স্কোরবোর্ডে ১৭১ রান তুলে হয়তো লড়াই করার স্বপ্নই দেখছিল পাকিস্তান, অনেকে হয়তো জয়ের স্বপ্নেও বিভোর ছিল। তবে সেই স্বপ্ন ভেঙে যায় উদ্বোধনী জুটিতেই। লড়াইয়ের সুযোগ রাখেননি অভেষেক- শুভমান।
ফলে আবারো ভারতের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ সালমান আগাদের। এশিয়া কাপের সুপার ফোরেও ধরাশায়ী ম্যান ইন গ্রিনরা। এবারো হার ৬ উইকেটে। পাকিস্তানের দেয়া লক্ষ্য ৭ বল বাকি থাকতেই পেরিয়ে যায় ভারত।
এই জয়ে ইতিহাস গড়লো ভারত। ২০২২ সাল থেকে টানা ছয় ম্যাচে পাকিস্তানকে হারালো তারা। দুই দলের ৭৩ বছরের ইতিহাসে পাকিস্তান বা ভারত কখনোই একে অন্যকে টানা পাঁচ ম্যাচের বেশি হারাতে পারেনি আগে।
পাকিস্তান ভারতের বিপক্ষে শেষ জয় পেয়েছে তিন বছর আগে ২০২২ এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে, এই দুবাইয়েই। এরপর থেকে টানা ছয় ম্যাচে হারলো দলটা। মাঝে এক ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যায় বৃষ্টিতে।
দুবাইয়ের এ ম্যাচে পাকিস্তানের জয়ের স্বপ্ন ভেঙে দেন শুভমান গিল ও অভিষেক শর্মা। দু'জনে গড়েন ৯.৪ ওভারে ১০৫ রানের জুটি। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে যার শুরু করেন অভিষেক, ফিফটি তুলে নেন তিনি মাত্র ২৪ বলেই।
শাহিন আফ্রিদি, হারিস রউফ, আবরার আহমেদদের পাত্তাই দেননি; একের পর এক হাঁকিয়েছেন ছক্কা- বাউন্ডারি। কম যাননি শুভমানও, ঝড় উঠেছে তার ব্যাটেও। যদিও তার বিদায়েই ভাঙে জুটি।
২৮ বলে ৪৭ রান করা গিলকে ফেরান ফাহিম আশরাফ। উদযাপনের উপলক্ষ পায় পাকিস্তান। পরের উপলক্ষ আসতে অবশ্য আসতে সময় লাগেনি, রানের খাতা খোলার আগেই সূর্য কুমারকে ফেরান হারিস রউফ।
অভিষেক এরপর আরো কিছুটা সময় রানের গতি ধরে রাখেন। ১২.২ ওভারে আবরার আহমেদের শিকার হন ৫ চার ৬ ছক্কায় ৩৯ বলে ৭৪ করে৷ ১২৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। জয়ের জন্য তখন ৪৬ বলে চাই ৪৮।
সহজ এই সমীকরণ মেলাতে গিয়ে সাঞ্জু স্যামসনের (১৩) উইকেট হারালেও তিলক ভার্মা আর বিপদ আসতে দেননি। ১৯ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি৷ ৭ বলে ৭ রান করেন হার্দিক পান্ডিয়া।
অথচ মাঠে নেমে জয় খরা কাটানোর আভাস দিয়েছিল পাকিস্তান। ১০ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়েই ৯১ রান তুলে ফেলে পাকিস্তান। দেয় বড় সংগ্রহের আভাস। ৯ উইকেট হাতে রেখে সেখান থেকে দুই শ’ এর কাছাকাছি যাবার স্বপ্নই দেখছিল তারা। তবে তা আর হয়নি।
অদ্ভুতভাবে পরের ৫১ বলে আসে মাত্র ৫৮ রান! স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১৪৯। তবে শেষ দিকে ফাহিম আশরাফের ৮ বলে অপরাজিত ২০ রানে ১৭১ রানে পৌঁছায় পাকিস্তান। ১৩ বলে ১৭ করেন সালমান আগা।
এর আগে ব্যাট হাতে আজ সাহিবজাদা ফারহানের সাথে ওপেন করতে নামেন ফখর জামান। শুরুটাও হয় দারুণ। ৮ বলেই করেন ১৫ রান। তবে এরপরই বাঁধে বিপত্তি, ২.৩ ওভারে ফিরতে হয় তাকে ‘ভুল’ আউট হয়ে।
অবশ্য ফখর ফিরলেও ভালোই খেলতে থাকে পাকিস্তান। আর কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে ১০ ওভারে ৯১ রান। যা ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি প্রথম ১০ ওভারে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ।
তবে এরপর পথ হারায় পাকিস্তান। ১০.৩ ওভারে ভাঙে ফারহান ও সাইম আইয়ুবের মধ্যকার ৪৯ বলে ৭৩ রানের জুটি৷ সাইমকে ১৭ বলে ২১ রানে ফেরান শিভাম দুবে। তবে ততক্ষণে ফিফটি তুলে নিয়েছেন ফারহান।
এদিকে সাইম ফেরার পর দ্রুত আরো ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। হোসাইন তালাত ১১ বলে ১০ ও ১৪.১ ওভারে ফারহান ফেরেন ৪৫ বলে ৫৮ করে। থিতু হওয়া ব্যাটারদের হারিয়ে তখন বিপাকে দল।
তবে মোহাম্মদ নাওয়াজ ও সালমান আগা ধরেন হাল। তবে রানের গতিটা আর ধরে রাখতে পারেননি। ১৯ বলে ২১ করে আউট হন নাওয়াজ। এরপর ফাহিম ও সালমান মিলে মান বাঁচান।