আইপিএল

বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি: ক্রিকেটের এক কালো অধ্যায়

বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি যেন ক্রিকেটেরই এক কালো অধ্যায়। সুন্দরের মাঝে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর রূপ। কে জানতো শিরোপা মিছিল হয়ে উঠবে মৃত্যুর ফাঁদ! কোহলি-ক্রুনালরা কি জানতেন, তাদের শিরোপা জয় হয়ে দাঁড়াবে কাল?

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি
বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি |নয়া দিগন্ত

কি থেকে যেন কী হয়ে গেল! মুহূর্তেই সব বদলে গেল। হাসিমাখা মুখগুলোয় নেমে এলো বিষাদের ছায়া। সব উল্লাস চাপা পড়ল লাশে, পাগলাটে উন্মাদনার মাঝে ঝড়ে গেল ১১ প্রাণ! বেঙ্গালুর এখন বিভীষিকাময়।

বেঙ্গালুরু ট্র্যাজেডি যেন ক্রিকেটেরই এক কালো অধ্যায়। সুন্দরের মাঝে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর রূপ। কে জানতো শিরোপা মিছিল হয়ে উঠবে মৃত্যুর ফাঁদ! কোহলি-ক্রুনালরা কি জানতেন, তাদের শিরোপা জয় হয়ে দাঁড়াবে কাল?

আগের রাতেই প্রায় দেড়যুগের অপেক্ষা শেষে প্রথমবার আইপিএল শিরোপা জেতে রয়েল চ্যালেঞ্জার বেঙ্গালুর। ফুরোয় আঠারো বছরে হাপিত্যেশ। পরদিনও কমছিল না তার রেশ, বরং সময়ের সাথে আরো বাড়তে থাকে তেজ।

আহমেদাবাদে উল্লাস করে মন ভরেনি কোহলিদের, তাই পরদিনই নিজেদের মাঠ এম চেন্নাস্বামীতে শিরোপা নিয়ে হাজির হয় চ্যাম্পিয়ন দলটা। আর তখনই ঘটে মর্মান্তিক এই ঘটনা। বেঙ্গালুরুর উৎসবের মঞ্চ হয়ে উঠলো শোকের ক্যাম্পাস।

শুধু খেলোয়াড়দের একটিবার দেখার আশায়, ট্রফিটিকে ছুঁয়ে দেখার বাসনায় চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের দিকে ধেয়ে এসেছিল অসংখ্য সমর্থকেরা। কিন্তু সেই ভিড়ে হঠাৎ শুরু হয় হুড়োহুড়ি। আর তাতেই ঘটতে থাকে জীবন অবসান।

জানা যায়, পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান ১১ জন, আহতের সংখ্যা অর্ধশতকেরও বেশি। মৃত সকলের বয়স ৪০ এর কম। সবচেয়ে কম বয়সি যে মারা গিয়েছে তার বয়স মাত্র ১৩ বছর।

জানা গেছে প্রায় ৪ লাখ মানুষ চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের আশপাশে ভিড় করেন। এতে প্রবল বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। একাধিক প্রবেশপথে ভিড়ের চাপে নিয়ন্ত্রণ হারায় পুলিশ। বন্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও জরুরি সেবা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিপেটা করে পুলিশ। তাতেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। এরপরই বেঙ্গালুরুর ‘উই আর চ্যাম্পিয়ন' স্লোগান মুছে যায় কান্নায়, চাপা আর্তনাদে আর থমকে যাওয়া জীবনাশঙ্কায়।

এদিকে এমন ঘটনার জন্য এক পক্ষ দায়ী করছে আরেক পক্ষকে। প্রশাসনের চোখে ভুল করেছে বেঙ্গালুরু ম্যানেজার। অন্যদিকে তাদের দাবি প্রশাসন সঠিক নিরাপত্তা দিতে পারেনি। তবে দায়ী যেই হোক, হারানো স্বজন তো আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।

যাহোক, এই ঘটনায় গভীর হতাশা ছড়িয়ে পড়ে দেশের সর্বস্তরে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন।

এদিকে মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনায় শোক জ্ঞাপন করেছে আরিসিবি। সরিয়ে ফেলা হয়েছে তাদের বিজয় উৎসবের সব ছবি। আর প্রতিটি নিহত পরিবারের জন্য পাঁচ লাখ করে টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।