রেকর্ড সিরিজ জয়ের খুব কাছেই ছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজ জিততে পারলে ইতিহাস গড়ত টাইগাররা। এর আগে যা কখনো পারেনি তারা। মঞ্চও প্রস্তুত ছিল, প্রস্তুত ছিল সমর্থকেরাও।
বাংলাদেশ দলও সিরিজ শুরু করেছিল ফেবারিটের তকমা নিয়ে। ওয়ানডে সিরিজে সফরকারীদের হারিয়েই টি-টোয়েন্টির মিশনে নেমেছিল লিটন দাসের দল। শক্তি, সামর্থ্য বা ইতিহাস, সব দিকেই এগিয়ে ছিল টাইগাররা।
গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে তাদেরই হোয়াইট ওয়াশের সুখস্মৃতি টনিক হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের। টনিক হয়েছিল নেপালও, বাংলাদেশে আসার আগে নেপালের কাছেও সিরিজ হারে ক্যারিবীয়রা।
এদিকে ঘরের মাঠ, গ্যালারি ভর্তি হাজারো সমর্থক- অনুপ্রেরণা হতে পারতো তারাও। তবে এসব কিছুও উজ্জীবিত করতে পারেনি টাইগারদের। টানা তিন ম্যাচ হেরে হাতছাড়া করেছে সিরিজ।
ঘরের মাঠে ৪ বছর পর হোয়াইট ওয়াশ হলো বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছিল টাইগাররা। এরপর সিরিজ হারলেও ঘরের মাঠে হোয়াইট ওয়াশ হয়নি।
প্রথম ম্যাচে ১৬৫ রান তাড়া করতে নেমে ১৬ রানে হারে বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয় ম্যাচে লক্ষ্য ছিল আরো মামুলি, করতে হতো ১৫০ রান। তবে এই সমীকরণও মেলাতে পারেনি টাইগাররা, হেরে যায় ১৪ রানে।
শেষ ম্যাচেও হারের বড় কারণ ব্যাটিং ব্যর্থতা। তানজিদ তামিমের ৬১ বলে ৮৯ রানের পরও কোনোরকমে ১৫১ রান করে দল। যেখানে বাকি ৯ ব্যাটার মিলে করেন ৫৪। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আসামির কাঠগড়ায় ব্যাটাররা।
এমনকি দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে দাঁড়িয়ে বোলারদের কাছে রীতিমতো দুঃখ প্রকাশ করেন লিটন দাস। শুক্রবার সিরিজ শেষেও ব্যাটারদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করলেন লিটন।
তিনি বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ দারুণ বোলিং করেছে, আর আমাদের ব্যাটিং প্রত্যাশা মতো হয়নি। তবে এমন খারাপ সিরিজ মাঝে মাঝে আসতেই পারে। এটা তেমন উদ্বেগ নয়। দলের ক্রিকেটাররা পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ। কখনো কখনো সবকিছু পরিকল্পনা মতো হয় না।’
টানা খেলার ধকল দলকে ক্লান্ত করে তুলেছে দাবি করে লিটন বলেন, একটা বিরতি তাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে পুনরুজ্জীবিত করবে। অবশ্য ভুল বলেননি লিটন। টানা খেলার মাঝেই আছে বাংলাদেশ।
গত মে মাসের পর থেকে টানা খেলার মাঝেই আছে টাইগাররা। টানা ৭ সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ, মাঝে খেলেছে এশিয়া কাপেও। সামনে অবশ্য আছে ব্যস্ত সূচি। তবে মাঝে কিছুদিন সময় পাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পরবর্তী মিশন আয়ারল্যান্ড সিরিজ। সিলেটে আগামী ১১ নভেম্বর শুরু হবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। এরপর পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দু’দল। এই ১০ দিনের বিরতি কাজে লাগাতে চান লিটন।
তিনি আরো বলেন, ‘এই দলটা টানা খেলছে। ফিটনেস ক্যাম্প, একের পর এক সিরিজ, এশিয়া কাপ, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি। ক্লান্তি আসবেই। আয়ারল্যান্ড সিরিজের আগে যে বিরতি আসছে, তা খেলোয়াড়দের অন্তত ১০ দিন সময় দেবে নিজেদের রিচার্জ করার।’
সিরিজটা হতাশাজনকভাবে শেষ হলেও লিটন আশাবাদী দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে। ক্রিকেটারদের উপর আস্থা রেখে তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়রা জানে কোথায় উন্নতি করতে হবে। অল্প কিছু বিশ্রাম আর লক্ষ্যভিত্তিক অনুশীলনেই তারা আগের ছন্দে ফিরবে এবং প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দিতে পারবে।’
 


