্যাপ পরিয়ে দেন সুমন। অভিষেক টেস্টেও তাকে ক্যাপ পরিয়ে দিয়েছিলেন তখনকার এই অধিনায়ক।

বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ক্রিকেটার আকরাম খানও মুশফিককে বিশেষ একটি ক্যাপ তুলে দেন। তাকে বিশেষ ক্রেস্ট তুলে দেন বর্তমান বিসিবি সভাপতি ও অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম ও বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন।

মুশফিকের প্রথম ও শততম টেস্টের সতীর্থদের সিগনেচার করা জার্সি উপহার দিয়েছেন শততম টেস্টের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এই সময় তিনি মুশফিককে উদ্দেশ করে ছোট বক্তব্যও রাখেন।

তিনি বলেন, ‘অভিনন্দন, মুশফিক ভাই। এটা আপনার ও আপনার পরিবারের জন্য গর্বের মুহূর্ত। আমরা আপনাকে ছোটবেলা থেকে অনুসরণ করেছি, আপনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে। আমি আশা করি, মাঠে ও বাইরে আপনি যে কঠোর পরিশ্রম করেন, সেটা চালিয়ে যাবেন। আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আপনি সবসময় দলের জন্য খেলেন। আপনি নিজের নয়, দলের কথা চিন্তা করেন।’

এদিকে নিজের এমন ইতিহাস গড়া মুহূর্তে ছোট বক্তব্য রাখেন মুশফিকুর রহিমও। ধন্যবাদ জানান বোর্ড কর্তা, মা-বাবা, স্ত্রী, কোচ, সতীর্থ ও ভক্ত-সমর্থকদের।

মুশফিকুর রহিম বলেন, ‘এখানে উপস্থিত সবার প্রতি ধন্যবাদ, আমার পরিবার, স্ত্রী, সতীর্থরা, বন্ধু ও ভক্তদের। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাই। তাদের জন্য আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব। আয়ারল্যান্ড দলকেও এখানে থাকার জন্য ধন্যবাদ।’