কথায় আছে ‘বনের বাঘে খায় না, মনের বাঘে খায়’। শনিবার রাতে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও যেন তাইই হয়েছে। হারার আগেই যেন হেরে বসেছে, ‘রশিদ খান’ নামের ভারেই যেন বাংলাদেশের ব্যাটিং নুয়ে পড়েছে।
দলীয় ৫০ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল মেহেদী মিরাজের দল। যার তিনটিই নিয়েছিলেন আজমতুল্লাহ ওমরজাই। তবে সেখানেই শেষ নয়, বাংলাদেশকে ধসিয়ে দেয়ার আসল কাজটা করেন রশিদ খানই।
বাংলাদেশের শেষ ৬ উইকেটের ৫টিই গেছে রশিদ খানের ঝুলিতে। যেখানে শেষ ৪ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ২১ বলে, ৪ রানের বিনিময়ে। সব মিলিয়ে তার স্পেল ছিল ৮.৩-২-১৭-৫। ১৯১ রানের লক্ষ্যতেও হেরে যেতে আর কী লাগে!
রশিদের বিপক্ষে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। চলতি সিরিজের দুই ম্যাচে রশিদের ১১১ বল খেলে মাত্র ৫৫ রান করতে পারে বাংলাদেশ, যেখানে নেই কোনো বাউন্ডারি! উল্টা উইকেট দিয়ে এসেছে ৮টি!
গতকাল ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তাই দলের স্পিন কোচ মোশতাক আহমেদ তো বলেই ফেললেন, রশিদের বোলিংয়ের চেয়েও রশিদকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলছে বাংলাদেশ, যা দলের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে কাল।
তিনি বলেন, রশিদের নাম না দেখে তার বল দেখা উচিত বাংলাদেশের ব্যাটারদের। ’তারা যেন রশিদকে খেলছে, তার বল নয়। সে বলের অনেক বেশি স্পিন করায় না। অবশ্যই অনেক বড় বোলার। খুবই অভিজ্ঞ ও উইকেট শিকারি।’
মুশতাক যোগ করেন, ‘তার লাইন-লেন্থ খুব ধারাবাহিক। তাই আমার মনে হয় আমাদের বল দেখে খেলতে হবে, বোলারকে নয়। আমার মনে হয় এটাই সেই জায়গা যেখানে আমাদের দ্রুত উন্নতি করতে হবে।’ ।
এরপর দলকে পরামর্শ দিয়ে মুশতাক আহমেদ বলেন, ‘যদি তোমার মানসিকতা দৃঢ় হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে কোনো বোলারের বিপক্ষেই খেলতে পারবে। রশিদ বহু বছর ধরে আফগানিস্তানের হয়ে সফল। কিন্তু একইসাথে আমাদেরও জানা উচিত- বলকে খেলতে হবে, বোলারকে নয়।’
এদিকে চলতি সিরিজে ১১-৪০ ওভার পর্যন্ত দেশের ব্যাটসম্যানদের গড় রান মাত্র ১৮.৭০। আর চলতি বছরের হিসেবে মিডলঅর্ডারে গড় ২১.৮৬। ২০০৭ সালের পর গড় এত কমেনি আর কখনো!
যার সবচেয়ে বড় কারণ স্ট্রাইকরোটেট করতে না পারা।ফলে মাঝের এই ওভারগুলো ভালো করতে সিংগেলে মনযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুশতাক।
তিনি বলেন, ‘মাঝের ওভারে স্পিনারদের বিপক্ষে ভালো টেকনিক থাকতে হবে। ভালো বলেও কিভাবে সিঙ্গেল নেয়া যায় সেটা জানতে হবে। তুমি যদি স্ট্রাইক রোটেট করতে পারো, তাহলে সেটা তোমার চেয়ে বোলারের ওপর বেশি চাপ ফেলবে। আমার মনে হয়, যখন অনেক ডট বল হয়, তখনই বড় শট খেলার প্রয়োজন পড়ে, আর সেখানেই উইকেট হারানো শুরু হয়।’
মুশতাক আহমেদ যোগ করেন, ‘আমি নিজে একজন স্পিনার হিসেবে জানি, যেসব ব্যাটার সহজে রান নেয়-সিঙ্গেল ও ডাবল নেয়-তারা স্পিনারের ওপর অনেক চাপ তৈরি করে।’